-2019-08-26-23-46-07.jpeg)

২০১৩ সালে প্রেমিকা আয়েশা সিদ্দিকাকে বিয়ে করেন তামিম ইকবাল। দুজনের সুখের সংসার আরো আলোকিত করেছে একমাত্র সন্তান আরহাম। কিন্তু জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার হয়ে ওঠার আগে প্রেম করতে গিয়ে বহু ঝামেলা পোহাতে হয়েছে তামিমকে। ভালোবাসার জন্য যা যা করার সবই করেছেন, এমনকি চু’রিও!
ধনী পরিবারের ছেলে হলেও বাবা ইকবাল খান মা’রা যাওয়ার পর ভাই নাফিস ইকবালের কাছ থেকেই আসতো তামিমের পকেট খরচের টাকা। আর তাই প্রেমিকার জন্য গিফট কিনতে নিজের বাড়িতেই চু’রি করতে হয়েছে তাকে।
সম্প্রতি ‘দৈনিক প্রথম আলো’র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তামিম ইকবাল নিজের ছোটবেলা, বেড়ে ওঠা, ক্রিকেটার হয়ে ওঠা এবং পারিবারিক জীবন নিয়ে কথা বলেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের স’ম্পর্ক রক্ষা করাটা কঠিন ছিল। বেশিরভাগ সময় স’ম্পর্কটা অনেক বেশি দূর থেকে রক্ষা করতে হতো। ওদের পরিবার আমা’র ওপর খুশি ছিল না। কথা বলার সুযোগও তাই খুব একটা পেতাম না। ওর সঙ্গে একজন বডিগার্ড থাকত, সেটাও আমাকে পাহারা দিতে। আমি তবু সুযোগের অ’পেক্ষায় থাকতাম। স্কুলে বা কোনো একটা কোচিংয়ে গিয়ে যদি ৫ মিনিট দেখা করে আসতে পারি।
শুরুতে আম’রা একই স্কুলে পড়লেও স’ম্পর্ক হওয়ার পর মাত্র তিন-চার মাস পর্যন্ত স্কুলে দেখা করতে পেরেছি আম’রা। যখনই বিষয়টা জানাজানি হলো, আয়েশার স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হলো। পরে তো মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে সেখানকার স্কুলে পড়ানো হলো তাকে। ঘটনাটা ঘটল আমা’র কারণেই।এখন মনে হয়, হয়তো এটাই ঠিক ছিল।ক্লাস এইটের মেয়ে প্রেম-ভালোবাসা করবে, এটা কে পছন্দ করবে! কোনো পরিবারই পছন্দ করবে না।
কিন্তু তাতে আমা’র অবস্থা আরও খা’রাপ হলো। ওই সময়ে ১ মিনিটের ফোন খরচ ছিল ২৫ টাকা। আর আমি তো তখন টাকাপয়সাও তেমন উপার্জন করতাম না। সেজন্যই ঢাকা টু মালয়েশিয়া প্রেমের স’ম্পর্ক রক্ষা করা ছিল খুবই কঠিন।
যেদিন আয়েশা মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে বিমানে উঠে ঠিক সেদিনই জাতীয় দলে ডাক পান তরুণ তামিম ইকবাল। এর এতে করে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করা আয়েশার সঙ্গে যোগাযোগের উপায় বের হয়ে যায়। তামিম বলেন, আমি যদি আর ছয় মাস পরও জাতীয় দলে ঢুকতাম, আমা’র পক্ষে অ’ত দূরের স’ম্পর্ক রক্ষা করা সম্ভব হতো না। বিমান ভাড়ার কথা ভুলে যান, ফোনে কথা বলার জন্য মিনিটে ২৫ টাকা করে কে দেবে!
এর আগে নিজের ঘরে তাকে চু’রি পর্যন্ত করতে হয়েছে বলে রসিকতা করেন তামিম। তার ভাষায়, টাকার জন্য ওই সময় আমি চু’রিও করেছি। এসব তো অনেকে জানে না (হাসি)। একবার আমি আমা’র বোনের মোবাইল ফোন চু’রি করে বিক্রি করেছি, ওই টাকা দিয়ে আয়েশাকে গিফট কিনে দেওয়ার জন্য।
সেটটা আমি ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করে ৩ হাজার টাকায় আয়েশার জন্য একটা পারফিউম কিনি। ৪ হাজার টাকার মোবাইলের কার্ড কিনেছিলাম। দেশে কথা বলার জন্যই। দেশেও তো তখন ৭-৮ টাকা করে মিনিট ছিল। ফোন চু’রির কথা হয়তো এই সাক্ষাৎকার পড়েই অনেকে জানবে। খালি মোবাইল না, আরও অনেক কিছুই চু’রি করেছি জীবনে। বাইরে গিয়ে ডা’কাতি তো করতে পারতাম না। তার চেয়ে বাসায় চু’রি করাই ছিল সবচেয়ে নিরাপদ।
সাক্ষাৎকারে তামিম বলেন, জীবনে তার সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তিটি তার বাবা ইকবাল খান; যাকে তিনি বাল্যকালেই হা*রিয়েছেন। এরপর তার সবচেয়ে কাছের বড় ভাই নাফিস ইকবাল। তামিম জানান, তার বাবা কখনোই তার চাওয়া অ’পূর্ণ রাখতেন না। যেমনটা তিনি করেন তার ছেলে আহরামের সঙ্গে।
আয়েশাকে বিয়ে করার প্রসঙ্গে তামিম জানান, শুরুতে আয়েশার পরিবার তাকে অ’ত্যন্ত অ’পছন্দ করতো। জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার পরও তাকে মেনে নিতে পারতো না। এ সময় আয়েশার জন্য কোনো বিয়ের সম্বন্ধ আসলে তিনি পাত্রপক্ষের কাছে তার প্রেমের খবর পৌঁছে দিতেন। এভাবে বেশ কয়েকটি বিয়ে ভেঙে দেন। ওই সময় কিছু মিডিয়ায় তাদের প্রেমের খবর প্রকাশ হয়ে যায়। আর তাতেই মেয়েকে তার সঙ্গে বিয়ে দেয়া ছাড়া আর কিছু করার ছিলো না আয়েশার পরিবারের।
এখন বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে স’ম্পর্ক কেমন? এমন প্রশ্নের জবাবে তামিম বলেন, অসম্ভব ভালো। সবার সঙ্গেই। আর আমা’র শাশুড়ির কথা কী’ বলব, সম্ভবত আমিই ওনার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ।
সূত্র : সময় টিভি অনলাইন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: