-2019-11-03-16-34-11.jpg)
শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর উদাসিনতার কারনে নির্মানের ৬ মধ্যেই বগুড়ার শেরপুরের মির্জাপুর-জোড়গাছা আঞ্চলিক সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে রাস্তাটি হুমকির মুখে পড়েছে। প্রতিনিয়তই এই ভাঙ্গা জায়গায় ঘটছে ছোট ছোট দুর্ঘটনা। জনগুরুত্বপূর্ন এই রাস্তাটির ১ কিলোমিটার এলাকায় মধ্যে ২০টির অধিক স্থানে ভেঙ্গে গেলেও কোন নজর নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, গত মার্চ মাসে রাস্তাটির কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ২ কোটি ৯৫ রাখ ১৩ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তাটি ১ বছর কোন মেরামতের প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান করতে বাধ্য থাকবে এবং ৫% পার্সেন্ট টাকা জামানত রয়েছে। যদি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেরামত না করেন তাহলে জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত হবে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার সুঘাট ও মির্জাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। এছাড়াও ধুনট উপজেলার মথুরাপুর, চোকিবাড়ী ইউনিয়ন সহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের বাসিন্দা এই রাস্তাটি ব্যবহার করেন। জনগুরুত্বপুর্ন এই রাস্তাটি ৬ মাস পুর্বে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার কাজ করা হয়েছে। সংস্কার কাজের পর থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আর কোন খোঁজ খবর না নেয়া রাস্তার দু-ধারেই ভেঙ্গে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যে গর্তগুলোতে চলাচল রত গাড়ী পরে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে। এছাড়াও ভ্যান গাড়ী, অটোরিক্সা, সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ও মোটরসাইকেল সহ ছোট ছোট যানবাহনগুলো মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় এই ভাঙ্গন চোখে না পড়ায় সবচেয়ে বেশি সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এই রাস্তার সাথে চারটি ইটভাটার বড় বড় গাড়ি চলাচল শুরু হলে জনসাধারনের চলাচল একেবারেই দুস্কর হয়ে যাবে, কেননা অনবরত মিনি ট্রাক ট্রলি ও মাটির গাড়ি চলাচলের কারনে ছোট ছোট যানবাহনগুলো রাস্তার ভাঙ্গনের মধ্যে পড়ার সমুহ সম্ভাবনা দেখা দেবে। এই রাস্তাটি এতটাই জনবহুল যে এখান দিয়ে জয়লা জুয়ান ডিগ্রী কলেজ, বেলাগাছি দাখিল মাদরাসা, চকসাদী দাখিল মাদরাসা, কল্যানী উচ্চ বিদ্যালয়, মির্জাপুর উচ্চবিদ্যালয়, ফুলজোর উচ্চ বিদ্যালয়, জোড়গাছা উচ্চ বিদ্যালয়, বিনোদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জোড়গাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাতাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাশিয়াবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা চলাচল করে। এছাড়াও সুঘাট ও মির্জাপুর ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র চলাচলের রাস্তা।
বর্তমান সরকার যেখানে গ্রামে শহরের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে বধ্য পরিকর সেখানে আঞ্চলিক এই রাস্তা ভেঙ্গে চলাচল বিযয়ের আশংকা তৈরী হলেও তা সংস্কার করার কোন খবর নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। উপজেলার মির্জাপুর-জোড়গাছা রাস্তার প্রায় ১কিলোমিটার মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। শতাধিক গ্রামের চলাচলের জন্য এই রাস্তাটি একমাত্র পথ হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে।
বিনোদপুর গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল করিম, কাশিয়াবালা মাঝিপাড়া গ্রামের গনেষ, চকসাদি গ্রামের আবুল হোসেন ও জোড়াগাছা গ্রামের আব্দুল আলিম জানান, দির্ঘদিন রাস্তাটি চলাচলের অনুপযুক্ত ছিল। গাড়ি নিয়ে একদমই চলাচল করা যায়নি, গত কিছুদিন পুর্বে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তাটি সংস্কার কাজ করায় আমরা শান্তিপুর্ন ভাবেই চলাচল করতে পারছিলাম কিন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারনে রাস্তাটির দুধার ভেঙ্গে বিলীনের আশংকা ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার শংকা দেখা দিয়েছে। তাদের দাবী রাস্তাটি দ্রæত মেরামত করে ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করা হোক।
সুঘাট ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান জিন্নাহ জানান, আমাদের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি মাননীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশে নতুন করে মেরামত করা হয়েছে। কিন্ত তদারকির অভাবে রাস্তাটি ভাঙ্গনের কবলে পরেছে।
মির্জাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী মন্টু জানান, বিষয়টি জানার পর আমি নিজে সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি। যেভাবে ভেঙ্গে গেছে তাতে চলাচল অত্যন্ত ঝুকিপূর্ন। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
উপজেলা প্রকৌশলী নুর মোহাম্মদ বলেন, এই রাস্তার ব্যাপারে আমাদের জানা ছিলনা, সরেজমিনে গিয়ে দেখে দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।
আবু জাহের
শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: