ঢাকা | শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
.

ষোড়শ সংশোধনী: সরকারের আপিল খারিজ

shahidul Islam | প্রকাশিত: ৩ জুলাই ২০১৭ ১২:৩৮

shahidul Islam
প্রকাশিত: ৩ জুলাই ২০১৭ ১২:৩৮

ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। আজ সোমবার সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ঐকমত্যের ভিত্তিতে এ রায় দেন।

রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, সরকারের আপিল খারিজ হওয়ায় হাইকোর্টের রায় বহাল থাকলো। 
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন—বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।

এর আগে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আপিল বিভাগের সোমবারের দৈনন্দিন কার্যতালিকায় (কজলিস্ট) 'সরকার বনাম অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী ও অন্যান্য' শীর্ষক এ মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য ১ নম্বরে রাখা হয়েছে। রোববার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এই কার্যতালিকা প্রকাশ করা হয়।

গত ১ জুন সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল শুনানি শেষে এ বিষয়টি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন সর্বোচ্চ আদালত।

বিচারক অপসারণ প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ এই মামলায় আপিল বিভাগে ১১ কার্যদিবস শুনানি গ্রহণ করা হয়। এ মামলায় আপিল বিভাগ মনোনীত ১২ জন অ্যামিকাস কিউরির (আইনি বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদানকারী আদালতের বন্ধু) মধ্যে ১০ জন আদালতে মতামত উপস্থাপন করেন। তাদের মধ্যে ৯ জনই ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।

তারা হলেন—বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী টিএইচ খান, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, তিন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ, এ জে মোহাম্মদ আলী ও ফিদা এম কামাল এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল ওয়াদুদ ভূইয়া ও এম আই ফারুকী।

এদিকে, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি ষোড়শ সংশোধনীর পক্ষে অর্থাৎ সংসদের মাধ্যমে বিচারক অপসারণের পদ্ধতি যথাযথ বলে যুক্তি তুলে ধরেন। দুই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ও ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ কোন মতামত দেননি।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলার আপিল শুনানিতে সহায়তার জন্য আদালত ১২ জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেন।

অন্যদিকে, আপিলের পক্ষে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। আর আপিলের বিপক্ষে বক্তব্য রাখেন রিটকারীর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। এ ছাড়াও ইন্টারভেনার (ব্যাখ্যাদানকারী) হিসেবে বক্তব্য রাখেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু।

প্রেক্ষাপট: সুপ্রিম কোর্টের ৯ আইনজীবীর করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৫ মে হাইকোর্টের একটি বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ, বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থি বলে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়, 'সংসদের মাধ্যমে বিচারকগণের অপসারণ প্রক্রিয়া ইতিহাসের একটি দুর্ঘটনা।' পরে গত বছরের ১১ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ ওই রায় প্রকাশিত হয়। এর পর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ মে আপিলের শুনানি শুরু করে রাষ্ট্রপক্ষ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: