ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ডায়রিয়ার অন্যতম কারণ অস্বাস্থ্যকর খাবার ও দূষিত পানি

odhikarpatra | প্রকাশিত: ১০ মে ২০২২ ১০:২০

odhikarpatra
প্রকাশিত: ১০ মে ২০২২ ১০:২০

 

মাত্র কয়েক দিন আগেই পালিত হলো মুসলমান ধর্মাবলাম্বীদের  সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র  ঈদুল ফিতর। এক মাস সিয়াম সাধনার পর  আসে পবিত্র ঈদ। তবে এবার  প্রচন্ড গরমের  কারণে রোজা রাখতে অনেকেরই বেশ কষ্ট হয়েছে।  বিশেষ করে  গরমের কারণে  এ সময়টাতে দেশে ডায়রিয়া রোগেরও প্রাদুর্ভাব ঘটে। এ ক্ষেত্রে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। যেমন ঈদের আগ মুহূর্তে  বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে ছয় বছর বয়সী আরহামের পরিবারকে। আরহাম খুবই চঞ্চল। খাওয়া-দাওয়ার প্রতি তেমন আগ্রহ নেই। তবে একটু ভাজা-পোঁড়া হলে তার ভালো লাগে। আর রমজান মাসে  দেশের  অনেক বাসায়ই প্রতিদিন তৈরী হয় ইফতার। আবার বাইরে থেকে মাঝে মাঝে ইফতার নিয়ে আসেন আরহামের  বাবা। আর এই বাইরের ইফতারের দিকেই বেশি আগ্রহ আরহামের। ছেলে যেহেতু একটু খেতে চায়, তাই বাবা-মা’ও না করে না।

কিন্তু একদিন হঠাৎ করেই শরীর খারাপ করে তার। শুরু হয় পাতলা পায়খানা। শুরুতে স্যালাইন খাওয়ানো হলেও পায়খানা কমে না। পরে বাধ্য হয়েই ভর্তি করাতে হয় মিরপুরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে। সেখানে তিন দিন থাকার পর কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় আসে তারা।
দেশেও  গরমের মাত্রাও অনেক বেশি। ফলে প্রায় সবখানেই ডায়রিয়ার মাত্রাও বেড়ে গেছে। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ প্রায়ই সবাই আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়ায়। হাসপাতালগুলোতেও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা যেন কমছেই না। মূলত অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরীকৃত খাবার এবং দূষিত পানি ডায়রিয়ার অন্যতম কারন। বিশেষ করে পানির কারনে এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে ধারনা বিশেষজ্ঞদের।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাইদুর রহমান সোহাগ বলেন, এখন তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। গরমের বড়দের অবস্থায়ই যেখানে বেশি খারাপ সেখানে শিশু আর বৃদ্ধরা তো আরো বেশি নাজুক অবস্থায় আছে। তাই এসময় অবশ্যই খাবার এবং পানীয় গ্রহণ করতে হবে অত্যন্ত সাবধানে।
ডা. নাফিসা আবেদীন বলেন, বিভিন্ন কারনে ডায়রিয়া হতে পারে। তবে মূলত পরিপাকতন্ত্রে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবী সংক্রমনের কারনে ডায়রিয়া হয়। আর এসময় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যায় দেশে। এর কারন মূলত রোটা ভাইরাস বা নোরা ভাইরাস। এসময় আবার পায়খানার সাথে রক্ত যেতে পারে  এবং গায়ে প্রচন্ড জ্বর থাকতে পারে। এটা মূলত হয় ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারনে।
তিনি বলেন, এসময় অবশ্যই যথেষ্ট সচেতন থাকতে হবে। বিশেষ করে খাবার এবং পানীয় গ্রহণের বিষয়ে। যেহেতু প্রচন্ড গরম পড়ছে তাই বাইরের অপরিষ্কার এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরী খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়াও পানি পানের সময় সতর্ক থাকতে হবে। গরমে অবশ্যই পানি গ্রহণের পরিমান বাড়াতে হবে। এবং বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। দূষিত পানি শুধুমাত্র ডায়রিয়া নয় আরো অনেক রোগের কারন। বিশেষ করে পানি ফুঁটিয়ে অথবা ফিল্টার করে পান করতে হবে। বাইরে বিশেষ করে রাস্তায় তৈরী বিভিন্ন শরবত পান থেকে বিরত থাকতে হবে।
ডা. সোহাগ বলেন, এসময় যে ডায়রিয়া হচ্ছে তাকে মূলত সামার ডায়রিয়া বলে। আর তাই খাবার এবং পানীয় গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। অনেক কারনে ডায়রিয়া হতে পারে। আর তাই পানিকে জীবানুমক্ত করে পান করতে হবে।
তিনি বলেন, ডায়রিয়া হলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা যায় এবং রক্তে লবনের তারতম্য দেখা যায়। মূলত এই দুটিকে রোধ করাই হচ্ছে ডায়রিয়া রোগের মূল চিকিৎসা। এজন্য প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর অবশ্যই পরিমানমতো বয়স অনুযায়ী খাবার স্যালাইন পান করতে হবে। এসবের পাশাপাশি চিড়ার পানি, ডাবের পানি পান করানো যেতে পারে। এসময় স্বাভাবিক খাবারও গ্রহণ করতে হবে।

বাসস



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: