ঢাকা | বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২
পদ্মা সেতু আমার চেলেঞ্জের সেতু, যেটার জন্য বঙ্গবন্ধু পরিবার কে কথা শুনতে হয়েছে, সেটার নাম আমার নামে হবেনা,

পদ্মা সেতুর নাম ফলক উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ১৪ অক্টোবর ২০১৮ ১৫:৫১

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ১৪ অক্টোবর ২০১৮ ১৫:৫১

অধিকারপত্র ডেক্স: সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে শেখ হাসিনা এই সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে সৃষ্টি হওয়া জটিলতার প্রসঙ্গটি আবারও তোলেন। তিনি বলেন, শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ম অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ব ব্যাংকসহ পশ্চিমা বিশ্বের কিছু নেতা পদ্ম সেতু নির্মাণে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নের কথা থাকলেও সংস্থাটি দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুললে তা নিয়ে সরকারের সঙ্গে টানাপড়েনের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে সরকার বিশ্ব ব্যাংককে বাদ দিয়েই কাজটি শুরু করে।

পদ্মায় বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু নির্মাণে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন আটকাতে মুহাম্মদ ইউনূসের ‘ষড়যন্ত্র’ ছিল বলে প্রধানমন্ত্রী আগেও বলেছেন। মাওয়ার সমাবেশে তিনি আবারো সেই প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আমি সমর্থন দিয়েছি।

গ্রামীণ ফোনের লভ্যাংশ গ্রামীণ ব্যাংক পাওয়ার কথা ছিল। সেখান থেকে দরিদ্র মানুষের জন্য সেই টাকা ব্যয় করার কথা ছিল। কিন্তু ফোনের কোনো লভ্যাংশ গ্রামীণ ব্যাংক পায়নি। “আইন অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংকের এমডির বয়সসীমা ৬০ বছর হলেও ড. ইউনূসের বয়স ৭০ বছর হয়ে গিয়েছিল।

সরকারের পক্ষ থেকে তাকে প্রস্তাব দেওয়া হলো এমডি পদ ছেড়ে দিয়ে উপদেষ্টা হিসেবে তিনি যেন গ্রামীণ ব্যাংকে থাকেন। কিন্তু তিনি সেটা না মেনে সরকার ও বাংলাদেশে ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করে দিলেন।” ড. ইউনূস প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, “কোনো অনুমোদন ছাড়াই এমডি ছিলেন এবং সরকারি বেতনও নিতেন। এটা সম্পূর্ণ ইলিগাল। তাকে আমরা কখনও অসম্মান করতে চাইনি।

অর্থমন্ত্রী ও গওহর রিজভী ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে তাকে এমিরেটাস অ্যাডভাইজার করার প্রস্তাব দেন। তিনি রাজি না হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করলেন দুইটা। একটা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে আরেকটা সরকারের বিরুদ্ধে। কোর্ট চাইলে সেই বেতন ফেরত নিতে পারত।” এমডি পদ হারিয়ে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস পদ্মা সেতুর অর্থায়ন আটকানোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন তাও আবার বলেন প্রধানমন্ত্রী। “হিলারি ক্লিন্টন তাকে এমডি রাখতে ফোন করেন। টনি ব্লেয়ার ছিল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ।

তার স্ত্রী শেলি ব্লেয়ার ফোন করলেন। মামলায় তিনি হেরে গেলেন। পশ্চিমা দেশের অনেক রাষ্ট্রদূত এসে আমাকে হুমকি দিত। ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যংক থেকে সরানো হলে পদ্মা সেতু হবে না, ইত্যাদি ইত্যাদি।” পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির যে অভিযোগ বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষ থেকে তোলা হয়েছিল সে প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ওয়ার্ল্ড ব্যাংক পদ্মাসেতুর টাকা বন্ধ করে দিয়েছিল, যার পেছনে ছিলেন ড. ইউনূস।“

তারা দুর্নীতির অভিযোগ তুলল, আমি বললাম আমি প্রমাণ চাই। তারা কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। আমার বিরুদ্ধে, আমার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বার বার তারা তদন্ত করল। কিন্তু কোনো প্রমাণ পেল না। স্টেট ব্যাংক আমার ছেলে জয়কে তিনবার ডেকে নিয়ে শাসিয়েছে। এটা নিয়ে মামলা হয়েছে। আমরা প্রমাণ করেছি। সমস্ত অভিযোগ ভুয়া, মিথ্যা। কোনো দুর্নীতির চিহ্ন পাওয়া যায়নি।”

তিনি বলেন, “জনগণের ওপর আমার ভরসা ছিল। সেই ভরসা নিয়েই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করেছি। অনেক বাধা বিপত্তি মোকাবেলা করতে হয়েছে।নিজস্ব অর্থায়নে করছি। কিন্তু এর পেছনে যে অপমান যে নির্যাতন আমাদেরকে ভোগ করতে হয়েছে, এর পেছনে দেশের কিছু লোক জড়িত। যারা গরীবকে টাকা দিয়ে সুদ খায় তারা এর চেয়ে বেশি কী করতে পারে?” প্রধানমন্ত্রী সকালে হেলিকপ্টারে করে মাওয়ার দোগাছির পদ্মা সেতুর সার্ভিস এরিয়ার-১ এর মাঠে অবতরণ করেন।

ওবায়দুল কাদের তার বক্তব্যে বলেন, শেখ হাসিনা বুঝিয়ে দিলেন বাঙ্গালী বীরের জাতি, যেখানে বিশ্ব আমাদের চোরের জাতি হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল।
বঙ্গবন্ধু কন্যা তার সাহসিকতা দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, পদ্মা সেতু শেখ হাসিনার একক ফসল , একক সাহসিকতার ফসল পদ্মা সেতু।
ওবায়দুল কাদের বক্তব্যে আরো বলেন, শেখ হাসিনা এখন আর পলিটিশিয়ান নন, তিনি পলিটিশিয়ানের সীমানা পার করে রাষ্ট্র নায়ক। তিনি এখন সেই পারসন।
মাদার বাড়ী কেন্দ্র করে, পায়রা বন্দরকে কেন্দ্র করে উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে উত্তীর্ন হয়েছে। সর্বশেষে মন্ত্রী বলেন আমি বড় দুঃখ ভড়া ক্রান্তে উপস্থিত হয়েছি,যেখানে ওয়েব সাইট জরিপে পদ্মার এপারের লোক ওপারের লোক সবাই এমনকি পার্লামেন্টারী বোর্ডের সর্বসম্মতি ক্রমে সামারী পাঠিয়েছি। সামারী সবই ঠিক আছে, পদ্মা সেতুর নামটি সব ঠিক আছে শুধু "শেখ হাসিনা" নামটি বাদ দিয়েছেন।

এরপর গাড়িতে যান সেতু এলাকায়। মাওয়া থেকে গিয়ে বিকালে মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটে জনসভায় ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে তার। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ৭ নম্বর খুঁটিতেই পাইল স্থাপনের কাজ শুরুর মধ্য দিয়ে মূল সেতুর কাজের উদ্বোধন করেছিলেন। পদ্মা সেতুর ৪২টি খুঁটিতে ৪১টি স্প্যান বসবে। এর মধ্যে ১৪টি খুঁটি বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। আর নদীতে ১৮০টি পাইল স্থাপন করা হয়েছে।

এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, আলহাজ্ব মোঃ মহিউদ্দিন সভাপতি মুন্সিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ, এ্যাভোকেট মিনাল কান্তি দাস, সংসদ সদস্য মুন্সিগঞ্জ-৩, সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি সংসদ সদস্য মুন্সিগঞ্জ-২, মেজর জেনারেল আজিজ সেনাপ্রধান, আলহাজ্ব শেখ লুৎফর রহমান ধারন সম্পাদক মুন্সিগঞ্জ আওয়ামীলীগ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: