ঢাকা | শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

রাজউক কর্মচারীর ১১ বছর জেল :বহুতল ভবনের নকশার ফাইল গায়েব

gazi anwar | প্রকাশিত: ৩ মার্চ ২০১৯ ২১:৫৭

gazi anwar
প্রকাশিত: ৩ মার্চ ২০১৯ ২১:৫৭

 

বহুতল ভবনের নকশা অনুমোদন সংক্রান্ত ৫৭ টি নথি গায়েব করার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মচারীকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে হাইকোর্ট।

শাস্তির পাশাপাশি রায় প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে রাজউকের উচ্চমান সহকারী (এস্টেট শাখা) মো. শফিউল্লাহকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।  

নিম্ন আদালতের রায়ে খালাস পাওয়া এ মামলায় দুদকের করা আপিল মঞ্জুর করে রবিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দেন।

ওই বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিনউদ্দিন মানিক জানান, দুদকের আপিল গ্রহণ করে হাইকোর্ট শফিউল্লাহকে দণ্ডবিধির ২০৪ ও ২১৭ ধারায় ২ বছর করে চার বছর এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় ৭ বছর দণ্ড দেয়। এছাড়াও অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় উচ্চ আদালত তাকে এই দণ্ড দিয়েছে। সকল ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বিধায় তাকে সাত বছর দণ্ড ভোগ করতে হবে।

মামলার নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাজউকের অথরাইজড অফিসার-১ ও ৩ এর দপ্তরের ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ৫৭টি বহুতল ভবনের নকশা রেকর্ডরুমে পাওয়া যায়নি। ইস্যু ক্লার্ক হিসেবে মো. শফিউল্লাহর দায়িত্ব ছিল এসব ভবনের নকশা রেকর্ডরুমে প্রেরণ এবং সংরক্ষণ করা। কিন্তু আসামি তা না করে এগুলো বিনষ্ট/গায়েব করেন। যার ফলে উক্ত নথি ব্যাতীত এসব বহুতল ভবনের নকশা যথাযথভাবে অনুমোদিত করা হয়েছে কিনা তা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। 

এ কারণে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন না করার অভিযোগে ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর মতিঝিল থানায় দুর্নীতির মামলা দায়ের করে দুদক।

এই মামলায় ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক মুন্সী রফিউল আলম আসামিকে বেকসুর খালাস দেন।

রায়ে বলা হয়, মামলায় উল্লেখিত নথিসূমহ বিনষ্ট বা হারানো বা গায়েব করার ক্ষেত্রে এই আসামি এককভাবে দায়ী নয়। এক্ষেত্রে রাজউক উক্ত নথিসমূহ হারানো বা বিনষ্ট বা গায়েবের বিষয়ে কোনো প্রশাসনিক বা বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাদের অধীনস্থ কর্মকর্তাদেরকে দিয়ে দায়সারা গোছের একটি জিডি করে স্বস্ব কর্মকর্তাদের চাকরিকালীন সময় পার করছে। যা কাম্য নয়।

এক্ষেত্রে রাজউক কর্তৃপক্ষকে তথ্যপ্রযুক্তির সন্নিবেশন ঘটিয়ে একটি ডিজিটাল নথি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার নির্দেশ দেয়া হয়। অন্যথায় ভবিষ্যতেও এরূপ ঘটতে পারে। অতএব রাষ্ট্রপক্ষের আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামিকে খালাস দেয়া হলো।

খালাসের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। আপিলের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ডিএজি একেএম আমিন উদ্দিন মানিক, দুদকের পক্ষে আসিফ হাসান ও আসামি পক্ষে একেএম ফখরুল ইসলাম শুনানি করেন। শুনানি শেষে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের খালাসের রায় বাতিল করে আসামিকে ১১ বছরের সাজা দেয়।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: