ঢাকা | শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

মনোনয়ন আমার কাছেই আসবে: আতিকুল

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারী ২০১৯ ২৩:২০

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারী ২০১৯ ২৩:২০

স্টাফ রিপোর্টার

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী ও ব্যবসায়ী নেতা আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত নির্বাচন স্থগিত করেন। কিন্তু কোনও দল তার প্রার্থী স্থগিত করেনি। সুতরাং আমার বিশ্বাস, আওয়ামী লীগ থেকে আমাকে যে মনোনয়ন দিয়েছে সেটি বলবৎ থাকবে। ইনশাআল্লাহ, আলহামদুল্লিাহ, মনোনয়ন আমার কাছেই আসবে।’
বুধবার (২৩ জানুয়ারি) ডিএনসিসির উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের আগে বিজিএমইএ ভবনে এসব কথা বলেন তিনি।
এদিন বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক এই সভাপতির পক্ষে তার চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন যুবরাজ মনোনয়ন ফরম কেনেন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। ২০১৮ সালে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তারপর কোর্টে একটি রিটের আবেদনের প্রেক্ষিতে যে আদেশ হয়েছে- সেখানে স্থগিত হয়েছে শুধু নির্বাচন। কিন্তু রিটের মাধ্যমে কেউ প্রার্থী স্থগিত করেনি। সুতরাং আমার বিশ্বাস, আওয়ামী লীগ থেকে আমাকে যে মনোনয়ন দিয়েছেন সেটিই বলবৎ থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মনোনয়নটা আমার কাছে আসবে না— সেরকম চিন্তাও আমি করছি না। মনোনয়ন আমার কাছেই আসবে। আওয়ামী লীগ আমাকেই মনোনয়ন দেবে। এর পরেও যদি না আসে, প্রধানমন্ত্রী যদি অন্য কাউকে মনোনয়ন দেন, সেটা তার এখতিয়ার। এখন পর্যন্ত আমি যেটা জানি, আমার কাছে খবর যেটা আছে, মনোনয়ন আমাকেই দেবেন। আমি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছি।’
আপনি নির্বাচিত হলে তো মাত্র এক বছরের মতো সময় পাবেন। এই সময়ের মধ্যে কোন কোন বিষয়টি প্রধান্য দেবেন, কতদূর কাজ করতে পাবেন— এমন প্রশ্নের জবাবে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘দেখুন আমাদের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক কাজ শুরু করে গেছেন। তিনি কিন্তু সমস্যা চিহ্নিত করে গেছেন। সমস্যা চিহ্নিত করা যদি থাকে সেখানে সমাধান কিন্তু করতেই হবে। এক বছরে যতটুকু সমাধান করা যায় ততটুকু করবো। আবার যদি নির্বাচন হয়, আমাকে যদি আবার দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয় তাহলে বাকিটুকু শুরু করবো। কিন্তু আমি আপনাদের এটুকু আশ্বস্ত করতে পারি— আমি যেদিন থেকে দায়িত্ব পাবো— জনগণ যদি আমাকে ভোট দেয়, যদি আমি নির্বাচিত হই— সেই দিন থেকে কাজ শুরু করবো।’

আতিকুল ইসলাম বলেন, “আমি সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতে চাই যানজট ও জলজট। যানজট থেকে নগরকে উদ্ধার করতেই হবে। তার ফর্মুলা আমরা জেনে গেছি। বাসরুট ফ্রাঞ্চাইসি তার প্রমাণ। ইতোমধ্যে আমরা প্রমাণ পেয়ে গেছি। আগে অনেকগুলো বাসে মানুষ চললো, এখন ‘ঢাকার চাকা’য় মানুষ সফলতা পাচ্ছে। টেস্ট কিন্তু হয়ে গেছে। এখন শুরু। ওখানে যদি আমরা করতে পারি তাহলে সব বাসে কেন পারবো না?”
খাল উদ্ধার বিষয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘জলজট এবং যানজট বিষয়ে আগে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেই দিয়েছেন, আগামী বর্ষার আগেই জলজটের সমাধান করতে হবে। এক-দুইজনের লাভের জন্য পুরো ঢাকা শহর ঢুবে থাকুক, প্রধানমন্ত্রী সেটা চান না। এবার ভোটের মাধ্যমেই জনগণ সেটা প্রমাণ করে দিয়েছেন। আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করতে পারি ঢাকা শহর একটি বাস যোগ্য শহর হবে, একটি ইকো-শহর হবে।’
সিটি করপোরেশনে যুক্ত হওয়া নতুন ওয়ার্ডগুলোর উন্নয়নের বিষয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় ২০০ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে ঢাকা শহর। আমার প্রথম কাজ হবে যত গলি আছে সেই গলিগুলোকে ঠিক করা। তারপর আমি আসবো মেইন রোডে। কারণ, মেইন রোডে চলে গাড়ির মালিক। আর গলিতে চলে সাধারণ মানুষ, মা-বোন ও শিক্ষার্থীরা। তাদের জন্য কিছু করতে হবে। আগে গলিগুলোকে ঠিক করতে হবে। ড্রেনগুলোকে কীভাবে করলে পানি বড় ড্রেনে নিয়ে যাওয়া যাবে, সেটি বিবেচনা নেবো; ড্রেনগুলোকে প্রাধান্য দেবো। আমি দেখেছি অলরেটি ‘মাস্টার প্লান’ করা হয়েছে।’

আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার চিন্তার মধ্যে আছে বস্তিগুলোতে যারা থাকেন— তারা বাড়িভাড়ার জন্য যে টাকা দেন সেটি অনেক ব্যয়বহুল— তাদের যদি ঢাকার বাইরে বা ঢাকার মধ্যে পুনর্বাসন করতে হয়, সে জন্য একটা প্লানিং করতে হবে। প্লানিংয়ের মাধ্যমে এটা করা সম্ভব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, কুড়িল বস্তির ৯০ একর জমিতে ৮০ হাজার মানুষ থাকেন। এটা কি আপনি উচ্ছেদ করবেন? উচ্ছেদ বলতে কিছু নেই। পুনর্বাসন করতে হবে।’
এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ‘আমাদের ছেলে-মেয়েদের একটা সুন্দর মাঠ চাই। আমরা তো বঞ্চিত হয়েছি, কিন্তু তাদের কেন বঞ্চিত করবো? বিভিন্ন এলাকায় ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা করা যেতে পারে। এগুলো সম্ভব, শুধু উদ্যোগের অভাব। আমরা যদি প্রতিটি কাউন্সিলরকে বলে দিই, তোমার এলাকায় প্রতি মাসের চারটি শুক্রবার এই প্রতিযোগিতা করতে হবে। হয়ে যাবে। পুরান ঢাকায় যদি সাকরাইন উৎসব হতে পারে, এখানে পারবে না কেন?’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: