ঢাকা | শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

চট্রগ্রাম থেকে হাতিয়ার দুর্ধর্ষ ডাকাত নুরনবীসহ ৩জন গ্রেফতার।

Biplob | প্রকাশিত: ২ জুন ২০২১ ১৮:২৮

Biplob
প্রকাশিত: ২ জুন ২০২১ ১৮:২৮

মোঃএনায়েত হোসেন,নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি:বিভিন্ন গোডাউনে ডাকাতি করে সিগারেট লুট করাই তাদের আসল পেশা।

শুধু তাই নয়, ডাকাতি করতে গিয়ে দুজনকে খুন করেছেন।গরু চুরিসহ নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ।এইসব ডাকাতি করে হয়েছে কোটিপতি।

নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত দ্বীপ হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আলেক শাহ্ পাটোয়ারীর বাড়ি পিতা ইদ্রীসের সন্তান দুর্ধর্ষ ডাকাত নুরনবী।

এলাকা সুত্র জানা যায় নুরনবী ওতার পরিবারের সদস্যরা একাধিক অপরাধ জগতের সাথে জড়িত।

গতকাল চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার হয়েছে নুরনবীসহ আরো দুইজন।

গত ২৭ মে চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানার পোস্তারপাড় এলাকায় আবুল খায়ের গ্রুপের ডিলার খাজা ট্রেডার্সের গোডাউনে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতির রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।

নোয়াখালী হাতিয়া মো. নুর নবী (৩০) নামে এক ডাকাত সর্দারের নেতৃত্বে এই ডাকাতি হয়। সেদিন অস্ত্র তাক করে ডাকাত দল গোডাউন থেকে ১০১ কার্টুন সিগারেট ও অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। যার বাজারমূল্য আনুমানিক ৪০ লাখ টাকা।

এ ঘটনায় ডিলার মালিক বাদী হয়ে ডবলমুরিং থানায় মামলা দায়ের করেন। দুর্ধর্ষ এই ডাকাতি মামলার তদন্তের দায়িত্ব নেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন। এরপর ঠিক করেন একাধিক টিম। প্রযুক্তির সহায়তায় সংগ্রহ করা হয় বেশকিছু তথ্য। এরপর নগরের গোয়েন্দা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজ ও অভিযান পরিচালনা করা হয়।

একপর্যায়ে ঘটনার তিনদিনের মাথায় রোববার (৩০ মে) সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় ডাকাতির মূলহোতা নুর নবীকে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নুর নবী জানান, শুধু চট্টগ্রাম নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৩০টি ডাকাতি করেছেন। আর এসব ডাকাতির সবগুলোই করেছেন বিভিন্ন সিগারেটের গোডাউনে। কারণ হিসেবে বলেছেন, সিগারেট ডাকাতি করতে ও পরবর্তীতে বিক্রি করতে সুবিধা।

জিজ্ঞাসাবাদে নুর নবী আরও জানান, সর্বশেষ ডাকাতি করা সিগারেট ও বেশিরভাগ সিগারেট বিক্রি করেছেন কুমিল্লা সদর থানার পশ্চিম বাগিছাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহজাহানের (৬০) কাছে। এরপর পুলিশ অভিযান চালায় শাহজাহানের বাড়িতে। সেখান থেকে শাহজাহানের সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় তার ছেলে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছাত্র মো. এনায়েত উল্লাহ শান্তকে (২৬)। অভিযোগ, তিনিও বাবার সঙ্গে ডাকাতি মালামাল ক্রয় ও বিক্রয়ে সহযোগিতা করেন। পরে তাদের বাড়ি থেকে ৯২ কার্টুন সিগারেট ও সিগারেট বিক্রির নগদ ৬৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুত্রে জানা যায় , নুর নবী শুধু সিগারেটের গোডাউনে ডাকাতি করেন। এ পর্যন্ত তার নেতৃত্বাধীন চক্র চট্টগ্রামের চান্দগাঁও কামাল বাজার এলাকার রফিক স্টোর থেকে ২৫ লাখ টাকা মূল্যের ৭৩ কার্টুন সিগারেট, সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি আফজাল হোসেনের গোডাউন থেকে ২২ লাখ টাকা মূল্যের ৬৩ কার্টুন সিগারেট ও নগদ প্রায় দেড় লাখ টাকা,চাঁদপুর কচুয়ার সাইফুল স্টোর থেকে ২২ কার্টুন সিগারেট ও নগদ সাড়ে ৪ লাখ, টেকনাফ থেকে ২২ লাখ টাকা মূল্যের সিগারেট এবং সবশেষ ডবলমুরিংয়ের খাজা ট্রেডার্সের গোডাউন থেকে ৩২ লাখ ৯০ হাজার টাকা মূল্যের ৯৪ কার্টুন সিগারেট লুট করে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কয়েকমাস আগে নুর নবী পতেঙ্গা থানা এলাকায় দারোয়ান খুন করে আকিজ বিড়ির গোডাউনে ডাকাতি করেছিলেন। এছাড়াও তিনি গত সাত বছরে ১০ জেলায় ৩০টি ঘটনায় প্রায় ১০ কোটি টাকার সিগারেট ডাকাতি করেছেন। এ কাজে বাঁধা পাওয়ায় তারা এ পর্যন্ত দুজনকে খুন করেন। এসব করলেও নুর নবী নিজ এলাকায় সমাজসেবক হিসেবে পরিচিত।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘এটি একটি চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনা। আমরা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছি। নুর নবী পেশাদার ডাকাত। তার সঙ্গী আছে ২০-২৫ জন। তাদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

গ্রেফতার শাহজাহান ও এনায়েত উল্লাহ সম্পর্কে পিতা-পুত্র। তারা নুর নবীর ডাকাতি করা সিগারেট অল্প দামে কিনে নেয়। তাদের তিনজনকে ডাকাতির ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় সোমবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: