ঢাকা | সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

‘প্রথম রাতে বেড়াল মারতে’ চান কাদের

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারী ২০১৯ ১৮:৪৮

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারী ২০১৯ ১৮:৪৮

 

স্টাফ রিপোর্টার

গত সাত বছর ধরে বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব চালিয়ে আসা ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নতুন মেয়াদে তিনি সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবেন।

আর এ কাজটি মেয়াদের শুরতেই করে ফেলতে চান জানিয়ে মন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রথম রাতে বেড়াল মারার মতই’ এ বিষয়গুলোতে নজর দিতে হবে।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়ে গত দশ বছরের পদ্মা সেতু ও মেট্রো রেলের মত বড় বড় অনেক অবকাঠামো প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে, কিন্তু তাতে যে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরেনি, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে গতবছর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সড়কের শৃঙ্খলার প্রসঙ্গ উঠলে কাদের বলেন, “পারিনি বলেই তো নতুন করে উদ্যেগ নিচ্ছি, পারিনি কিছুই- এমনতো নয়। সড়ক যোগাযোগে যে উন্নয়ন হয়েছে ইতিহাসে, এটা স্বীকার করতে হবে, এটা বৈপ্লবিক উন্নয়ন। যেটা আগে কখনো ঘটেনি।”

চলমান প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে চলছে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজে গতি এসেছে। বিআরটির কাজ চলমান। চন্দ্রা কোনাবাড়ি ভুলতা ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ শেষ দিকে। গাজীপুর থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত সড়ক চার লেইন করার কাজ জুনের মধ্যে শেষ হবে।

এছাড়া ঢাকা-সিলেট ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক চার লেইন করার প্রস্তুতি চলছে জানিয়ে কাদের বলেন, “এটি পিপিপিতে হতে পারে। আমার প্রধান অগ্রাধিকার সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। এ দুটি বিষয়ে প্রধান অগ্রাধিকার।

সড়ক এবং পরিবহনে বিশৃঙ্খলা থাকলে নতুন নতুন সড়ক বা সেতু করে যে কোনো লাভ হবে না, সে কথাও স্বীকার করেন ওবায়দুল কাদের।

‘আট লেইনের রাস্তা করলাম, সেখানে শৃঙ্খলা নেই, সুফল তো দিচ্ছে না। সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার বিষয়টা, শৃঙ্খলার বিষয়টা প্রথম দিকেই করতে হবে, পরে আবার পলিটিক্যাল বিষয় আসবে, চাপ আসবে। প্রথম রাতে বেড়াল মারার মতই এ বিষয়গুলো নজর দিতে হবে।’

গত দুই মেয়াদে না পারলেও এবার কীভাবে শৃঙ্খলা আনার কথা ভাবছেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী? তিনি বলছেন, এবার সাধারণ কিছু ‘কৌশলে’ তিনি কাজটি করে দেখতে চান।

‘খুব জেনারেল কিছু বিষয় আছে সবার জানা, ছোট ছোট যান হাইওয়েতে চলছে, এসব বিশৃঙ্খলা। … লাইসেন্সবিহীন গাড়ী চলছে, মোটর সাইকেল নতুন আতঙ্ক। একদিকে হেলমেটের ব্যবহারে ঢাকা শহরে অনেকটা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছি, ঢাকার বাইরে মোটরসাইকেল বেপরোয়া চলছে, লাইসেন্সবিহীন চলছে। কাজটা অত সহজ নয়, খুব তাড়াতাড়ি করা যাবে এমনও নয়। কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়।’

কাদেরের ভাষায়, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে গেলে অনেকের ‘স্বার্থ ক্ষুণ্ন’ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর যাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে, তাদের মধ্যে সাধাণের চেয়ে ‘অসাধারণ’ মানুষ বেশি।

তিনি বলেন, ২২টি সড়কে ছোট ছোট যানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে দেখা গেছে ৮০ শতাংশ করেছি। আরও বেশি বেশি করে কাজের পরিসর বাড়বো, ওভারনাইট তো হবে না। কিছু হচ্ছে না তাতো নয়, তাহলে পদ্মা সেতু হচ্ছে কীভাবে? মেট্রোরেল, এলিভেটেড? কর্নফুলী টালেন হচ্ছে কীভাবে? কাজেই হবে, হবে না কেন? আই এনজন দি চ্যালেঞ্জ।

ঢাকা শহরকে যানজটমুক্ত করতে নিজের পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, “ফুটপাত হাঁটার উপযোগী করার পাশাপাশি ছোট ছোট যানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ঢাকা শহরে সাবওয়ে পাতাল রেল হবে, এগুলোর কাজ শুরু হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। সব কিছু মিলিয়ে ভাবেতে হবে, রাতারাতি দৃশ্যপট পরিবর্তন হবে এমন আশা করে লাভ নেই। আমি হাল ছাড়ছি না, ডিসিপ্লিন ফিরিয়ে আনতেই হবে।”

জনস্বার্থে কিছু ‘কঠিন স্টেপ’ নেওয়ার ইচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর আছে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

এবার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের পিএস ঠিক করে দেওয়ার মধ্যে কোনো বার্তা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে কাদের বলেন, যে কারণেই করুক, কাজটা বেঠিক হয়নি। প্রধানমন্ত্রী খোঁজ খবর নিয়েই দিয়েছেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: