
সাভার প্রতিনিধি: সাভারের গেন্ডা এলাকায় ৩টি ফ্লাট কিনে আরো ৪টি ফ্লাট দখলের অভিযোগ উঠেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী মনিরুল ইসলাম (৫৫)-এর বিরুদ্ধে। এ বিষয় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন বিম বিল্ডার্সের কেয়ারটেকার রুহুল আমিন (৪৬)।
এছাড়া বিম বিল্ডার্স থেকে বায়নাসূত্রে আরো ২টি ফ্লাটের মালিক মামুন সরদার নামে এক ব্যক্তি কারাগারে থাকায় তার স্ত্রীকে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদানের অভিযোগে উঠেছে মনিরুল ইসলাম (৫৫)-এর বিরুদ্ধে। এঘটনায় সাভার মডেল থানায় মামুন সরদারের স্ত্রী ছাবিকুন নাহার সাধারণ ডায়েরী (নং-৮৮৬) করেন।
সাধারণ ডায়েরী সূত্রে জানা যায়, বিবাদী মনিরুল ইসলাম অনেকদিন যাবত বিভিন্ন বিষয়ে ক্ষতি করার চেষ্টা করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তার স্বামী মোঃ আল মামুন সরদার এর বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে সেই মামলায় তার স্বামী গ্রেপ্তার হওয়ার পরে থেকে মনিরুল ইসলাম বিভিন্ন সময়ে হুমকি-ধমকিসহ বিভিন্ন প্রকার বাধা প্রদান করে আসছিল। তার শিশু সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে থাকাকালিন গভীর রাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ও বিবাদী আমাদের বাসার গেটে নক করে। তখন কে জানতে চাইলে সে বিভিন্ন প্রকার হুমকি-ধমকিসহ অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে স্থান ত্যাগ করেন।
বিম বিল্ডার্সের কেয়ারটেকার রুহুল আমিনের অভিযোগ থেকে জানা যায়, আনুমানিক ১০ বছর আগে বিল্ডার্স কর্তৃপক্ষ তাকে ৫ হাজার টাকা বেতনে নিযুক্ত করেন। বিল্ডিং নির্মাণের শর্ত মোতাবেক জমির মালিককে বুঝিয়ে দেওয়া হয় তিটি ফ্লাট। অতঃপর বিল্ডার্স লিমিটেড কর্তৃপক্ষ আমাকে ষষ্ঠ তলার উত্তর পাশের ফ্ল্যাটে বসবাসের অনুমতি প্রদান করলে দীর্ঘদিন যাবৎ আমি সপরিবারে বসবাস করে আসছি।
পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় বিম বিল্ডার্স ২য় তলার উত্তর পাশের ফ্লাট ও ৬ষ্ঠ তলায় উত্তর পাশের ফ্লাট ব্যাতিত বাকি ফ্লাটগুলো বিভিন্ন লোকের কাছে বিক্র করে।
পরে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক আমি স্ব স্ব মালিকে ফ্লাট বুঝিয়ে দেই। আনুমানিক গত ৫ মাস আগে বিবাদী মনিরুল ইসলাম এসে জানান, জমির মালিকের নিকট হতে তিনটি ফ্ল্যাট সে ক্রয় করেছে। অতঃপর উক্ত বিবাদি তার অজ্ঞতনামা সহযোগীদের সহযোগিতায় বিভিন্ন সময় বিল্ডার্স কোম্পানির নিয়ন্ত্রণাধীন দ্বিতীয় তালার উত্তর পাশে এবং ষষ্ঠ তলার উত্তর পাশের ফ্ল্যাট জবর দখলের পাঁয়তারা করে আসছে।
কিন্তু আমি বিবাদীর উক্তরূপ অন্যায় কাজে বাধা দেওয়ায় সে জবর দখল করতে পারেনি। গত ১০ তারিখ রাত ৮:৩০ ঘটিকার সময় উক্ত বিবাদী আমার বর্তমান ঠিকানায় অনাধিকার প্রবেশ করে আমাকে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে আমাকে এই বিল্ডিং ছাড়ার নিদের্শ দেন।
এছাড়া গত ১৩ জুন সকাল ৯টার সময় আমি আমার বর্তমান ঠিকানার সামনে আসলে পুনরায় আমাকে গালিগালাজ করত একইভাবে হুমকি প্রদান করে। আমি বাড়ি ছাড়িয়া না গেলে সে তার লোকজনের সহায়তায় যেকোনো মুহূর্তে আমাকে খুন খুন জখম করত উল্লেখিত ফ্লাট দুটি জবর দখল করার হুমকি দেয়।
ফ্লাট দখলের এবিষয় অভিযুক্ত মনিরুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা ও মামুন সরদারর স্ত্রীকে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করিনি। তিনি কি করেন তা জানাতে চাইলে বলেন, আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অফিস সহকারি ছিলাম। তিন বছর ধরে অবসরে আছি, তা আমি সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি। এখন গাড়ীর ব্যবসা করেন বলে জানান তিনি।
তবে তার ঘনিষ্ঠ একজন নামপ্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মনিরুল ইসলাম সব জায়গায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের প্রসাশনিক কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেন। এমনকি তার ফ্ল্যাটের আশপাশের সবাই এ বিষয়টি জানেন। মনিরুল ইসলাম তাকে বলেছে সে তিন মাসের জন্য অফিস থেকে ছুটি নিয়েছেন। এছাড়াও ওই ভবনটির ৫ তলার অনুমোদন থাকলেও তা ৬তলা করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার এস আই ইমরান হোসাইন বলেন,তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: