
ঢাকা ঃ ২৪ মাঘ (০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১) ঃ
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি বলেছেন, চায়না বাংলাদেশের বড় ব্যবসায়ীক অংশিদার। উভয় দেশের বাণিজ্য দিনদিন বাড়ছে। চায়নার সাথে বাংলাদেশের রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি। বাংলাদেশ রপ্তানি পণ্য তৈরী করতে যন্ত্রপাতি এবং পণ্যের কাঁচামাল চায়না থেকে আমদানি করে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে। চায়না বর্তমানে বাংলাদেশের ৮,২৫৬টি রপ্তানি পণ্যের উপর ডিউটি ফ্রি মার্কেট সুবিধা দিচ্ছে। চীনে বাংলাদেশের তৈরী পোশাক, পাট পণ্য, চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন এবং হাইটেক পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। এগুলোর বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এতে করে বাংলাদেশে নতুন করে ব্যবসা-বাণিজ্যে ও বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ বিনিয়োগ করতে এগিয়ে আসছে। এসকল জোনে চীনের বিনিয়োগকারীগণ বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন। চীনের সহায়তায় চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেডশীপ এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণের ফলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাসহ বছরব্যাপী বিভিন্ন মেলার আয়োজন করার সুযোগ সৃষ্টি হলো।
বাণিজ্যমন্ত্রী আজ (০৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো আয়োজিত চীনা অনুদান সহায়তায় রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো কর্তৃক বাস্তবায়িত “চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেডশীপ এক্সিবিশন সেন্টার” এর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা প্রদানের সময় এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশে^র বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক মেলায় নিয়মিত ভাবেই অংশ গ্রহণ করে থাকেন। চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেডশীপ এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণের ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা সহজ হবে। এখন থেকে উন্নত পরিবেশে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত হলে এ বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা সম্ভব হবে। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার পাশাপাশি বছরব্যাপী এখানে বিভিন্ন মেলার আয়োজন করা সম্ভব হবে। আমাদের এক্সিবিশন সেন্টার না থাকার কারনে বছরব্যাপী নিজস্ব রপ্তানি পণ্যের কোন প্রদর্শনী কেন্দ্র ছিল না। এখন নিজস্ব রপ্তানি পণ্য প্রদর্শন করার সুযোগ হলো।
উল্লেখ্য, পূর্বাচল নতুন শহরে ২০ একর জমির উপর বাস্তবায়িত “চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেডশীপ এক্সিবিশন সেন্টার” নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৩০৩.৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে চীনের অনুদান ৬২৫.৭০ কোটি টাকা। চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন এ এক্সিবিশন সেন্টারটি নির্মাণ করে। ৩৩ হাজার বর্গমিটারে ফ্লোর স্পেসের মধ্যে বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়েছে ২৪,৩৭০ বর্গ মিটার, এক্সিবিশন হলের আয়তন ১৫,৪১৮ বর্গ মিটার, এতে ৮০০টি স্টল রয়েছে। দোতলা পার্কিং বিল্ডিংয়ের পার্কিং স্পেস ৭,৯১২ বর্গ মিটার, গাড়ি পার্কিং করা যাবে ৫০০টি। এছাড়া এক্সিবিশন বিল্ডিং এর সামনে খোলা জায়গায় আরও ১,০০০টি গাড়ি পার্কিং করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া, ৪৭৩ আসন বিশিষ্ট ১টি মাল্টি ফাংশনাল হল, ৫০ আসন বিশিষ্ট একটি কনফারেন্স রুম, ৬টি নেগোশিয়েশন মিটিং রুম, ৫০০ আসন বিশিষ্ট রেস্টুরেন্ট, শিশুদের খেলার স্পেস, নামাজের রুম, ২টি অফিস রুম, মেডিকেল বুথ, ডরমেটরি/গেষ্ট রুম, ১৩৯ টি টয়লেট, বিল্ট ইন পাবলিক এড্রেস সিস্টিম, নিজস্ব ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, স্টোর রুম, সিএটিভি কন্ট্রোল রুম, অটোমেটেড সেন্ট্রাল এসি সিস্টেম, ইনবিল্ট ইন্টারনেট/ওয়াইফাই, আধুনিক অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা, আলাদা রেজিষ্ট্রেশন হল, আধুনিক ফোয়ারা, ইন বিল্ট পতাকা ষ্ট্যান্ড এবং রিমোট কন্ট্রোল/ইলেক্ট্রনিক প্রবেশ গেইট রয়েছে।
চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেডশীপ এক্সিবিশন সেন্টার হস্তান্তর পত্রে বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি,এমপি এবং চায়নার পক্ষে স্বাক্ষর করেন ঢাকায় নিযুক্ত চায়নার এ্যাম্বাসেডর লি জিমিং।
বাণিজ্যসচিব ড. মো. জাফর উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য রাখেন, বিশেষ অতিথি ঢাকায় নিযুক্ত চায়নার এ্যাম্বাসেডর লি জিমিং(খর ঔরসরহম), গেষ্ট অফ অনার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং ইআরডি সচিব ফাতেমা ইয়াসমিন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শরিফা খান এবং প্রকল্প পরিচালক মো. রেজাউল করীম।
(মো. আব্দুল লতিফ বকসী )
সিনিয়র তথ্য অফিসার ও জনসংযোগ কর্মকর্তা
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
মোবা. ০১৭১১-১৬৫ ৮৮০,
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: