
পাঠাও এ্যাপের মতো এ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা যুক্ত করার চেষ্টা চলেছে। আগামী বছরের জানুয়ারি মাসেই এই সেবা রাজধানী বাসীকে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে একটি প্রতিষ্ঠান। তবে অ্যাপে সিএনজি চালিত অটোরিকশা সেবা চালুর ব্যাপারে এখনো মালিকদের সায় মেলেনি। তা ছাড়া বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) চায়—বিদ্যমান নীতিমালাতেই চলুক সিএনজিচালিত অটোরিকশা।
জানুয়ারি মাসে অ্যাপের মাধ্যমে সেবা দেওয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগর অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, অ্যাপে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালাতে তাঁরাও চান। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। তবে তার আগে বৈধতা লাগবে। এখনই তা শুরু করা যাবে কি না, সেটা বলা যাচ্ছে না। তিনি চালকদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘ওনারা আন্দাজে ঘোষণা দেন, গাড়ি আছে তাঁদের? তাঁরা কার সঙ্গে, কীভাবে কথা বলে জানি না।’ তিনি আরও বলেন, সরকার রাইড শেয়ারিং নিয়ে যে নীতিমালা করছে, সেখানে সিএনজি চালিত অটোরিকশা অন্তর্ভুক্ত আছে কি না, তা দেখতে হবে। বিআরটিএর অনুমোদন লাগবে। উবার-পাঠাও জনপ্রিয় হওয়ায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদও অ্যাপে আসতে চায়। এ নিয়ে তারা একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনাও করেছে। ‘টপ আই আই’ নামের ওই প্রতিষ্ঠান ‘হ্যালো রাইড শেয়ারিং (হ্যালো সিএনজি)’ অ্যাপ চালুর উদ্যোগও নিয়েছে। টপ আই আইয়ের সমন্বয়ক এস এম জামাল বলেন, অ্যাপে সিএনজিচালিত অটোরিকশার পাশাপাশি মোটরসাইকেল ও গাড়ির সেবাও পাওয়া যাবে। তবে শুরুটা হবে সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়ে।এস এম জামাল বলেন, অ্যাপের মাধ্যমে পরিবহনসেবা চালু হওয়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চাহিদা কমেছে। তাই অটোরিকশাকে এই প্রক্রিয়ায় আনতে পারলে চালকেরাও যাত্রী পাবেন, ভাড়া নিয়ে খিটিমিটি থাকবে না। জামাল জানান, বিআরটিএর সঙ্গে তাঁরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। বিআরটিএ তাঁদের জানিয়েছে, যে নীতিমালা আছে, সে অনুযায়ী চালাতে। ভাড়ার বিষয়ে জামাল বলেন, মিটার–পদ্ধতিতে ভাড়ার যে তালিকা, অ্যাপেও সে অনুযায়ীই ভাড়া ঠিক হবে। অ্যাপটি বাংলায় হবে। টপ আই আই চালকদের কাছ থেকে ‘ট্রিপ’–প্রতি ৫ শতাংশ কমিশন নেবে। প্রতিষ্ঠানটি চালকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তদারকিও করবে।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ৫০০ চালককে প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তাঁদের পরিকল্পনা, জানুয়ারি মাসের শুরুতেই যেন অ্যাপে সিএনজি সেবা রাজধানী বাসী ভোগ করতে পারেন। সিএনজির মালিকপক্ষ রাজি কি না, তা জানতে চাইলে এস এম জামাল বলেন, মালিকপক্ষ প্রথমে সিএনজিচালিত ৫০টি অটোরিকশা দিতে চেয়েছে। তবে প্রত্যেক চালককে একটি করে স্মার্টফোন দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। জামাল বলেন,, মালিকপক্ষ এ প্রক্রিয়ায় আসতে চায় না। এর পেছনে কারণ, সে ক্ষেত্রে মালিকেরা নির্ধারিত জমার টাকার চেয়ে বেশি নিতে পারবেন না। মালিকপক্ষ না চাইলে কীভাবে এটা চালু হবে, সে প্রসঙ্গে বলেন, তাঁরা প্রথমে চালকদের উদ্বুদ্ধ করবেন। তিনি আশাবাদী চালকেরা রাজি হলে মালিক পক্ষও রাজি হবে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব সাখাওয়াত হোসেন দুলাল জানান, সবকিছু ডিজিটাল হচ্ছে, তাই তাঁরাও পিছিয়ে থাকতে চান না। চার মাস আগ থেকেই তাঁরা প্রশিক্ষণের কাজ শুরু করেছেন। বিআরটিএর পরিচালক শীতাংশু শেখর বিশ্বাস বলেন, বর্তমান নীতিমালা বজায় রেখে যদি তারা অ্যাপের মাধ্যমে যাত্রী পেতে চায়, আসতে পারে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: