ঢাকা | রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

দেশে রেকর্ড সংখ্যক ৪,০১৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ৩০ জুন ২০২০ ০৪:৪৩

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৩০ জুন ২০২০ ০৪:৪৩

 

ঢাকা, ২৯ জুন, ২০২০ : দেশে গত ২৪ ঘন্টায় ১৭ হাজার ৮৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় রেকর্ড সংখ্যক ৪ হাজার ১৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এর আগে দেশে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড ছিল ১৭ জুন। ওই দিন শনাক্ত হয়েছিল ৪ হাজার ৮ জন। গতকালের চেয়ে আজ করোনা আক্রান্ত ২০৫ জন বেশি শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৮ হাজার ৯৯টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিল ৩ হাজার ৮০৯ জন। দেশে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ৪১ হাজার ৮০১ জন।
দেশে করোনা শনাক্তের ১১৪তম দিনে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় ২৪ ঘন্টায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২১ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘন্টায় ৪৫ জন মারা গেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ২ জন বেশি মারা গেছেন। গতকাল ৪৩ জন মারা যান। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে দেশে মোট ১ হাজার ৭৮৩ জন মারা গেছেন।
শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। আগের দিনও এই হার ছিল ১ দশমিক ২৬ শতাংশ।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫৩ জন। গতকালের চেয়ে আজ ৬৪৪ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৪০৯ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৫৭ হাজার ৭৮০ জন।
তিনি জানান, আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪০ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৪০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক ৩১ শতাংশ বেশি।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৪১৩টি। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৭ হাজার ৩৪ টি। গতকালের চেয়ে আজ ২ হাজার ৬২১টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৬৫টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৭ হাজার ৮৩৭টি। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৮ হাজার ৯৯টি। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ২৬২টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে মোট ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৩৪টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
তিনি জানান, মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিবেচনায় ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১ জন এবং ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছেন। মারা যাওয়াদের মধ্যে ৩৬ জন পুরুষ এবং ৯ জন নারী। তাদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ৩০ জন, বাড়িতে ১৪ জন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেছেন ১ জন। বিভাগ বিশ্লেষণে ৪৫ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০ জন, খুলনা বিভাগে ৫ জন, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন করে এবং সিলেট ও বরিশাল বিভাগে ৩ জন করে মারা গেছেন ।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ১৫টি, আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ১২৯টি। সারাদেশে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ৬৯০টি, আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৭৪টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১১ হাজার ১০৮টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ১০৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৯৮টি। সারাদেশে সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৮৮১ জন, আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ২১৩ জন এবং ২৪ ঘন্টায় সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৭১৯ জন, ছাড়া পেয়েছেন ৬৪৬ জন।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ১ হাজার ২৮ জনকে এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ২৫ হাজার ৮৩৮ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬০৯ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ১০ হাজার ৮৯৬ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ১৪ হাজার ৯৪২ জন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ৩ হাজার ৫৩ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে মোট ৩ লাখ ৬১ হাজার ২২৪ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৬৯২ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে মোট ছাড়া পেয়েছেন ২ লাখ ৯৭ হাজার ৩৬৫ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬৫ হাজার ৯৫৯জন।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) গত ২৪ ঘন্টায় বিতরণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৬শ’টি। এ পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়েছে ২৫ লাখ ২৮ হাজার ২৪৫টি। এ পর্যন্ত বিতরণ করা হয়েছে ২৩ লাখ ৮১ হাজার ১৬৪টি। বর্তমানে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮১টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৪১৮টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮১ হাজার ১৬৯টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে
তিনি আরো জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪০৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ৪ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ২১৭ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৭০৫ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৮ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৩৯৯ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ৩৫ হাজার ৮৫৪ জন। ২৪ ঘন্টায় ৪৮২ জন এবং এ পর্যন্ত ২০ হাজার ৬৩১ জন মারা গেছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৮ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮৯ হাজার ৭৭ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৬১২ জন এবং এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৭০৭ জন মারা গেছেন বলে তিনি জানান।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: