
এক সময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং সাবেক এক শীর্ষ মন্ত্রী কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রোকে মাদকাসক্ত বলে সরাসরি অভিযোগ এনেছেন। প্রেসিডেন্ট পেত্রো এর আগেও এ ধরনের অভিযোগ বারবার অস্বীকার করেছেন।
কলম্বিয়ার বোগোতা থেকে এএফপি জানায়, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলভারো লেইভা এক খোলা চিঠিতে বলেন, ২০২৩ সালে প্যারিস সফরের সময় পেত্রো দুই দিন নিখোঁজ ছিলেন।
৮২ বছর বয়সী লেইভা লিখেছেন, ‘প্যারিসেই আমি নিশ্চিত হই যে আপনি মাদকাসক্তির সমস্যায় ভুগছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সময়গুলো আমার জন্য, একজন ব্যক্তি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে, অত্যন্ত বিব্রতকর ছিল।’ তবে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।
প্রেসিডেন্ট পেত্রো ‘এক্স’-এ (পূর্বে টুইটার) প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘আমি নিছকই অপবাদের শিকার হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ফ্রান্সে রাষ্ট্রীয় সফরের সময় একজন রাষ্ট্রপ্রধান সবসময়ই ফরাসি সিক্রেট সার্ভিসের সরাসরি ও স্থায়ী নিরাপত্তায় থাকেন।’
পেত্রো জানান, ওই দুই দিন তিনি প্যারিসে তাঁর মেয়ে ও নাতনিদের সঙ্গে ছিলেন এবং বলেন, ‘আমি প্রেমে আসক্ত।’
এই ঘটনায় বিরোধী আইনপ্রণেতারা প্রেসিডেন্টের ড্রাগ ও মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা দাবি করেছেন, যেন বোঝা যায় তিনি ‘শাসনের উপযুক্ত’ কিনা।
রাজনৈতিকভাবে রক্ষণশীল হলেও, লেইভা বামপন্থী প্রেসিডেন্ট পেত্রোর ঘনিষ্ঠ ছিলেন এক সময়।
তিনি কলম্বিয়ার বিভিন্ন সরকারের অধীনে শান্তি আলোচক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং দু’বার প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও নির্বাচিত হননি।
২০২৪ সালের শুরুতে পাসপোর্ট ছাপার টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগে কলম্বিয়ার মহা-পরিদর্শক লেইভাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। পেত্রো এ সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।
এরপর থেকেই লেইভা সময় সুযোগে ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন যে প্রেসিডেন্ট পেত্রোর মাদক সমস্যা থাকতে পারে।
তবে প্রেসিডেন্ট পেত্রো বুধবার ফের সে অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন।
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘আমি কি সারাক্ষণ আমার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বসে থাকি? প্যারিসে পার্ক, জাদুঘর, বইয়ের দোকান—চিঠির লেখকের চেয়ে অনেক বেশি আকর্ষণীয় জিনিস আছে। প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটানো কি তার চেয়ে মূল্যবান নয়?’
মাদক নিয়ে প্রেসিডেন্ট পেত্রোর অবস্থান আগে থেকেই রক্ষণশীল মহলে বিতর্ক তৈরি করেছে।
তিনি প্রায়ই অনুষ্ঠানে দেরিতে উপস্থিত হওয়ায়, তার ওপর মাদকাসক্তির অভিযোগ ওঠে। একবার নির্বাচনী প্রচারের সময় মাতাল অবস্থায় অনুষ্ঠানে আসার জন্য তিনি ক্ষমা চেয়েছিলেন।
তিনি বারবার কোকেনের ক্ষতিকর প্রভাব খাটো করে দেখিয়েছেন, এমনকি এর বৈধতার পক্ষে সওয়াল করে বলেছেন, হুইস্কিই ‘বেশি সংখ্যক’ মানুষ মেরে ফেলে।
পেত্রোর শাসনামলে কলম্বিয়ায় কোকেন উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে এবং তা দমনে প্রচেষ্টা হয়েছে শিথিল।
সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, তার একমাত্র আসক্তি হলো কফি- কলম্বিয়ার আরেক কৃষিপণ্য।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: