ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

মানব পাচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে: রাবাব ফাতিমা

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২০ ১৮:২৮

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২০ ১৮:২৮

 

ঢাকা, ৩১ জুলাই, ২০২০ : জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেছেন, মানব পাচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবস উদযাপন উপলক্ষে উচ্চ পর্যায়ের ভার্চুয়াল প্যানেল আলোচনায় বক্তব্য প্রদানকালে তিনি একথা বলেন।
মানবপাচার বিরোধী গ্রুপ অফ ফ্রেন্ডস এবং জাতিসংঘের ড্রাগস ও ক্রাইম বিষয়ক কার্যালয় (ইউএনওডিসি) এর যৌথ উদ্যোগে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ উক্ত মানবপাচার বিরোধী গ্রুপ অফ ফ্রেন্ডস এর সদস্য। ইভেন্টটির এবারের প্রতিপাদ্য ছিল – সাড়াদানকারীদের স্বীকৃতি- প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত এবং মানবপাচার রোধে তাদের ভূমিকা তুলে ধরা ।
আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, মানবপাচার রোধে বহুমাত্রিকতার প্রেক্ষাপটে ‘প্রিভেনশন’, ‘প্রমোশন, ‘প্রটেকশন, এবং ‘পার্টনারশীপ’ -এই ফোর-পি ধারণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, আইনী স¤প্রদায়, সুশীল সমাজ, এনজিও এবং বিশেষ করে স্থানীয় কমিউনিটিসহ সকল অংশীজনদের সাথে নিয়ে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে আলোচনায় তা তুলে ধরেন তিনি।
মানব পাচারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাপকভিত্তিক যে সকল আইনী ও প্রাতিষ্ঠানিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে প্রদত্ত বক্তব্যে তাও উল্লেখ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। এই ঘৃণ্য অপরাধ প্রতিরোধে যাঁরা সামনের সারিতে থেকে কাজ করছেন এবং যারা সর্বপ্রথম সাড়া দিচ্ছেন বিশেষ করে এই বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে, তাঁদের তাৎপর্যপূর্ণ অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
মানবপাচারের আন্তঃসীমান্ত ও আন্তঃদেশীয় প্রকৃতি ও ব্যাপ্তিকে আমলে নিয়ে স্থানীয়, দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। মানবপাচার বিষয়টি সামগ্রিকভাবে দেখা এবং এর মূল কারণসমূহ চিহ্নিত করাসহ এ সমস্যা সমাধানে বেশকিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ তুলে ধরেন তিনি।
সুপারিশ গুলো হলো, দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কার্যক্রম এবং সহযোগিতাসমূহ জোরদার, সংশ্লিষ্ট জাতীয় আইনসমূহ কার্যকর, ইনটিলিজেন্স ও তথ্য বিনিময় ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং মানব পাচার সংশ্লিষ্ট অপরাধের প্রতিরোধ ও মনিটরিং এর জন্য ডিজিটাল সার্ভিলেন্স ও আইসিটির ব্যবহার এবং এ বিষয়ে সক্ষমতা বিনির্মাণ।
মানব পাচার বিষয়ে আইওএম, ইউএনওডিসি ও ইন্টারপোলসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
এছাড়াও নিরাপদ, নিয়মতান্ত্রিক ও নিয়মিত অভিবাসনের ইতিবাচক দিকসমূহের কথা তুলে ধরে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, মানব পাচারের নেতিবাচক প্রভাব রুখতে এটি হতে পারে টেকসই বিকল্প। মানবপাচারের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ বাস্তবায়নে এ সংক্রান্ত প্রটোকল ও আন্তর্জাতিক কনভেনশনের সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা এবং প্রয়োগ নিশ্চিত করতে আরও জোর প্রচেষ্টার আহ্বান জানান বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
ইভেন্টটির মডারেটর ছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বেলারুশের স্থায়ী প্রতিনিধি। তিনি মানব পাচার বিরোধী গ্রুপ অফ ফ্রেন্ডস জোটের পক্ষে বক্তব্য রাখেন। প্যানেলিস্টগণের মধ্যে ছিলেন ইউএনওডিসি এর নির্বাহী পরিচালক, যুক্তরাষ্ট্রের মানবপাচার প্রতিরোধ ও মনিটরিং বিষয়ক অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এবং বলিভিয়া, বেলজিয়াম ও মিশরের স্থায়ী প্রতিনিধিগণ।
এছাড়া অনুষ্ঠানটিতে বক্তব্য রাখেন ইউএন উইমেন এর উপ-নির্বাহী পরিচালক এবং ইউএনওডিসি’র গ্লোবাল ফ্লাইট এগেইনস্ট হিউম্যান ট্রাফিকিং বিষয়ক শুভেচ্ছা দূত।
জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের এই ইভেন্টটিতে সদস্য দেশসমূহের স্থায়ী প্রতিনিধি, ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রতিনিধি এবং এনজিও ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানটিতে মানব পাচারের শিকার একজন নারী তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।
বক্তারা কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও উত্তরণ প্রচেষ্টায় মানবপাচার প্রতিরোধ বিষয়টিকে সন্নিবেশনের আহ্বান জানান এবং এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মধ্যে আরও অধিক সমন্বয় ও ব্যাপকভিত্তিক প্রচেষ্টা গ্রহণের উপর জোর দেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: