
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি :
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় দাবীকৃত চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় এক রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীসহ ৪ আহত হয়েছেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর, স্টাফদের মারধর এবং ক্যাশ বাক্স থেকে ৭০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। আহতরা হলেন, সেভেন হ্যাভেন মার্স রেস্টুরেন্ট এন্ড পার্টি সেন্টার এর মালিক মো. সাত্তার হোসেন দেওয়ান (৪০), ক্যাশিয়ার রাসেল মোল্লা (৩২), কর্মচারী ইয়াম (২২) ও মাহমুদা বেগম(৩৩)।
হামলায় আহত ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় , উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের নয়াকান্দী গ্রামের মৃত আলী হোসেনের ছেলে সাত্তার হোসেন দেওয়ান ৬জন পার্টনারশিপে গত ২০১৮ সালে ভাটেরচর নতুন রাস্তা এলাকায় সেভেন হ্যাভেন মার্স রেস্টুরেন্ট এন্ড পার্টি সেন্টার নামে একটি রেস্টুরেন্ট ভাড়া নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। রেস্টুরেন্টেটি চালু হওয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন ধরে টেঙ্গারচর ইউনিয়নের বড়ইকান্দী ভাটেরচর গ্রামের নাশু প্রধান রেস্টুরেন্ট মালিকরের কাছে চাঁদা দাবী করে আসছে। তার দাবীকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় রবিবার রাত সাড়ে ৭ টার দিকে সেভেন হ্যাভেন মার্স রেস্টুরেন্ট এন্ড পার্টি সেন্টারে নাশু প্রধানের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ দেশীয় অস্ত্র লোহার রড, হকিষ্টিক, কাঠের ডাসা হাতে নিয়ে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায়।
এসময় সন্ত্রাসী হামলায় হোটেল মালিক মো. সাত্তার হোসেন দেওয়ান, ক্যাশিয়ার রাসেল মোল্লা, কর্মচারী ইয়াম ও মাহমুদা বেগম আহত হয়। এ সময় সন্ত্রাসীরা রেস্টুরেন্টের স্টাফ দের মারধর, সেখানে ভাঙচুর চালিয়ে ক্যাশ বক্স ভেঙে নগদ ৭০ হাজার টাকা এবং একটি মোবাইল সেট লুটে নেয়। এক প্রত্যক্ষদর্শী ৯৯৯ ফোন করিলে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। করে আহতদের উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায় স্থানীয়রা। আহতদের মধ্যে সাত্তার হোসেন দেওয়ান গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বাকিদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রাকিবুল আরিফ বলেন, সাত্তার হোসেনের গায়ে এবং মাথার বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাথায় আঘাতের পর তার কথা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিষয়টিকে প্রাথমিকভাবে স্ট্রোক মনে করছেন তারা। তাকে ব্রেনের সিটি স্ক্যান করে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে সোমবার সকালে সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট আসলে তার ব্রেন স্ট্রোক ধরা পড়ে। মারধরের ঘটনার পর থেকে আহত সাত্তার হোসেন দেওয়ান কথা বলতে পারছেন না। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এ বিষয়ে দোকান মালিক গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য প্রয়াত সভাপতি সোলায়মান দেওয়ানের ছেলে বদিউজ্জামান দেওয়ান রনি বলেন, অত্যন্ত ঘৃণিত এই কাজের সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী গ্রুপটি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে আসছে না দিলেই তাদের হামলার শিকার হতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
এ ঘটনায় রোববার দুপুর আহত সাত্তার হোসেন দেওয়ানের স্ত্রী আফরোজা আক্তার বাদী হয়ে গজারিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। গজারিয়া থানার অফিসার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইছ উদ্দিন জানান, অভিযোগ পেয়েছি, ঘটনাস্থল পুলিশ পরিদর্শন করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: