বিশেষ প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম**
ভুটানের সফররত প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের সম্মানে রাজধানীর একটি হোটেলে নৈশভোজের আয়োজন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। দুই দেশের দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ও নতুন সহযোগিতা সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে নৈশভোজ স্মরণীয় হয়ে ওঠে।
শনিবার সকালে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে প্রধানমন্ত্রী তোবগে ঢাকায় পৌঁছান। রাতে আয়োজিত নৈশভোজে প্রধান উপদেষ্টা অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন। অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে নৈশভোজের সমাপ্তি হয়।
‘ভুটান বাংলাদেশের চিরন্তন বন্ধু’ — প্রধান উপদেষ্টা
নৈশভোজে বক্তব্যে অধ্যাপক ইউনূস বলেন,
“বাংলাদেশ ও ভুটানের সম্পর্ক দীর্ঘমেয়াদী সংহতি, সাংস্কৃতিক সাদৃশ্য ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপর প্রতিষ্ঠিত। স্বাধীনতার পর প্রথম স্বীকৃতি দেওয়া দেশ ভুটান— এ সিদ্ধান্ত দুই দেশের বন্ধুত্বের চিরন্তন প্রমাণ।”
তিনি প্রধানমন্ত্রী তোবগেকে ‘নিবেদিতপ্রাণ নেতা’ ও ‘বিশ্বদৃষ্টিসম্পন্ন বন্ধু’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
ড. ইউনূস আরও বলেন—
- বাংলাদেশ এখন গণতান্ত্রিক রূপান্তরের ঐতিহাসিক মুহূর্তে রয়েছে
- প্রতিষ্ঠান পুনর্জাগরণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সরকারের প্রধান লক্ষ্য
- আঞ্চলিক সহযোগিতায় ভুটান গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার
তিনি বলেন, “ভুটানের উন্নয়ন দর্শন মানবকল্যাণের সঙ্গে অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে যুক্ত করেছে। বাংলাদেশও শূন্য নিট কার্বন নির্গমন, দারিদ্র্য হ্রাস ও সামাজিক ব্যবসা দিয়ে একই পথে এগোচ্ছে।”
জলবায়ু ও উন্নয়ন সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি
ড. ইউনূস জলবায়ু ন্যায়বিচারে ভুটানের বৈশ্বিক নেতৃত্বকে প্রশংসা করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশ–ভুটান–নেপাল জোট রূপান্তরমুখী অর্থনীতির জন্য আরও শক্ত ভূমিকা রাখবে।
‘বাংলাদেশের আতিথেয়তা হৃদয় ছুঁয়ে গেছে’ — ভুটানের প্রধানমন্ত্রী
বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে বলেন—
“বাংলাদেশে ফিরে আসা মানেই বন্ধুত্ব ও উষ্ণতার অনুভূতি। বাংলাদেশের সৌজন্যতা আমাদের গভীরভাবে স্পর্শ করেছে।”
তিনি ড. ইউনূসের নোবেলজয়ী কর্মজীবন ও উন্নয়ন–দর্শনের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং বলেন, তার ‘তিন শূন্য মডেল’ (শূন্য কার্বন, শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব) উদ্ভাবনী শিক্ষার উৎস।
তোবগে উল্লেখ করেন—
- মানবসম্পদ উন্নয়ন, বাণিজ্য, কানেক্টিভিটি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে দুই দেশের সহযোগিতা দ্রুত বাড়ছে
- আজ স্বাক্ষরিত এমওইউ দুই দেশের অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করবে
- ভবিষ্যতে বাংলাদেশ–ভুটান সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে
‘বন্ধুত্বের নতুন অধ্যায় শুরু হচ্ছে’
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বলেন,
“আমরা ভবিষ্যতের দিকে আশাবাদ নিয়ে এগোচ্ছি। দুই দেশ একসঙ্গে উন্নয়ন, উদ্ভাবন ও সহযোগিতার নতুন অধ্যায় শুরু করতে প্রস্তুত।”

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: