ঢাকা | Saturday, 18th October 2025, ১৮th October ২০২৫
জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মিলে কাজ করার পরামর্শ

ডিসি সম্মেলনে ২৩ দফা নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর

shahidul Islam | প্রকাশিত: ২৬ July ২০১৭ ০৯:১৬

shahidul Islam
প্রকাশিত: ২৬ July ২০১৭ ০৯:১৬

অধিকারপত্র প্রতিবেদক : জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও বিভাগীয় কমিশনারদের তৃণমূল পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে যাতে বিরোধ বা দূরত্ব না থাকে, সেই চিন্তা থেকেই হয়তো তাঁদের এমন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় শুরু হয়েছে তিন দিনের এই সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এর উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা প্রশাসকদের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করাসহ মোট ২৩টি নির্দেশনা দিয়েছেন।

সম্মেলনের বিভিন্ন পর্যায়ে কয়েকজন ডিসি আকারে-ইঙ্গিতে স্থানীয় পর্যায়ে কিছু জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী নেতার কারণে উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত হওয়ার কথা উল্লেখ করেন। এর জবাবে ডিসিদের বলা হয়, জনপ্রতিনিধিদের বাদ দিয়ে তো আর উন্নয়নকাজ করা যাবে না। তাঁদের সঙ্গে মিলেমিশে আইনকানুনের মধ্যে থেকে কাজ করতে হবে।

সম্মেলনে জেলা প্রশাসকদের অধীনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা অব্যাহত রাখাসহ বেশ কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়। তাঁরা বলেছেন, ডিসিদের কাছে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ক্ষমতা না থাকলে নির্বাচনের সময় সংকট তৈরি হতে পারে।

এই প্রস্তাবের যুক্তি হিসেবে বলা হয়, ডিসিরা একটি জেলার আইনশৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক ‘মুখ্য সমন্বয়ক’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। শুধু পুলিশ আইন বা পুলিশ প্রবিধান নয়, ফৌজদারি কার্যবিধিতে জনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ম্যাজিস্ট্রেটদের। বেআইনি ছত্রভঙ্গ করা থেকে শুরু করে গণ-উপদ্রব দূর করার ব্যবস্থা নেওয়ার প্রধান দায়িত্ব তাঁদের। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে জেলায় সামরিক বাহিনী তলবের ক্ষমতাও ফৌজদারি কার্যবিধিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বের অংশ। সুতরাং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার ক্ষমতা না থাকলে জেলার সার্বিক সমন্বয়কাজে শূন্যতা সৃষ্টি হবে।

আগামী নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে সম্মেলনে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে ডিসিদের নেতৃত্বে জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাই ডিসিদের কাছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ক্ষমতা না থাকলে নির্বাচনের সময় সংকট দেখা দিতে পারে।

সভার সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বলেন, এটা বিচারাধীন বিষয়। দেখা যাক, আদালত কী রায় দেন।
মুক্ত আলোচনায় বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের অন্তত ৩০ জন অংশ নেন। তাঁদের কেউ কেউ জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সম্পর্ক এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গে আলোচনা করেন।

জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে ডিসিদের কাজ করার নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, আইন অনুযায়ী জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করতে হয়। এ বিষয়টিই হয়তো প্রধানমন্ত্রী আবার ডিসিদের মনে করিয়ে দিয়েছেন।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্প্রতি বরগুনার সদর উপজেলার ইউএনও গাজী তারিক সালমনের হেনস্তার ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: