
৪ মাসে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন মেয়র আনিসুল হক, তারপর অধিকাংশ সময় হাসপাতালে আইসিইউতে ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।আনিসুল হকের মরদেহ বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে শনিবার দুপুর ১টায় ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে নামে। ওই ফ্লাইটেই আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হক, তার ছেলে নাভিদুল হকও আসেন।বিমানবন্দর থেকে লাশ নেওয়া হয় তার বনানীর বাড়িতে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গিয়ে তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।আওয়ামী-লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা গিয়ে সেখানে আনিসুল হকের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।বাদ আসর আর্মি স্টেডিয়ামে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, এতে মন্ত্রিসভার সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীসহ অগুনতি মানুষ অংশ নেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আগেই জানিয়েছিলন বনানী কবরস্থানে আনিসুল হককে দাফন করা হবে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর লন্ডনের রিজেন্ট পার্ক জামে মসজিদে আনিসুল হকের প্রথম জানাজা হয়। যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশীরা ছাড়াও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও বাংলাদেশ হাই কমিশনের কর্মকর্তারা জানাজায় অংশ নেন। নাতির জন্ম উপলক্ষে গত ২৯ জুলাই রুবানা ও আনিসুল হক যুক্তরাজ্যে যান। সেখানে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে ১৩ অগাস্ট তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর থেকে হাসপাতালেই ছিলেন তিনি।
তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী আনিসুল হক ২০১৫ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। মোহাম্মদী গ্রুপের চেয়ারম্যান আনিসুলের তৈরি পোশাক ছাড়াও বিদ্যুৎ, তথ্যপ্রযুক্তি, আবাসন, কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানা রয়েছে। ডিজিযাদু ব্রডব্যান্ড লিমিটেড এবং নাগরিক টেলিভিশনের মালিকানাও আছে তার ব্যবসায়িক গ্রুপের। সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে এফবিসিসিআইর সভাপতি ছিলেন আনিসুল হক। তার আগে বিজিএমইএর সভাপতিও ছিলেন তিনি।
সেনাপ্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক মেয়র আনিসুল হকের ছোট ভাই। লন্ডনে জানাজার পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, “আমরা অনেকে অবাক হয়েছিলাম তিনি যখন রাজনীতিতে যোগদান করেন।”মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর এই দুই বছরে অবৈধ দখল উচ্ছেদসহ বেশ কিছু বিষয়ে শক্ত অবস্থান নিয়ে অনেকের নজর কাড়েন আনিসুল হক। ঢাকার কূটনৈতিকপাড়া বারিধারা ও গুলশানের বিভিন্ন দূতাবাসের দখলে থাকা ফুটপাতও দখলমুক্ত করেন মেয়র আনিসুল। এছাড়া সড়ক প্রশস্তকরণ, ঢাকা চাকা, বিলবোর্ড উচ্ছেদ, গ্রিন ঢাকা কর্মসূচিসহ বেশকিছু উদ্যোগের জন্য আলোচিত হন তিনি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: