ঢাকা | শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর খুনীরা যে গর্তেই পালিয়ে থাক তাদের সাজা দেওয়া হবে : আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: | প্রকাশিত: ১৯ আগস্ট ২০১৭ ১৯:৪১

নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ১৯ আগস্ট ২০১৭ ১৯:৪১

আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন , বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনীরা যে গর্তেই পালিয়ে থাকুক না কেন তাদেরকে খুজে বের করে এনে সাজা কার্যকর করা হবে।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট এর সহযোগিতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর তথ্য ও গবেষণা কেন্দ্র আয়োজিত বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পথচলা ও প্রতিবন্ধকতা সংক্রান্ত এক সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে একথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর দীর্ঘ একুশ বছরেও কোন সরকারই এই নৃশংস হত্যাকা-ের বিচারের জন্য কোন মামলা করেনি বরং ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বিচারের পথ বন্ধ করে রেখেছিল। শুধু তাই নয় হত্যাকা-ে জড়িতদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। খুনীদের বিদেশী মিশনে চাকুরি দিয়েছেন। খুনের আলামত নষ্ট করেছেন। এর ফলে খুনীরা বিদেশে শক্তভাবে শিকড় বেঁধেছেন এবং তাদের ফিরিয়ে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, খুনী নূর চৌধরী বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন। তিনি কানাডায় অবস্থানের জন্য সেখানকার আদালতে আবেদন করে হেরে গেছেন, এখন শুধু একটি গ্রাউন্ডে নূর চৌধুরী কানাডায় অবস্থান করছেন। সেটি হলো তিনি কানাডায় আবেদন করেছেন যে, তাকে বাংলাদেশ ফেরত পাঠালে তাকে ফাঁসি দেওয়া হবে। কানাডায় যেহেতু মৃত্যুদ- নিষিদ্ধ তাই কানাডা বাংলাদেশকে বলেছে, তাকে ফেরত দিলে মৃত্যুদ- দেওয়া যাবে না। মন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন, এই শর্ত কি মানা সম্ভব? তাকে তো আমাদের উচ্চ আদালত মৃত্যুদ-ের আদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, তারপরও সরকার তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
আনিসুল হক বলেন, কে এম রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন। তাকে ফেরত আনার জন্য আদালতে রিভিউ করা হয়েছে এবং আইনজীবি নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার বন্ধ করতে যারা আইন প্রণয়ন করেছিল বাংলাদেশের জনগণ তাদের শাস্তি দিবেন বলে আমার বিশ্বাস। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কেবল আদালতে সবকিছুর বিচার হয় না। কিছু কিছু বিচার সমাজেও করতে হয়। কারণ সমাজেরও কিছু দায়িত্ব আছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার রহস্য উন্মোচনে আরো গবেষণা ও আলোচনা হওয়া উচিত।
এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধু হত্যাকা- প্রতিরোধ করতে অনেকেই তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। তারা কেন ব্যর্থ হয়েছেন এ প্রশ্নের জবাব তাদেরকেই দিতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত খুনী যাদের সাজা কার্যকর করা হয়েছে, তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্তের জন্য আইন প্রণয়নের কাজ চলছে। তিনি বলেন, যারা পলাতক রয়েছেন, তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্তের জন্য নতুন করে আইন প্রণয়ন করার প্রয়োজন নাই। তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্তের জন্য আদালতের আদেশ রয়েছে এবং সে আদেশ অনুযায়ী কয়েকজনের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে । মন্ত্রী বলেন, জিয়া পরিবার জিয়াউর রহমান হত্যা মামলার বিচার চায় না, তার কারণ তারা আইনের শাসনে বিশ্বাসী নয়।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদন্তে এসেছে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ে জড়িত ছিলেন কিন্তু তিনি মামলা দায়েরের আগেই মারা যাওয়ায় তাকে আসামী করা হয় নাই।
মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান এর সঞ্চালনায় সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, জাতীয় সংসদ সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন, দৈনিক জনকন্ঠ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায় এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা কেন্দ্রের ট্রাস্ট্রি রাদুওয়ান মুজিব সিদ্দিক আলোচনায় অংশ নেন।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: