ঢাকা | বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২

প্রধানমন্ত্রী যে মহানুভবতা দেখিয়েছেন, খালেদা জিয়া কি তা পারতেন : তথ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন

amaderodhikarpatra@gmail.com | প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০২১ ০৯:৪১

amaderodhikarpatra@gmail.com
প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০২১ ০৯:৪১

 
sharethis sharing button

sharethis sharing button

চট্টগ্রাম, ১৮ নভেম্বর, ২০২১ : ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আদালতে দন্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি যে মহানুভবতা দেখিয়েছেন, বেগম জিয়া কি তা পারতেন’ প্রশ্ন রেখেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। 
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্বদ্যিালয়ে ৫৬তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকরা বেগম জিয়ার বিদেশ গমনের অনুমতি বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া সেই ব্যক্তি যার আমলে তার পুত্রের পরিচালনায় একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছে এবং এরপর তিনি সংসদে দাঁড়িয়ে হাস্যরস করে বলেছিলেন যে, আমাদের নেত্রী না কি ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিলেন।’ 
ড. হাছান বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া সেই ব্যক্তি যার দুয়ারে দেশের প্রধানমন্ত্রী গিয়ে ২০-২৫ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলেন তার পুত্রের মৃত্যুতে সমবেদনা জানানোর জন্য, তিনি দরজা খোলেননি। বেগম জিয়া সেই ব্যক্তি যাকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে নির্বাচনের আগে দাওয়াত দিয়েছিলেন, আর তিনি অশোভন আচরণ করে সেদিন তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।’ 
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম জিয়া সেই মানুষ যিনি ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডকে উপহাস করার জন্য, হত্যাকারিদেরকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য নিজের জন্মের তারিখ বদলে দিয়ে ১৫ আগস্ট কেক কাটেন, ভুয়া মিথ্যা জন্মদিন পালন করেন। তিনি আদালতে খালাস পাননি, জামিন পাননি। এরপরও বেগম জিয়াকে কারাগারের বাইরে রাখা হয়েছে। তিনি যখন কারাগারে ছিলেন, তার সাথে তার পছন্দের গৃহপরিচারিকাকে থাকতে দেয়া হয়েছিল, যেটি উপমহাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। তার প্রতি যে মহানুভবতা প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন, আমি ব্যক্তি হিসেবে কখনো সেটি দেখাতে পারতাম না, অন্য কেউ পারতো না। বেগম খালেদা জিয়া পারতেন কি না সেই প্রশ্নটা করেন।’ 
এসময় ‘সরকার লুটপাট-নৈরাজ্য চালাচ্ছে’ বলে বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্য সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ফখরুল সাহেবরা দেশে যে কি পরিমাণ নৈরাজ্য বিভিন্ন সময় চালিয়েছে সেটি তো দেশের মানুষ ভুলে যায়নি। মানুষের ওপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপের রাজনীতি, মানুষকে দিনের পর দিন অবরুদ্ধ করে রাখার রাজনীতি, স্কুলছাত্র, বিশ্ব ইস্তেমা ফেরত মুসল্লি, মসজিদের মধ্যে মোয়াজ্জিনের ওপর বোমা নিক্ষেপ, ভিন্নমতালম্বীদের ওপর হামলা এগুলো সবই মির্জা ফখরুল সাহেবরাই করেছেন। আমাদের দল সেই রাজনীতির চর্চা করে না।’ 
এর আগে বক্তৃতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আয়তনের দিক দিয়ে বাংলাদেশের বৃহত্তম এবং অনন্য এ বিশ্ববিদ্যালয় গত ৫৫ বছরের পথচলায় দেশ ও সমাজ গঠন এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। 
তিনি আশা প্রকাশ করেন, সংস্কৃতি ও মুক্তবুদ্ধি চর্চা ও গবেষণায় আরো ভূমিকা রেখে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতি বিশ্বসভায় ছড়িয়ে যাবে। 
তিনি বলেন, বিশ^বিদ্যালয় শুধু পাঠদান ও সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য নয়, সেখানে পাঠদান হবে, ডিগ্রি প্রদান করা হবে, একই সাথে সেখানে জ্ঞানের চর্চা হবে, সংস্কৃতি, মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তমতের চর্চা হবে। আমরা একটা জ্ঞান ও ন্যায় ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা একটি বহুমাত্রিক সমাজে বসবাস করি। জ্ঞানভিত্তিক, ন্যায় ভিত্তিক বহুমাত্রিক সমাজ ব্যবস্থা ব্যতিরেকে গণতন্ত্র সুসংহত হয়না। যেখানে জ্ঞান এবং বিজ্ঞানের চর্চা হয়না, যেখানে নিয়ম এবং নীতির ব্যত্যয় ঘটে, যেখানে মুক্তবুদ্ধির চর্চা হয়না, যেখানে মুক্তমতের অবদমন করা হয়, সেখানে সমাজ এগোয়না। 
চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়কে ঘিরে অনেক অম্ল-মধুর স্মৃতি রয়েছে উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, আজকে এই জায়গায় এসে কথা বলার ক্ষেত্রে, আমার জীবনকে এই পর্যায়ে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে এই বিশ^বিদ্যালয়ের বহু অবদান আছে। প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়ার সময় এই বিশ^বিদ্যালয় যে সাহস এবং শক্তি আমাকে যুগিয়েছে পরবর্তীতে রাজনীতির বন্ধুর পথ পরিক্রমার ক্ষেত্রে জীবনকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল করিম, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম উপস্থিত ছিলেন। প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়ার পরিচালনায় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মহীবুল আজিজ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: