
শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে নারীকে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করে অতপর ঐ নারীর নগ্ন ছবি তুলে তাকে দেহ ব্যবসার জন্য চাপ প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে।
শ্রীনগর সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য স্বপনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নারীর বাবা বাদী হয়ে ইউপি সদস্য স্বপনের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
জানা যায়, গত ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উপজেলার ঝাপুটিয়া গ্রামের ফারুক দেওয়ানের সাথে ভুক্তভোগী নারীর বিয়ে হয়।
তিন বছরের মধ্য স্বামীর সাথে কোন বনিবনা না হওয়ায় এবং স্বামী নির্যাতন করায় তার বিরুদ্ধে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন ভুক্তভোগী। শ্রীনগর থানায় মামলার নোটিশ নিতে এসে পুলিশের মাধ্যমে পরিচয় হয় স্বপন মেম্বারের সাথে। ভুক্তভোগী নারীকে মামলা না চালিয়ে মীমাংসার জন্য প্রস্তাব দেয় স্বপন মেম্বার। এরপর তার দোকানে বসে বিষয়টি দেড় লক্ষ টাকায় মীমাংসা করে দেন। ঐ সময় টাকাসহ ভুক্তভোগী নারীকে স্বপন মেম্বার তার ভাড়াটিয়া বাড়ীর দ্বিতীয় তলায় বন্ধুর বউ সাজিয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে দেন। পরদিন মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভুক্তভোগীকে নিয়ে স্বপন আদালতে যায় এবং মামলা তুলে নেয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে একাধিক কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। পরে বাসায় এসে স্বপন জরুরী প্রয়োজনে দুইদিনের জন্য ধার চেয়ে দেড়লক্ষ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে।
এরপর স্ত্রী দাবি করে তার সাথে ঘর সংসার করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন।
বিষয়টি বুঝতে পেরে ভুক্তভোগী কৌশলে বাসা ছেড়ে লৌহজং এলাকায় চলে যায়। সেখানে খোঁজ নিয়ে ১০দিন পর ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বপন মেম্বার পুনরায় ঐ নারীকে তার বাবার বাড়ী ষোলঘর এলাকায় এনে বাসা ভাড়া করে স্বামী হিসেবে সংসার শুরু করে। এসময় তিনি ৩ মাসের গর্ভবর্তী হলে স্বপন মেম্বার ঔষধ প্রয়োগ করে গর্ভের সন্তান নষ্ট করে দেয়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী নারীকে জোড়পূর্বক উলঙ্গ করে তার নগ্ন ছবি তুলে তাকে দেহ ব্যবসা করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। সে রাজী না হওয়ায় তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে এবং স্বপন তার নিজ ভাড়াটিয়া বাসায় আটক করে রাখে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর বাবা থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করেন।
এব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য স্বপনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে আমার বিয়ে করা বউ কোর্ট কাবিন আছে। সে আমার বাড়িতে মারধর করেছে। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আমার প্রথম স্ত্রীকে বাদী করে থানায় অভিযোগ করেছি।
শ্রীনগর সদর ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, ইউপি সদস্য স্বপনের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। সে ঠিকমত পরিষদে আসে না। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিলে আমি খুশি হব।
অভিযোগ তদন্তকারী অফিসার শ্রীনগর থানার এস আই নাজমুল বলেন, এব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: