ঢাকা | রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

চলছে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ ১১:০৬

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ ১১:০৬

আজ রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১৯৩টি কেন্দ্রের ১ হাজার ১২২টি রুমে ভোটগ্রহণ চলবে। এ সময় ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। রিটার্নিং অফিসার সুভাষ চন্দ্র সরকার উৎসবমুখর পরিবেশে অবাধ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে আশাবাদী। এজন্য সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এখন শুধুই অপেক্ষার পালা। এদিকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ভোট করতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

নির্বাচন অফিস ও দলীয় সূত্র জানায়, টানা ১৫ দিন ৭ মেয়র, সংরক্ষিত ৬৫ ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২১২ জনসহ মোট ২৮৪ জন প্রার্থী বিরামহীনভাবে প্রচারণা চালিয়েছেন। জনসংযোগ, পথসভা ও মাইকিংয়ে মুখর ছিল সমস্ত নগরী। শহরের আনাছে কানাছে প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে।

সাধারণ ভোটাররা জানিয়েছেন, এবারের নির্বাচনে আলোচিত তিন মেয়র প্রার্থী জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা(লাঙ্গল), আওয়ামী লীগের সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু (নৌকা) ও বিএনপির কাওসার জামান বাবলা (ধানের শীষ) আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। এবার দলীয় প্রতীকে প্রথম নির্বাচন হলেও ব্যক্তি ইমেজ প্রাধান্য পেয়েছে ভোটারদের কাছে সবচেয়ে বেশি। এদের মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সবচেয়ে এগিয়ে। আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন তিনিই। অন্যদিকে ব্যক্তি ইমেজ সংকটে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সরফুদ্দিন আহেমেদ ঝন্টু। এ জন্য সাধারণ ভোটারা তার খারাপ আচরণকেই দায়ী করছেন। তাদের নৌকা প্রতীক নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। ব্যক্তি ঝন্টু কিছুটা বিতর্কিত। তারা জানিয়েছেন, নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের গ্রহণযোগ্য অন্য কেউ প্রার্থী হলে জয়লাভ নিয়ে কোনো সংশয় ছিল না।

এদিকে গতকাল দুপুরে রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি এবং র্যাব প্রেস ব্রিফিং দেয়া হয়েছে। এর আগে সকালে রংপুর পুলিশ লাইন মাঠে নির্বাচনি সরঞ্জাম গ্রহণ এবং ভোট কেন্দ্রের সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি ,রিটার্নিং অফিসার, রংপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার । তারা বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। নির্বাচনে কাউকে প্রভাব বিস্তার ও কেন্দ্র দখলসহ কোনো ধরনের অরাজকতা করতে দেয়া হবে না। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট, ডগ স্কোয়াডসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছের্ র্যাব। ভোটকেন্দ্রগুলোর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সিটি করপোরেশন এলাকায় হেলিকপ্টার টহলও দেবে সংস্থাটি।

ডিআইজি বলেন, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় ২৪ জন পুলিশ ও আনসার ভিডিপি সদস্য থাকবেন। এর মধ্যে ১৪ জন সশস্ত্র অবস্থায় থাকবেন। এছাড়াও পাশাপাশি দুটি কেন্দ্রের জন্য থাকবে পুলিশ, বিজিবির্ যাবের সমন্বয়ে ভ্রামমাণ ইউনিট। প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও থাকবেন। তিনি জানান, জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটসহ সকল স্তরের কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক মাঠে থাকবেন। কোনো কেন্দ্রে কোনো ধরনের গোলযোগ হলে যাতে দুই মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে যাওয়া সম্ভব হয় সে জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কোনো বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবে না। ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে নিরাপদে যেতে পারেন আবার ভোট দিয়ে নিরাপদে ফিরে আসতে পারেন তার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ভোট দেয়া প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার। এ অধিকার থেকে যাতে কাউকেই বঞ্চিত করার অপচেষ্টা কেউ করতে না পারে সে জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে তিনি ঘোষণা দেন।

রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার সুভাষ চন্দ্র সরকার জানান, দেশে-বিদেশে রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন কেমন হয় তা দেখতে মানুষ অপেক্ষা করছে। তারা নির্বাচন নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু করতে যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। প্রভাবশালী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যেই হোক-কাউকেই এক চুল ছাড় দেয়া হবে না।

জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, তাদের অবস্থান ও কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে দেশে-বিদেশের শত শত টেলিভিশন ক্যামেরা আর সাংবাদিক। কেউ এমন কোনো কাজ করবেন না যেন বিতর্ক সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, তারা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। এসময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সততার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

অন্যদিকে,র্ যাবের পক্ষ থেকে দুপুরে নগরীতে মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়ে মহড়া দেয়া হয়। পরে নগরীর পায়রা চত্বরে প্রেস ব্রিফিং করের্ যাব-১৩ এর অধিনায়ক কমান্ডার আতিকুল সাহা বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে সব প্রস্ত্মতি নেয়া হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করের্ যাবের টহল টিম কাজ করবে। এছাড়াও পুরোনগরীতে টহল দেবের্ যাবের টিম। তিনি জানান, যে কোনো অরাজক পরিস্থিতি ঠেকাতের্ যাবের হেলিকপ্টার ও বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট এবং ডগ স্কোয়াড কাজ করবে। ভোটাররা যাতে নিরাপদে ভোট দিতে পারেন সে জন্য সব প্রস্ত্মতি নেয়া হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: