কৃষকের আঁকা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, স্মৃতিসৌধ, নৌকা ও শাপলার ছবি
‘মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে অনেকে অনেক কিছু করছেন। আমি তো আর তেমন কিছু করতে পারবো না। একজন কৃষক হিসেবে দেশ ও বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে নিজের ফসলের মাঠে সরিষা ও লালশাককে কাজে লাগিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, স্মৃতিসৌধ, নৌকা ও শাপলার ছবি আঁকার চেষ্টা করেছি’—কথাগুলো বলছিলেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ির পাড়াখালবলা গ্রামের হাজি তারা মিয়ার ছেলে আব্দুল কাদির (৪১)।
দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিজয় দিবসের আগেই আবদুল কাদির নিজের সরিষা ও লালশাক ক্ষেতকে করে তুলেছেন শৈল্পিক কারুকার্যময়। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৩৩ শতক জমিকে সুচিশিল্পীর মতো শৈল্পিক বুননে করে তুলেছেন অপরূপ দৃষ্টিনন্দন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ খবর ছড়িয়ে পড়ায় ফসলের মাঠটি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন অসংখ্য মানুষ।
স্থানীয়রা জানায়, গত ১ ডিসেম্বর ৩৩ শতক জমিতে পাড়াখালবলা বন্ধুমহল ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে আব্দুল কাদির এঁকেছেন বঙ্গবন্ধু, স্মৃতিসৌধ, জাতীয় ফুল শাপলা আর আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকার প্রতিকৃতি। দিন যত যাচ্ছে, চারা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠছে এ দৃশ্য।
কৃষক আব্দুল কাদির জানান, পাড়াখালবলা গ্রামের ৩৫ যুবক মিলে গড়ে তুলেছেন ‘বন্ধুমহল ডিজিটাল ক্লাব’। ওই ক্লাবের সদস্যদের সহায়তায় কৃষিক্ষেত্রে ডিজিটাল আইডিয়া কাজে লাগানোর জন্য ৩৩ শতক জমিতে বারি-১৪ সরিষা ও লালশাকের বীজ বোনেন।
তিনি বলেন, বছরের অন্য সময় জমি চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হই। তবে, এবার জাতির পিতার চেতনাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতেই আমার এই প্রয়াস। একে আর্থিক লাভ না হলেও মানসিক তৃপ্তি অনেক।
আব্দুল কাদিরের স্ত্রী মাকসুদা বেগম জানান, বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসায় উজ্জীবিত হয়ে তার প্রতিকৃতি, স্মৃতিসৌধ, নৌকা ও শাপলা এঁকেছেন তিনি। স্বামীর এ কাজে তিনি মুগ্ধ এবং গর্বিত।
পাড়াখালবলা বন্ধু মহল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাইমুল ইসলাম সোহেল বলেন, মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর চেতনা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই কাজটি করা হয়েছে।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার জানান, কৃষক আব্দুল কাদির বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ ঘটিয়েছেন তার ফসলের মাঠে। তিনি তার জমিতে বারি-১৪ সরিষা ও লালশাক বুনে শৈল্পিক কাজটি করেছেন। এই কাজের জন্য আগামী বছর বঙ্গবন্ধু কৃষি পদকের জন্য আব্দুল কাদিরের নাম প্রস্তাবনা আকারে পাঠানো হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: