ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

অদক্ষতা মাদকাসক্ত,ড্রাইভার, হেলপার ট্রাফিক সিস্টেম, মহাসড়কে ড্রাইভারদের জন্য ঘণ্টা প্রতি গতি-সীমা বেধে দিয়েছেন, ঢাকার চলেছে নৈরাজ্য দুর্ঘটনা মুল কারন

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ৮ এপ্রিল ২০১৮ ২২:৩৯

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৮ এপ্রিল ২০১৮ ২২:৩৯

বাংলাদেশের রাস্তায় বাস চালকরা এত বেপরোয়া কেন?

বাস চালকদের প্রবণতা থাকে কত দ্রুত কত বেশি ট্রিপ দেয়া যায়।
         বাস চালকদের মূল লক্ষ্য থাকে দ্রুত বাস চালিয়ে টাকা রোজগার। সে তখন রুক্ষ ও আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকার নিউমার্কেট সংলগ্ন চন্দ্রিমা মার্কেটের সামনের রাস্তা দিয়ে রিকশায় করে মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছিলেন আয়েশা খাতুন। ঠিক সেসময় আজিমপুরের দিক থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরির দিকে যাচ্ছিল দুইটি বাস। তাদের মধ্যে কে কার আগে যাবে সেই প্রতিযোগিতার মাঝখানে পড়ে রিকশা থেকে ছিটকে পড়েন আয়েশা খাতুন এবং গুরুতর আহত হন। চম্পট দেয় দুই বাসের চালকই।

নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আতিকুর রহমান  বলেছেন, "দুই বাসের মাঝে চাপ খায় রিকশাটা। আমরা সাথে সাথে বেসরকারি একটি হাসপাতালে নিয়ে যাই। বাস দুইটা পালিয়ে যায়। পরে একটি বাস ড্রাইভার সহ আটক করা হয়। অন্যটির চালককে ধরা যায়নি। তথ্য-প্রমাণ আছে তারা পাল্লা-পাল্লি দিয়ে যাচ্ছিল। "

ওসি মোঃ আতিকুর রহমান জানান, এ ঘটনায় শিশুটি অক্ষত থাকলেও তার মায়ের মেরুদণ্ড মারাত্মকভাবে জখম হয় এবং অপারেশন করতে হয়েছে।

পুলিশের কর্মকর্তা আরো জানান, দুটি বাসই ছিল বিকাশ পরিবহনের।

এই ঘটনাটি ঘটলো এমন সময় যখন ঢাকার কারওয়ান বাজার এলাকার রাস্তায় দুই বাসের প্রতিযোগিতায় এক তরুণের হাত কাটার পর ঘটনার এক সপ্তাহও পেরোয়নি। ওই ঘটনায় বাসের যাত্রী তিতুমির কলেজের শিক্ষার্থী রাজিব হোসেন তার একটি হাত হারিয়েছেন দুই বাসের প্রতিযোগিতার মাঝে পড়ে।

কাছাকাছি সময়ের মধ্যে ঢাকার বাইরের এধরনের আরেকটি ঘটনা হতবাক করেছে অনেক মানুষকে। ময়মনসিংহ জেলার একটি স্থানে অটোরিকশা থেকে ছিটকে পড়ার পর মধ্যবয়স্ক এক নারীকে পিষ্ট করে দেয় বাসের চাকা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেভাবেই গাড়ি চালিয়ে অনেকদূর চলে যায় বাসটির চালক। চাকার তলায় পিষ্ট মায়ের মৃতদেহ বের করার অসহায় চেষ্টা-রত তার সন্তানের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

 

বাস চালক ও তাদের সহকারীরা যথেষ্ট প্রশিক্ষিত নয়।
                   বাস চালক ও তাদের সহকারীরা যথেষ্ট প্রশিক্ষিত নয়।

বাংলাদেশে বাস চালকদের বেপরোয়া গতির কারণে প্রাণহানি কিংবা আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেই চলেছে। কিন্তু চালকদের এই বেপরোয়া মনোভাব কেন? আন্ত-জেলা বাস চালকদের সমিতির একজন নেতা জাকির হোসেন বিপ্লব বলেন, মহাসড়কে ড্রাইভারদের জন্য ঘণ্টা প্রতি গতি-সীমা বেধে দিয়েছেন। কিন্তু ঢাকার রাস্তার ক্ষেত্রে চলেছে নৈরাজ্য।" লোকাল বাসগুলো প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালায়। সেজন্য অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। চালকদের চাকরির নিশ্চয়তা নাই। তার ওপর মালিকদের দ্বারা তারা চাপে থাকে। কারণ মালিকদের ক্যাশ (নগদ টাকা) কম হলে অনেক ড্রাইভারের চাকরি চলে যায়।"বাস মালিকদের পক্ষ থেকে অবশ্য দোষারোপ করা হচ্ছে বাসের চালক ও শ্রমিকদেরকেই। বাস কোম্পানিগুলোর এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট খন্দকার রফিকুল হোসেন কাজল  বলেন, মালিকদের পক্ষ থেকে এখন আর চাপ নেই। পাল্লাপাল্লি করার তো আর দরকার নেই তাদের।

তিনি বলেন, বাস চালকদের একটি বড় অংশ মাদকাসক্ত। তার ভাষায়, "চারশো/পাঁচশো টাকা হাতে পেলেই বাসের ড্রাইভার, হেলপার যায় ইয়াবা খেতে। ফলে এ ধরনের দুর্ঘটনা তো হবেই।"

এছাড়া ঢাকার ট্রাফিক সিস্টেমকেও দায়ী করেন তিনি। রুট পারমিট নিয়ে সমস্যাকেও তারা মনে করেন বিভিন্ন কোম্পানির মধ্যে পাল্লাপাল্লির কারণ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: