ঢাকা | রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২
জনবিচ্ছিন্ন এ নেতাদের দেশ ধংসের পরিকল্পনা জনগণের বিরুদ্ধেই

সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রের আড়ালে জাতীয় ঐক্য

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৪২

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৪২

'বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যে' ও সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্র !

সুমন ভৌমিক

সদস্য, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা কেন্দ্রীয় উপকমিটি,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

শুরুতেই ঐক্যের ভাঙন দেখা যায়, রাগ ক্ষোভ আর অবিশ্বাসের মধ্যে চলছে 'বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের' কাজ। বিএনপি জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী একটি অংশ বি চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃতে ঐক্যে প্রক্রিয়ার সাথে কোন মতেই এক হতে পারছেনা। তাদের বিশ্বাস বিএনপি এমন জায়গায় যায়নি যে দেশের বৃহত্তম একটি দল হয়েও যাদের কোন জন সমর্থন নেই তাদের পেছনে বিএনপি রাজনীতি করতে হবে।

'বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের' নেতৃত্ব সম্পর্কে দেশের সাধারন জনগণের প্রশ্ন বি চৌধুরীকে কেন সেদিন বিএনপি রাষ্ট্রপতি থেকে অব্যহতি দিয়েছিল? সেটা কি বিএনপির ভুল ছিল নাকি বি চৌধুরী সঠিক ছিল? বিএনপি যদি ঠিক করে থাকে তবে আজ কেন বি চৌধুরীর পেছনে ছুটছে? তার মধ্যে আবার চলছে নেতৃত্ব নিয়ে সঙ্কট বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের খেলা। 'বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের' লিয়াজো কমিটি গঠন করা হবে। মঙ্গলবার রাতে বারিধারায় ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর (বি চৌধুরী) বাসভবনে যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সেখানে উপস্থিত ছিলেন না জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন।

সূত্র জানায়, ড. কামাল পেশাজীবীদের ঐক্য প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। বি চৌধুরী এ বিষয়ে অবহিত ছিলেন না। এ কারণে তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তার ক্ষোভ প্রশমনে বৈঠকের স্থান পরিবর্তন করা হয়। বি চৌধুরীকে পেশাজীবীদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে রাজি করান গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহসহ জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা। বৈঠকের পর বি চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ড. কামাল অসুস্থ। তার সুস্থতা কামনা করেন তিনি।

বিএনপির আগামী শনিবারের সমাবেশে যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় নেতারা যোগ দেবেন; এমন সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে। সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় বি চৌধুরী, ড. কামালসহ জাতীয় ঐক্যের শীর্ষ নেতাদের সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হবে। দাওয়াত করা হবে ২০ দলীয় জোটের শরিকদেরও। বিতর্ক এড়াতে ডাকা হবে না মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতার বিরোধিতা করা জামায়াত ইসলামীকে। তবে বি চৌধুরী বলেছেন, তিনি এখনো সমাবেশের দাওয়াত পাননি। এখানে প্রশ্ন হল ২০ দলীয় জোট কি জামাতকে বাদ দিয়ে নাকি নিয়ে? জামাতকে বাদ দিলে ২০ দলীয় জোট কি করে হয়?

দেড় দশক আগে বিএনপি ছেড়ে বিকল্পধারা গঠন করা সাবেক রাষ্ট্রপতি বি চৌধুরী জানান, তারা বিএনপির অনেক কাছাকাছি এসেছেন। আশা করছেন ভবিষ্যতে আরো কাছাকাছি আসতে পারবেন। তিনি আশাবাদী ঐক্য হবে ভারসাম্যের ভিত্তিতে।

বিকল্পধারা শর্ত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ স্বাধীনতা বিরোধীরা জাতীয় ঐক্যে থাকতে পারবে না। জাতীয় ঐক্যে স্থান পেতে বিএনপিকে তার জোট ২০ দল থেকে জামায়াতকে বাদ দিতে হবে। অন্য দলগুলো অবশ্য বিএনপি-জামায়াতের জোট প্রশ্নে নমনীয়। মঙ্গলবারের বৈঠকেও বিকল্পধারা সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের নামে চিঠিতে বিএনপিকে জামায়াত ছাড়ার শর্ত দেয়। বি চৌধুরী বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধ ও মানচিত্রকে এখনও অস্বীকার করে, তাদের বাদ দিয়ে বাংলাদেশের সবার সঙ্গে ঐক্য কামনা করি।

জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন কেন আওয়ামী লীগ ছেড়ে গণ ফোরাম করেছিলেন? সাবেক রাষ্ট্রপতি বি চৌধুরী কেন বিএনপি ছেড়ে বিকল্পধারা করেছিলেন ? মাহমুদুর রহমান মান্না কেন জাসদ ছেড়ে আওয়ামী লীগ, আবার আওয়ামী লীগ ছেড়ে নাগরিক ঐক্যে? এর প্রশ্নের উত্তর কে দিবে ?

এখানে আরো কিছু সুবিধাভোগী লোক আছে যারা সব সময় নিজের নেতৃত্ব ও ক্ষমতার জন্য দল বদল করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তাদের দিয়ে দেশ ও জাতির কি উন্নায়ন হবে সেটাই জাতির বড় প্রশ্ন? এখানে দুর্নীতি বাজদের একটা ঐক্যে ও সরকার বিরুধী ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই সব কিছু বিবেচনা করে আওয়ামী লীগ ও সাধারন জনগণকে এই ষড়যন্ত্রের ঐক্যকে মোকাবেলা করতে হবে।

 

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: