odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Monday, 3rd November 2025, ৩rd November ২০২৫
রোহিঙ্গা শিবিরে শিশুদের দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থার কথা উল্লেখ করে প্রিয়াঙ্কা তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য ইউনিসেফের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের কাছ থেকে বিশ্বের শিক্ষা নেয়া উচিত : প্রিয়াঙ্কা

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২৯ May ২০১৮ ০৩:০৪

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২৯ May ২০১৮ ০৩:০৪

 

 
  

 ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত ও বলিউড তারকা প্রিয়াঙ্কা চোপড়া বলেছেন, কিভাবে দুস্থ মানবতার পাশে দাঁড়াতে হয় সে ব্যাপারে বাংলাদেশের কাছ থেকে বিশ্বের শিক্ষা নেয়া উচিত।
প্রায় ১০ লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় প্রদানে বাংলাদেশের বিশেষ করে  হাসিনার প্রশংসাকালে তিনি এ কথা বলেন। বলিউড তারকা প্রিয়াঙ্কা ২৪ মে, গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব নজরুল ইসলাম বলেন, এ বলিউড তারকা গত ৩ দিন উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন এবং সেখানে শিশুদের যে ভোগান্তি দেখেছেন সে সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিনিময় করেন।
প্রিয়াঙ্কা গত বছর রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘রোহিঙ্গা শিশুদের মধ্যে এখন আমি এক ধরনের স্বস্তি দেখেছি।’
প্রিয়াঙ্কা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘এর আগে আমি যখন রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করি, তখন শিশুদেরকে একটি ছবি আঁকতে বলি। তখন তারা আকাশে চক্কর দেয়া হেলিকপ্টার থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ছবি আঁকে।’
‘এবার তাদেরকে আমি একই কাজ করতে বললে তারা সূর্য, প্রাণী ও প্রকৃতির ছবি আঁকে। এতে প্রমাণিত হয়, তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে এবং এটি সম্ভব হয়েছে আপনার মাতৃত্বসুলভ আশ্রয় ও নিরাপত্তার কারণে।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বোন শেখ রেহানা এবং পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
রোহিঙ্গা শিবিরে শিশুদের দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থার কথা উল্লেখ করে প্রিয়াঙ্কা তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য ইউনিসেফের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা শিশুদের প্রতি বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণে প্রিয়াঙ্কা চার দিনের সফরে সোমবার বাংলাদেশে আসেন।
প্রিয়াঙ্কা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, জাতিগতভাবে বিপুলসংখ্যক শিশু কোন শিক্ষা পাচ্ছে না। ফলে একটি প্রজন্ম হারিয়ে যেতে পারে বলে তিনি আশংকা করছেন। তিনি বলেন, যথাযথ শিক্ষার ব্যবস্থা না হলে এই শিশুরা চরমপন্থার দিকে ঝুঁকতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একান্ত মানবিক কারণে তাঁর সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। কারণ বাংলাদেশের জনগণও ১৯৭১ সালে একই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিল।
তিনি ১৯৭৫ সালে তাঁর পিতা-মাতার হত্যাকা-ের পর প্রবাসে উদ্বাস্তু জীবনের কথা উল্লেখ করে বলেন, সেসব ঘটনা দুঃসময় দুস্থ মানবতার পাশে দাঁড়াতে তাঁকে শিক্ষা দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার রোহিঙ্গাদের সকল প্রকার সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করছে। তবে সরকারের একার পক্ষে তাদের ভোগান্তি প্রশমন সম্ভব নয়। ইউনিসেফ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে আরো সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসা উচিত।
প্রধানমন্ত্রী ভাসানচরে নিরাপদ এলাকায় রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেয়ার সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, তারা সেখানে ভাল পরিবেশে বসবাস করতে পারবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসহ সেখানে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। কর্মসংস্থানের সুযোগসহ সেখানে স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার সুবিধাও থাকবে।
রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারের স্বাস্থ্য সেবা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার আশ্রয় শিবিরগুলোতে টিকা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা সেবা দিতে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের তাদের স্বদেশ ভূমিতে প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ চুক্তি অনুযায়ী কাজ করছে না।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: