বিশ্বকাপে ১০ দলের ১৫০ জন খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ। তাদের মধ্যে সাকিব আল হাসানকে সবচেয়ে মূল্যবান খেলোয়াড় হিসেবে দাবি করেছে ১৮৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংবাদমাধ্যম।
এই বিশ্বকাপে ব্যাটে-বলে ধারাবাহিক সাকিব। প্রথম দুই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৫ ও ৬৪ রান করেছেন। ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যথাক্রমে ১২১ ও ১২৪*। বল হাতেও দারুণ ইকোনমি রেট তার, উইকেট পাঁচটি। বাংলাদেশের দুটি জয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা।
সব মিলিয়ে টেলিগ্রাফের সাংবাদিক টিম উইগমোরের বিশ্লেষণে এখন পর্যন্ত সাকিবই সেরা। তারা ঘোষণা করেছে, ‘শুধু একজনকে আপাতদৃষ্টিতে তার দেশের সেরা ব্যাটসম্যান ও সেরা বোলার হিসেবে দাবি করা যায়। তার নাম সাকিব আল হাসান, নিঃসন্দেহে ২০১৯ বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত তিনিই সেরা খেলোয়াড়।’
টেলিগ্রাফ আরও লিখেছে, ‘সাকিবকে তার প্রাপ্যটা না দেয়ার প্রবণতা আছে। এটা অদ্ভুত। ভক্তরা তার চমৎকার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ও আইপিএল পারফরম্যান্স উপভোগ করে। আইসিসি খেলোয়াড় র্যাংকিংয়ে ২০১৫ সালে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাটের সবক’টিতে শীর্ষস্থানে ছিলেন।
কিন্তু সাকিবকে নিয়ে এই অবমূল্যায়ন একটা অন্তর্নিহিত সত্য তুলে ধরেছে- তিনি এই খেলার কোনো ঐতিহ্যবাহী অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করেন না। তাই তার বহুবিধ এই প্রতিভাকে অনেকে সহজে উপেক্ষা করে। এর একটা অন্যতম উদাহরণ হল- ২০১১ সালের পর থেকে অস্ট্রেলিয়া শুধু একটি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশের সঙ্গে।’
২০০০ সালে দুটি ঘটনা বাংলাদেশের ক্রিকেট দলকে বর্তমান জায়গায় নিয়ে এসেছে। ওই বছর বাংলাদেশকে দেয়া হয় টেস্ট মর্যাদা এবং ১৩ বছর বয়সে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হন সাকিব। ছয় বছর পর আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় তার। স্বভাবজাত ব্যাটিং ও বিচক্ষণ বাঁ-হাতি স্পিনে দলের অপরিহার্য খেলোয়াড় হতে খুব বেশি সময় নেননি তিনি, লিখেছে টেলিগ্রাফ।
তারা যোগ করেছে, আত্মবিশ্বাস দিয়ে সাকিব ধারাবাহিকভাবে জ্বলে উঠলেও ২০১৪ সালে কোচের সঙ্গে দ্বিমত থাকায় বোর্ড ছয় মাস নিষিদ্ধ করে তাকে। এখন তিনি পরিণত। টেস্ট ও টি ২০ অধিনায়ক হিসেবে ফিরে এসেছেন দারুণভাবে। টেলিগ্রাফ তাদের পর্যবেক্ষণে আরও বলেছে, ‘নিজের দলের সবচেয়ে কঠিন দায়িত্ব নেন সাকিব। পাওয়ার প্লেতে নিয়মিত বল করেন শেষদিকেও। আর ওয়ানডেতে তিন নম্বরে ব্যাটিং শুরু করে ১৯ ম্যাচ খেলে গড় রান ৫৯.৬৮, এর মধ্যে রয়েছে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা সেঞ্চুরি।’
সবশেষে টেলিগ্রাফ উল্লেখ করেছে, সাকিবের সাদামাটা উদযাপনের কথা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩২২ রানের কঠিন লক্ষ্য পার করে দেয়ার পরও তার উদযাপন ছিল খুবই সহজ। দলকে জেতানোর পর ক্রিজের অন্য প্রান্তে থাকা লিটন দাসের সঙ্গে হাত মেলালেন। প্রত্যেক দলের বিপক্ষে নিজের সেরাটা দেয়াই যে এখন তার ধ্যানজ্ঞান।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: