ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ২৭ চৈত্র ১৪৩১

কানাডায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের উদ্বোধন

Akbar | প্রকাশিত: ৪ এপ্রিল ২০১৯ ১২:৪৪

Akbar
প্রকাশিত: ৪ এপ্রিল ২০১৯ ১২:৪৪

ডেস্ক: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম গত মঙ্গলবার কানাডার টরন্টো শহরে বাংলাদেশের নতুন কনস্যুলেট জেনারেলের উদ্বোধন করেন এবং ৪৯তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেন। অনুষ্ঠানে অন্টারিওর লেফটেন্যান্ট গভর্নর এ্যালিজাবেথ ডাউডসওয়েল সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের প্রথমে টরন্টোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল নাঈম উদ্দিন আহমেদের স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেলের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

অন্টারিওর লেফটেন্যান্ট গভর্নর এ্যালিজাবেথ ডাউডসওয়েল অনুষ্ঠানে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে লেফটেন্যান্ট গভর্নর টরন্টোতে বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, কোন কনস্যুলেটের উদ্বোধন একবারই হয়ে থাকে, ফলে এমন মহতি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে তিনি আনন্দিতবোধ করছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের নতুন কনস্যুলেট অন্টারিওতে ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশী অভিবাসীদের সাথে কার্যকর সংযোগ সৃষ্টিতে অবদান রাখবে।

এ্যালিজাবেথ ডাউডসওয়েল বাংলাদেশের মধ্যম-আয়ের দেশ ও উন্নত দেশে রুপান্তরিত হবার প্রচেষ্টা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কার্যকর উদ্যোগ এবং নারী ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের সফলতার বিষয়ে আলোকপাত করেন। লেফটেন্যান্ট গভর্নর মিয়ানমার হতে আগত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দান ও মানবিক সাহায্য প্রদানের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, টরন্টোতে বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেল স্থাপনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের একটি প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন ঘটলো। বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল টরন্টো ও এর কন্সুলার অধিভুক্ত প্রদেশসমুহে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের কল্যাণ ও কন্স্যুলার সেবা প্রদানের পাশাপাশি বাংলাদেশী-কানাডীয় নাগরিক বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের সাথে বাংলাদেশের সংযোগ সৃষ্টি ও ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারে কাজ করে যাবে। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে এই কনস্যুলেট জেনারেল চালু হওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং নবসৃষ্ট কনস্যুলেটের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিকতা ও কঠোর পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ জানান।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশ ও কানাডার সম্পর্ক ঐতিহাসিক ও সময় পরিক্ষিত। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে কানাডার ভূতপূর্ব প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডোকে ‘স্বাধীনতা সম্মাননা’ প্রদান করতে পারায় সম্মানিত বোধ করেন। শাহরিয়ার আলম এমপি ‘মার্চ’ মাসকে ‘বাংলাদেশের ঐতিহ্যের মাস’ ঘোষণা করায় অন্টারিও প্রাদেশিক সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিজানুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। আনুষ্ঠানিক পর্বের শেষে অন্টারিওর লেফটেন্যান্ট গভর্নর এ্যালিজাবেথ ডাউডসওয়েল ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম আনুষ্ঠানিকভাবে দুই দেশের বন্ধুত্ব, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের উন্নয়নের উপর প্রামাণ্য চিত্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কেক কাটা হয়। অনুষ্ঠানে অন্টারিও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যবর্গ, কূটনীতিক, অন্টারিও প্রাদেশিক সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বুদ্ধিজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ব্যবসায়ী, ছাত্র ও বাংলাদেশ কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পূর্বে অন্টারিওর লেফটেন্যান্ট গভর্নর এ্যালিজাবেথ ডাউডসওয়েল পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, এমপির সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন। বৈঠকে তারা বাংলাদেশ ও কানাডার দীর্ঘ বন্ধুত্ব, রোহিঙ্গা সমস্যা, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন এবং দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন।

সাংবিধানিক রাজতন্ত্র অনুযায়ী রানী এ্লিজাবেথ ২ কানাডার রাষ্ট্র প্রধান এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নর প্রদেশে রানীর প্রতিনিধিত্ব করেন। সাংবিধানিক ভাবে লেফটেন্যান্ট গভর্নর প্রদেশের প্রধান এবং ‘প্রিমিয়ার’ প্রাদেশিক সরকার প্রধান হিসেবে কাজ করেন। অন্টারিও প্রদেশে রানী এ্লিজাবেথ ২- এর প্রতিনিধি ও প্রদেশের সর্বোচ্চ সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনে লেফটেন্যান্ট গভর্নর এ্যালিজাবেথ ডাউডসওয়েলের উপস্থিতি বাংলাদেশের জন্য একটি বিরল সম্মান।

দিনের প্রথম ভাগে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম শেপার্ড এভিনিউ ইস্টে অবস্থিত বাংলাদেশের নতুন কনস্যুলেট জেনারেল অফিসে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিজানুর রহমান, টরন্টোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল নাঈম উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ হাইকমিশন, অটোয়া ও নতুন কনস্যুলেট জেনারেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: