ঢাকা | রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনিঃ আল মঈন

amaderodhikarpatra@gmail.com | প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০২১ ১০:১০

amaderodhikarpatra@gmail.com
প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০২১ ১০:১০

 

ঢাকা, ১১  ডিসেম্বর, ২০২১ : র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনি বরং তা রক্ষা করে চলেছে। এছাড়া এলিট ফোর্স র‌্যাব সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনে জীবনকে বাজী রেখে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আজ দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে  র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেসব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। এসময় র‌্যাবের বিভিন্ন স্তরের  অন্যান্য উধর্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আমরা অফিসিয়ালি এখনো কিছু জানি না। তবে যেটা গণমাধ্যমে এসেছে যে, র‌্যাব মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। মানবাধিকার রক্ষায় র‌্যাাবের নয় হাজার সদস্যের ফোর্স কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, র‌্যাব মানবাধিকার লঙ্ঘন কিংবা লুণ্ঠন করেনি, বরং মানবাধিকার রক্ষা করে চলছে।’ তিনি  বলেন, মানবাধিকার রক্ষা করতে গিয়ে র‌্যাবের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান লে. কর্নেল আজাদসহ ২৮ জন শহীদ হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখতে ও মানবাধিকার রক্ষা করতে গিয়ে এক হাজারের বেশি সদস্যের অঙ্গহানি হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে দুই হাজারের বেশি সদস্য আহত হয়েছেন। বিশ্বে আর কোনও বাহিনী আছে কিনা যারা এমন মানবিকতা দেখিয়েছে তা তার জানা নেই বলে জানান মঈন। 
জঙ্গি, মাদক, সন্ত্রাসবাদ দমনেই র‌্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এলিট ফোর্স হিসেবে কিছু ম্যান্ডেটের আলোকে  র‌্যাব  প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।  আজকে  র‌্যাবের  আভিযানিক সাফল্যের কারণেই জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ উত্তর বা দক্ষিণাঞ্চলসহ পুরোদেশে শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। র‌্যাবের আভিযানের কারণেই সুন্দরবন জলদস্যুমুক্ত হয়েছে। আমরা সুন্দরবনের জলদস্যুমুক্ত তৃতীয় বার্ষিকী এবার পালন করেছি।’ কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সুন্দরবনে ৩২টি দস্যু বাহিনীর ৩২৬ জন আত্মসমর্পণ করেছেন। তাদের পুনর্বাসনে র‌্যাাব মানবিক ভূমিকাও পালন করেছে। তাদের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সরকারি অনুদান ছাড়াও র‌্যাবের  নিজস্ব অর্থায়নে ঘর  গরু-ছাগল দেওয়া হয়েছে। বাঁশখালির জলদস্যুদেরও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
আত্মসমর্পণ করা জঙ্গিদের সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রেও র‌্যাব  কাজ করছে জানিয়ে আল মঈন বলেন, বিশ্বে খুব কম দেশেই র‌্যাবের মতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মানবিকতা দেখিয়েছে। আমরা তাই দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, র‌্যাব মানবাধিকার লঙ্ঘন বা লুণ্ঠন করেনি বরং রক্ষা করে চলেছে।তিনি বলেন, বিভিন্ন বাহিনীর চৌকস অফিসার ও সদস্যদের নির্বাচন করে একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে র‌্যবে আনা হয়। নিজস্ব আইন ও নিয়ম কঠোরভাবে পালন করা হয়। এখানে নিয়মের বাইরে কোনো কিছু করার সুযোগ নেই।
র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান বলেন, দেশে র‌্যাাবই প্রথম বাহিনী যেখানে নিজস্ব সদস্যের জন্য ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা করেছে। এখন সরকারি চাকরিতে ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়াও দেশে সাম্প্রতিক সময়ে কিশোর গ্যাং এর দৌরাত্ম্য বন্ধসহ বিভিন্ন ইস্যুতে র‌্যাব সফল ও সার্থকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে বলেও জানান তিনি। র‌্যাবের ছয় শীর্ষ বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অফিসিয়ালি আমরা কোনও চিঠি পাইনি। বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি। আমরা বলতে চাই, র‌্যাব কখনও মানবাধিকার লুণ্ঠন করেনি, রক্ষা করেছে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ দমন হয়েছে। সুন্দরবন দস্যুমুক্ত হয়েছে। সুন্দরবনের ৩৬ টি দস্যু বাহিনীর  ৩২৬ জন দস্যু আত্মসমর্পণ করেছে।  তাদের সুস্থ জীবন দেওয়া হয়েছে।
ক্রসফায়ারের বিষয়ে র‌্যাবের এ পরিচালক বলেন, ‘বিভিন্ন সময় আমাদের বিরুদ্ধে গুলিবিনিময়ের অভিযোগ করা হয়। আপনারা জানেন রাষ্ট্রের আইনে প্রতিটি নাগরিকের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন অভিযানে যায়, তখন সন্ত্রাসীদের বাধার মুখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গুলিবিনিময়ের অধিকার রাষ্ট্রের আইন আমাদের  দিয়েছে। মাদক, জঙ্গি দমনের অভিযানে আমরা যখন প্রতিরোধের মুখে পরেছি তখনই গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। র‌্যাব  আত্মরক্ষার্থে গুলি করেছে। ক্রসফায়ারের প্রতিটি ঘটনার স্বাধীনভাবে তদন্ত হয়  উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি গুলি বিনিময়ের ঘটনা নির্বাহী তদন্ত হয়। তারা দেখে গুলি বিনিময় যথাযথ ছিল কিনা। যারা আইন ভঙ্গ করে, নিয়ম ভঙ্গ করে তাদের বিরুদ্ধে র‌্যাব সবসময় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
দেশে করোনা মহামারিতে র‌্যাব অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনা মহামারিতে সন্তান তার বাবাকে, বাবা তার সন্তনকে ফেলে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে র‌্যাব হেলিকপ্টার ব্যবহার করে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে, হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: