ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২
আজ চার বছরপূর্তি

গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২ জুলাই ২০২০ ০২:২৬

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২ জুলাই ২০২০ ০২:২৬

গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার চার বছরপূর্তি আজ

 

ঢাকা, ১ জুলাই, ২০২০  : রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার চার বছরপূর্তি আজ।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলায় ১৭ জন বিদেশিসহ ২২ জন নিহত হন । তাদের মধ্যে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা। জঙ্গিদের গুলি ও বোমায় পুলিশের অনেকে আহত হন । পরদিন সকালে সেনা কমান্ডোদের উদ্ধার অভিযানে পাঁচ জঙ্গি ও রেস্তোরাঁর একজন পাচক নিহত হন। এই অভিযানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় শ্বাসরুদ্ধকর জিম্মি দশা। রেস্তোরাঁর আটক আরেক কর্মী পরে হাসপাতালে মারা যান।
ইতিহাসের ভয়াবহ ও নৃশংস জঙ্গি হামলায় ইতালির ৯ জন, জাপানের সাত জন, ভারতীয় একজন ও বাংলাদেশি তিন জন নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করা হয়।
হামলার চার বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ বুধবার সকাল থেকে নিহতদের স্বজনরা এবং করোনা দুর্যোগের মধ্যে সীমিত পরিসারে শিডিউল মেনে জাপান ও ইতালিসহ বিদেশী রাষ্ট্রদূতরা শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন বলে জানা গেছে।
জঙ্গিরা ২০১৬ সালের ১লা জুলাই সন্ধ্যারাতে হঠাৎ করে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে ঢুকে বিদেশি নাগরিকসহ বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করে। খবর পেয়ে গুলশান থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে গোলাগুলিতে আহত হন বনানী থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দীন। রাতেই হাসপাতালে মারা যান বনানী থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দীন। জঙ্গিদের ছোড়া গ্রেনেডের স্পিøন্টারের আঘাতে সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি উত্তর) রবিউল করিম নিহত হন।
ঘটনার পরের দিন সকালে সেনা সদস্যরা ‘থান্ডারবোল্ট’ নামে কমান্ডো অভিযানের মধ্য দিয়ে হলি আর্টিজানের প্রায় ১২ ঘণ্টার রক্তাক্ত জিম্মি সংকটের অবসান হয়। ঘটনাস্থল থেকে বিদেশিসহ কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
কমান্ডো অভিযানে জঙ্গি হামলায় সরাসরি অংশ নেওয়া পাঁচ তরুণের সবাই নিহত হন। নিহতরা হলেন, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাজ ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল।
দুই বছরের বেশি সময় ধরে তদন্তের পর ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
রায়ে মামলার ৮ আসামির ৭ জনকে মৃত্যুদন্ড ও একজনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, আব্দুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ এবং মামুনুর রশিদ রিপন। এছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
এ মামলায় দন্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল হাইকোর্টে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ। প্রায় সাত মাস আগে বিচারিক আদালতের রায় হাইকোর্টে এলেও এখন চলছে মামলার শুনানির জন্য পেপারবুক তৈরির শেষ কার্যক্রম।
এরপর নিয়ম অনুসারে গত ৫ ডিসেম্বর মৃত্যুদন্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স এবং খালাস চেয়ে করা আসামিদের জেল আপিল শুনানির জন্য মামলার নথিপত্র বিচারিক আদালত থেকে হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এ লক্ষ্যে বিচারিক আদালতের যাবতীয় নথি তথা মামলার এজাহার, জব্দ তালিকা, চার্জশিট, সাক্ষীদের সাক্ষ্য ও রায়সহ মোট দুই হাজার ৩০৭ পৃষ্ঠার নথিপত্র হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় জমা করা হয়। পরে মামলার যাবতীয় নথিপত্র একত্র করে আপিল শুনানিতে উত্থাপনের জন্য পেপারবুক তৈরি করতে বিজি প্রেসে পাঠান সুপিম কোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা।
সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ও মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বাসসকে জানান, এ মামলার পেপারবুক তৈরির কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে। পেপারবুক তৈরি হলে তা প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হবে। প্রধান বিচারপতি মামলাটি শোনার জন্য বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন এবং তখনই এ মামলায় হাইকোর্টের শুনানি শুরু হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: