ঢাকা | শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

ঈদুল ফিতরের নামাজ ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে আদায় করল মুসুল্লিরা

odhikarpatra | প্রকাশিত: ৪ মে ২০২২ ০৫:০৯

odhikarpatra
প্রকাশিত: ৪ মে ২০২২ ০৫:০৯

মঙ্গলবার (৩ মে) সকালে ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এক মাস সিয়াম সাধনার পর সারাদেশে মহাসমারোহে চলছে ঈদুল ফিতর উদযাপন। করোনায় দুই বছর পর ঈদগাহে ও খোলা জায়গায় ঈদের জামাত আদায় করেছেন মুসল্লিরা।

সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানী ঢাকায় প্রধান ঈদ জামাত হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ সর্বস্তরের লাখো মানুষ উৎসব আমেজে সেখানে নামাজ আদায় করেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক তত্বাবধানে ঈদের প্রধান জামাতে ইমামের দায়িত্ব পালন করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন। নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এ প্রধান জামাতে মহিলা ও বিদেশী কূটনীতিকদের নামাজ আদায়ে বিশেষ ব্যবস্থা ছিল। মুসুল্লিদের জন্য ওযু, খাবার পানি ও মোবাইল টয়লেটেরও ব্যবস্থা ছিল।
জাতীয় ঈদগাহে সুষ্ঠুভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠানে নেয়া হয় তিন স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঈদগাহে সকল প্রবেশ পথ এবং ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের নামাজের স্থানসহ ঈদগাহ মাঠের গোটা প্যান্ডেলে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। মুসল্লিদের ঈদগাহে প্রবেশের আগে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশীর পর আর্চওয়ে দিয়ে প্যান্ডেলে প্রবেশ করতে হয়।
প্রধান এ জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাদা পোশাকে র‌্যাব এবং পুলিশ সদস্যরা ঈদগাহ ময়দানে সার্বক্ষণিক তৎপর ছিলেন।

সকাল সাড়ে ৯ টা বঙ্গভবনের দরবার হলে ঈদুল ফিতরের নামাজে অংশ নেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পরিবারের সদস্য ও বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে রাষ্ট্রীয় বাসভবনে ঈদের নামাজ আদায় করেন তিনি। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করা হয়। রাষ্ট্রপতি পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান।

রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮টায়। এছাড়া শতাধিক ঈদগাহ মাঠে জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

চট্টগ্রামে সকাল ৮টায় জমিয়াতুল ফালাহ ময়দানে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয় সাড়ে ৮টায়। এছাড়া নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে ১৬৪টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদের ছুটিতে নিরাপত্তায় নগরী জুড়ে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৪ হাজার সদস্য।p

সকাল সাড়ে ৮টায় সিলেটে প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহাসিক শাহী ঈদগাহ ময়দানে। এছাড়া হযরত শাহজালাল রহমাতুল্লাহ আলাইহে দরগাহ, কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদসহ নগরীর ৯ স্থানে ১১ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

বরিশালে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় নগরীর হেমায়েত উদ্দিন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে। জেলার বৃহত্তম ঈদের নামাজ আদায় হয় চরমোনাই ও উজিজুরপুরের গুঠিয়া বায়তুল আমান জামে মসজিদে।

খুলনায় সকাল সাড়ে ৮টায় নগরীর সার্কিট হাউজ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের প্রধান জামাত। এছাড়াও নগরীর ৩১ ওয়ার্ডের বিভিন্ন মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

বৃষ্টি উপেক্ষা করে বান্দরবানের ঈদগাহ মাঠে খতিব মাওলানা আলাউদ্দিন ঈমামীর ইমামতিতে প্রধান জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হয়। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয় জাতীয় ঈদগাহ ও আশপাশের এলাকায়।

বৈরি আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাতে অংশ নিয়েছেন মুসল্লিরা। খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টিতে ভিজেই নামাজে আদায় করেন অনেকে। এদিকে ঈদ জামাতকে নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ রাখতে পুরো শহরকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয় সব ধরনের যানবাহন চলাচল। শোলাকিয়া মাঠ ও আশপাশের এলাকায় কার্যকর করা হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

এশিয়ার সবচেয়ে বড় ঈদগাহ দিনাজপুরের গোর এ শহীদ ময়দানে একসাথে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন লাখো মুসল্লি। ৫২ গম্বুজের পুরো ঈদগাহ ময়দানের আয়তন ২২ একর। সকাল ৯ টায় শুরু হয় জামাত। ভোর ৫টা থেকে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। এতোবড় জামাতে এক সঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারার আনন্দ ছিল সবার চোখে-মুখে। মুসল্লিদের নিরাপত্তায় ৬শ অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্য মোতায়েন ছিল পুরো ময়দানজুড়ে।

এছাড়া বরগুনা পটুয়াখালী, পিরোজপুর ঝালকাঠি, রাজবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঈদের জামাত শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: