
অধিকারপত্র প্রতিবেদক : কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহারকে কেউ অপহরণ করেনি, বরং ঘটনাটি সাজানো। এই পর্যায়ে এসে পুলিশ এমনটাই মনে করছে। তাই তদন্তের স্বার্থে তাঁকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বলেছেন, ‘ফরহাদ মজহার বর্তমানে অসুস্থ। হাসপাতালে চিকিত্সা নিচ্ছেন। তিনি সুস্থ হওয়ার পর তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ’
এর আগে দুপুরে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে মাদকবিরোধী এক আলোচনাসভা শেষে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘ফরহাদ মজহার অপহরণ হয়েছিলেন—এমন কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত তদন্তে পাওয়া যায়নি। তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। ’
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ঘটনাটিকে ‘তামাশা’ বলে উল্লেখ তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আলামত দেখে ও তদন্তের অগ্রগতি দেখে মনে হচ্ছে ঘটনাটি সাজানো। তাঁর মতো একজন লোক কেন এমন ঘটনা সাজালেন সেটাই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ’
উদ্ধার হওয়ার পর ফরহাদ মজহার পুলিশের কাছে ১৬১ ও আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, তিনজন লোক তাঁকে অপহরণ করে এবং ঢাকা থেকে খুলনায় নিয়ে ছেড়ে দেয়। সেখানে অপহরণকারীরা তাঁকে বাসের টিকিট ধরিয়ে দিয়ে ঢাকায় ফিরে যাওয়ার জন্য বলে। তিনি ঢাকায় ফেরার সময় তাঁকে যশোরের অভয়নগর এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে যা যা করণীয় সবই করা হবে। ’
ফরহাদ মজহারের ঘটনায় এরই মধ্য তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অনেকের সঙ্গে কথা বলেছেন। গত বৃহস্পতিবার খুলনার হানিফ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার নাজমুস সাদাত সাদীর বক্তব্য রেকর্ড করেন আদালত ও পুলিশ। সাদী আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে জানান, সোমবার বিকেল ৪টার দিকে ফরহাদ মজহার বাস কাউন্টারে যান। রাত ৯টার হানিফ পরিবহনের এসি বাসে তিনি আবদুল গফুর নামে একটি সিট বুক করেন। এ সময় তিনি একা ছিলেন। টিকিট বুকিং দেওয়ার পর তিনি আশেপাশে রেস্টুরেন্ট আছে কি না জানতে চান। পরে তিনি কাউন্টার থেকে চলে যান। রাত ৯টার দিকে ফরহাদ মজহার কাউন্টারে আসেন এবং টিকিট নিয়ে এসি বাসে ওঠেন।
গত সোমবার ভোর ৫টা ৫ মিনিটে শ্যামলীর রিং রোডের বাসা থেকে বের হন ফরহাদ মজহার। এরপর সকাল ১০টার দিকে তাঁর স্ত্রী ফরিদা আখতার আদাবর থানাকে অবহিত করেন, তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে। এর পর থেকেই পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দারা মাঠে নামে। তারা রাতে তাঁকে উদ্ধার করতে সমর্থ হয়। সোমবার রাতেই তাঁর স্ত্রী ফরিদা আখতার থানায় একটি অহরণ মামলা করেন। প্রথমে মামলাটি তদন্ত করে আদাবর থানার পুলিশ। এক দিন পরই মামলাটি সেখান থেকে ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন ডিবির ইন্সপেক্টর মাহবুবুল হক।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: