অধিকারপত্র ডটকম রিপোর্ট
মুহাম্মদ ছাইফুল্লাহ | ধর্মীয় বিশ্লেষণ
প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২৫
সম্প্রতি বাউল শিল্পী আবুল সরকারের মহান আল্লাহ এবং ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে ধৃষ্টতামূলক ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য তৌহিদী জনতার অন্তরে তীব্র আঘাত হেনেছে। আল্লাহর শানে এমন আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার এবং কোরআনের বাণীর ভুল ও উলটাপালটা ব্যাখ্যা দেওয়ায় তার শাস্তি দাবি করেছেন অনেকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসলামি আদর্শের সঙ্গে বাউলদের জীবনধারা এবং গানের দর্শনের অধিকাংশই সাংঘর্ষিক। এই ধরনের মন্তব্য বাংলাদেশের মতো প্রায় শতভাগ মুসলমানের দেশে ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত হেনেছে।
বাউল দর্শনের সাথে শরিয়তের সংঘাত
বিশ্লেষণ অনুযায়ী, বাউলরা আধ্যাত্মিকতার নামে যেসব দেহ তত্ত্ব বা মারেফত তত্ত্বের চর্চা করেন, তা মূল শরিয়তের আদর্শ থেকে বহু দূরে। অনেক বাউল শিল্পী শরিয়তকে শত্রু মনে করেন।
* সংঘাতপূর্ণ গান: বাউল শিল্পী রশিদ বয়াতির মতো অনেকের গানে এমন কুফরি কথা থাকে, যা স্পষ্টতই ইসলামের মূলনীতির পরিপন্থী। যেমন, "কালেমা কুরানও ভাইও আমার কোনো কিছু দরকার নাইও, আমার গাউছে পাকের নাম আমার লাশের মধ্যে কপালের মধ্যে কাপনের মধ্যে লিখে দিও"—এ ধরনের বক্তব্য ঈমান পরিপন্থী।
* লাইফস্টাইল: তাদের লাইফস্টাইল (চুল বড় রাখা, জটা বাঁধা, লাল শালু পরা এবং মাজারে উরসের নামে আসর বসানো) ইসলামি আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
অন্যদিকে, কিছু বাউল রচিত গান আছে, যা মানবিক বা আধ্যাত্মিক চেতনার দিক থেকে সুন্দর এবং শরিয়তের সাথে সংঘর্ষ নেই। যেমন, ‘ছেড়ে দে নৌকা আমি যাব মদিনা’ বা ‘বাড়িওয়ালা নাইরে বাড়ি, নাইরে দুনিয়াতে’—এগুলো জননন্দিত হলেও, আবুল সরকারের মতো শিল্পীদের বক্তব্য মূল আদর্শ থেকে বিচ্যুতি ঘটিয়েছে।
শাস্তি ও বিচারের দাবি
বাউল আবুল সরকার তার বক্তব্যে আল্লাহর সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে যে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন, তার বিচার করা সরকারের একান্ত দায়িত্ব।
এই ইস্যুতে তৌহিদী জনতার আন্দোলনের মুখে একশ্রেণির বুদ্ধিজীবী (যেমন ফরহাদ মজহার) আবুল সরকারের পক্ষ নিয়েছেন, কিন্তু আল্লাহর প্রতি অবমাননার বিষয়ে তারা নীরব থেকেছেন, যা সমালোচিত হচ্ছে।
লেখকের মতে, এই দেশে বাউলদের এসব কর্মকাণ্ডের বিচার সম্ভব হচ্ছে না, কারণ সরকারের অনেকের কাছে এই ধরনের ঢোল-তবলা মাখা গান মধুর মতো লাগে। তবুও, তৌহিদী জনতাকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে গিয়ে সরকারকে এ অবমাননার বিচার করতে বাধ্য করাই এখন ইমানের দাবি।
সমাজ থেকে নির্মূল করার আহ্বান
শুধুমাত্র আবুল সরকারের বিচার নয়, পাশাপাশি বিপথগামী বাউল, ভন্ডপীর, মাজার পূজারী, ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ, সন্ন্যাসবাদ, সন্ত্রাসবাদ ইত্যাদি সমাজ ও ইসলামবিরোধী কাজগুলো নির্মূল করার জন্য সরকারকে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে। যারা এসব কাজকে সমর্থন করে, তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসা জরুরি। যারা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন, তাদের সঙ্গে পূর্ণ সমর্থন ও অংশগ্রহণ করা ইসলামের সৌন্দর্য মানুষের মাঝে ফুটিয়ে তোলার জন্য আবশ্যক।
যুগান্তর

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: