নিজস্ব প্রতিবেদক, অধিকারপত্র ডটকম:
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বিস্ফোরক মন্তব্যে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা স্মরণ রাখার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি পরিষ্কারভাবে বলেন, জামায়াতকে দেশের মানুষ ১৯৭১ সালেই দেখেছে।
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিজয়ের মাস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত 'দেশ গড়ার পরিকল্পনা' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াতের ১৯৭১-এর ভূমিকা
কোনো নাম উল্লেখ না করে সম্প্রতি একটি মহল জামায়াতকে ক্ষমতায় 'দেখার' যে আহ্বান জানাচ্ছে, তার সমালোচনা করে তারেক রহমান বলেন, "যাদের কথা বলে—অমুককে দেখুন, তাদের তো দেশের মানুষ ১৯৭১ সালেই দেখেছে। একাত্তরে তারা তাদের নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে কীভাবে লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে।"
তিনি আরও বলেন, "তারা লাখ লাখ মানুষকে শুধু হত্যাই করেনি, তাদের সহকর্মীরা কীভাবে মা-বোনদের ইজ্জত পর্যন্ত লুট করেছিল, এই কথাটি আমাদের মনে রাখতে হবে।"
'বেহেশতের টিকিট বিক্রি' শিরক
সম্প্রতি ধর্মভিত্তিক কোনো কোনো দলের নেতাদের বক্তব্যকে ইঙ্গিত করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এক কঠোর ধর্মীয় বার্তা দেন। তিনি বলেন, "একটি রাজনৈতিক দলের কিছু ব্যক্তি বা বেশ কিছু ব্যক্তি বিভিন্ন জিনিসের টিকিট বিক্রি করে বেড়াচ্ছেন। বিভিন্ন জিনিসের কনফারমেশন (নিশ্চয়তা) দিয়ে বেড়াচ্ছেন।"
তারেক রহমান এটিকে 'শিরক' হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, "দোজখ, বেহেশত, দুনিয়া—সবকিছুর মালিক আল্লাহ। যেটার মালিক আল্লাহ, সেটার কথা একমাত্র আল্লাহ তাআলাই বলতে পারেন, সেখানে যদি আমি কিছু বলতে চাই... সেটি হচ্ছে শিরক। সেটি শিরকের পর্যায়ে পড়ে।" তিনি ছাত্রদলের নেতাদের নির্দেশ দেন, ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষকে বোঝাতে হবে যারা এসব কথা বলে, তারা শিরক করছে এবং যারা শুনবেন, তারাও শিরকের পর্যায়ে পড়ে যাবেন।
বিএনপি সরকারের দুর্নীতি প্রসঙ্গ
২০০১-২০০৬ সালের জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় জামায়াতের দুই শীর্ষ নেতার (মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ) উপস্থিতির বিষয়টি উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, "সেই দুজন ব্যক্তির বিএনপি সরকারে শেষ দিন পর্যন্ত থাকা দুটো জিনিস প্রমাণ করে যৌক্তিকভাবে। এক. তাঁদের অবশ্যই খালেদা জিয়ার প্রতি পূর্ণ কনফিডেন্স ছিল; দুই. খালেদা জিয়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন—সে জন্যই তাঁরা শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন।"
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি—এই দুটি প্রধান সংকট মোকাবিলা করবে এবং দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরবে।
ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান
সামনে কঠিন সময় অপেক্ষা করছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিভিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে গণতন্ত্র। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জনগণের মতামতের প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই অনেক ষড়যন্ত্রকে রুখে দেওয়া সম্ভব হবে।
এর আগে সকালে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিএনপির
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, একটা গোষ্ঠী ধর্মের নামে দেশে বিভাজনের পথ সৃষ্টি করতে চায়, কিন্তু বিএনপি ধর্ম দিয়ে বিভাজনে বিশ্বাস করে না।
অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের সারা দেশের জেলা পর্যায়ের হাজারের বেশি নেতা অংশ নেন।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: