ঢাকা | শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

‘লাল বাত্তি’র দিন শেষ

Admin 1 | প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০১৭ ০৯:৩৩

Admin 1
প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০১৭ ০৯:৩৩

কে জানত, কাকপক্ষীকেও টের পেতে না দিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিমানবন্দরে যাওয়াটা ছিল ‘লাল বাতি সংস্কৃতি’ তুলে দেওয়ার ‘ট্রায়াল রান’? প্রটোকল ভেঙে সেই দিনই নরেন্দ্র মোদি প্রথম ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন লাল বাতি না জ্বালিয়েই। এর দুই সপ্তাহের মধ্যে তাঁরই নেওয়া সিদ্ধান্তে অনুমোদনের সিলমোহর মেরে দিল ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।

বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঠিক হয়েছে, পয়লা মে থেকে ভারতের কোথাও কারও গাড়িতে লাল বাতি জ্বালানো যাবে না। এ নিয়ে যে আইনটি চালু আছে, সরকার তা বাতিল করে দিল।

মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি গণমাধ্যমকে বলেন, দমকল, অ্যাম্বুলেন্স বা পুলিশের মতো জরুরি সেবার সঙ্গে যুক্ত গাড়িগুলোতে শুধু নীল আলো জ্বালানো যাবে। সে জন্যও প্রচলিত আইনে সংশোধন আনা হচ্ছে।

এই সিদ্ধান্তের আওতায় রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বা লোকসভার স্পিকারও পড়ছেন। অর্থাৎ পয়লা মে থেকে গোটা দেশে এমন একজনও থাকছেন না, যিনি তাঁর সরকারি গাড়িতে লাল আলো জ্বালিয়ে চলাফেরার যোগ্য।

লাল বাতি সংস্কৃতি দূর করার ভাবনা বেশ কিছুদিন ধরেই ঘুরছিল প্রধানমন্ত্রীর মনে। সম্প্রতি মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, মুড়ি-মুড়কির মতো লাল বাতি রাস্তাঘাটে ছেয়ে গেছে। ওই মন্তব্যের কিছুদিনের মধ্যেই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচন হয়। পাঞ্জাব জয় করে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং তাঁর গাড়িতে লাল বাতি না লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন। একই সিদ্ধান্ত নেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকাকালীন বা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কখনো সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেননি, লাল বাতিও জ্বালাননি। সরকারি সূত্র অনুযায়ী, দেশের সর্বত্র লাল বাতি সংস্কৃতি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তটি পুরোপুরি প্রধানমন্ত্রীর একার।

এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মোদি অবশ্য তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপের (এসপিজি) সঙ্গে কথা বলেন। এসপিজির সঙ্গে কথা বলেই তিনি পৌঁছেছিলেন বিমানবন্দরে, শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে। এই যাওয়া-আসার পথে তাঁর যানবহরের জন্য পুলিশ সাধারণ যাত্রীদের রাস্তাও আটকায়নি। গাড়িতে লাল বাতিও জ্বালানো হয়নি।

লাল বাতি তুলে দেওয়া হলেও রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য ভিভিআইপিদের চলাফেরার জন্য রাস্তা বন্ধ করার প্রথা নিষিদ্ধ করা হয়নি। রাজধানীতে ভিভিআইপিদের চলাফেরা মসৃণ করতে আম আদমির রাস্তা আটকে দেওয়ার প্রথাকে বলা হয় ‘রুট লাগা’। সাধারণত ভিভিআইপিদের আসা-যাওয়ার সময় ৫ থেকে ১০ মিনিট রাস্তা আটকে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। লাল বাতির সংস্কৃতি তুলে দেওয়া হলেও এই ‘রুট লাগা’ প্রথা সম্পর্কে সরকার কোনো মন্তব্য করেনি। একটা রুট লাগার অর্থ হলো ভোগান্তির একশেষ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: