
শ্রম আইন অমান্য করে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের নিয়োগ করায় দেশের বিভিন্ন জেলায় মালিকদের বিরুদ্ধে ১৩৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সরকার ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ১১টি সেক্টর থেকে ৩৪১টি কারখানায় ৯০৩জন শিশুকে সনাক্ত করেছে বলে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর(ডাইফ)’র মহাপরিদর্শক মো. সামছুজ্জামান ভূইয়া বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর সাথে এক সাক্ষাৎকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বাসসকে বলেন, পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটির বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে ৩৮টি কাজকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। বিগত কয়েক বছরে তৈরি পোশাকশিল্প এবং চিংড়িশিল্পকে শতভাগ শিশুশ্রম মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এ বছরের মধ্যে আরো ১১টি সেক্টরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিশুশ্রম নিরসনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের ১৮টি খাতে ১৭ লাখের বেশি শিশু শ্রমিক বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এরমধ্যে ১২ লাখ ৮০ হাজার শিশু শ্রমিক ঝুঁকিপূর্ণ কর্মে নিয়োজিত এবং ২ লাখ ৬০ হাজার শিশু অতি ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
এসব শিুশুরা হোটেল-রেস্তেরাঁ, ট্যানরি, শিপব্রেকিং পরিবহণ, কৃষি, গৃহকর্ম, নির্মাণ ,ইটভাঙ্গা, লোহা কাটাসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মে নিয়োজিত রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর,ভোলা, পটুয়াখালিসহ দেশের ৬টি জেলায় বিড়ি ফ্যাক্টরিসহ কয়েকটি কারখানায় শ্রম আইন অমান্য করে শিশুদের কর্মে নিয়োগ করায় মালিকদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৩৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরমধ্যে কারিগর বিড়ি ফ্যাক্টরিতে ৭০০জনকে শিশু শ্রমের সাথে নিয়োগ করা হয় বলে তিনি জানান।
সামছুজ্জামান ভূইয়া বলেন, শুধু মামলা করে শিশু শ্রম নিরসন করা যাবে না। সরকারের পক্ষ থেকে শিশু শ্রম নিরসনে কারিগরি ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বাসসকে বলেন, সরকার দেশের আড়াই লাখ শিশু শ্রমিককে কারিগরি ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে ৩টি বিশেষ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এবং আরো নতুন প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০২৫ সাল নাগাদ সরকার দেশের সব সেক্টর থেকে শিশু শ্রম নিরসন করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন ,শিল্প অধ্যুষিত এলাকায় শ্রমিকদের শিশুদের জন্য ৪ হাজার ২৪৩টি কারখানায় ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: