odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Tuesday, 18th November 2025, ১৮th November ২০২৫

ব্রিটেনে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য নতুন আইন পরিবর্তন

odhikarpatra | প্রকাশিত: ১৭ November ২০২৫ ২২:৪১

odhikarpatra
প্রকাশিত: ১৭ November ২০২৫ ২২:৪১

লন্ডন থেকে প্রতিবেদক

যুক্তরাজ্যে নতুন এক ইতিহাসিক পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন গৃহসচিব শাবানা মাহমুদ — আশ্রয়প্রার্থীদের (রিফিউজি) জন্য আসিলাম বা শরণ নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে লেবার সরকার। এগুলো সরকারের বক্তব্য অনুযায়ী “নিয়ন্ত্রন পুনঃস্থাপন” এবং “অবৈধ অভিবাসন প্রতিহত করা” উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে।


প্রধান পরিবর্তনের শিরোনামসমূহ

  1. অস্থায়ী রিফিউজি স্ট্যাটাস এবং পুনরাবৃত্তি মূল্যায়ন

    • নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, যারা আশ্রয় পাবেন তারা স্থায়ী স্বীকৃতি দেবে না। তাদের রিফিউজি অবস্থা প্রায় প্রতিমাসে (২.৫ বছর) পর পর রিভিউ করা হবে
    • যদি তাদের জন্মভূমি “পুনরায় নিরাপদ” হিসেবে গণ্য করা হয়, তাহলে তাদের দেশ ফিরে যাওয়া হতে পারে।
  2. স্থায়ী বসবাসে অপেক্ষার সময় বাড়ছে

    • অবৈধভাবে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের ক্ষেত্রে স্থায়ী বসবাস (permanent settlement) করার জন্য ২০ বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে।
    • বিশেষ ক্ষেত্রে, দক্ষতা বা পড়াশোনার ভিত্তিতে যারা অবৈধভাবে এসেছে, তারা কিছু শর্ত পূরণ করলে অপেক্ষার সময় কমাতে পারবে।
  3. সহায়তা এখন অপশনাল (Discretionary)

    • সরকার বলেছে যে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য বাড়ি এবং অর্থ সহায়তা এখন বাধ্যতামূলক নাও থাকতে পারে; অর্থাৎ, “দায়িত্ব” থেকে “বিকল্প” পরিণত করা হবে।
    • যারা কাজ করার অধিকার রয়েছে কিন্তু কাজ করে না বা সম্পদ রয়েছে, তাদের সহায়তা সীমিত করা যেতে পারে।
  4. নতুন “সেফ রুট” চালু করা হবে

    • যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ যেমন: সুদান, এরিত্রিয়া ইত্যাদি থেকে আসার জন্য নির্ধারিত আইনগত পথ তৈরি করা হবে।
    • কমিউনিটি স্পনসরশিপ মডেল: স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা কমিউনিটি গোষ্ঠী আশ্রয়প্রার্থীদের UK-তে আসার পর তাদের সহায়তা দেবে।
    • দক্ষ বা শিক্ষা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের জন্য কাজ বা স্টাডি ভেতর থেকে আসার পথও থাকবে।
  5. নিরাপত্তা ও পারিবারিক অধিকার সংশোধন

    • নতুন আইন প্রস্তাবনায় আদালতে “পরিবারিক জীবনের অধিকার” (ECHR Article 8) ব্যাখ্যা কঠোর করতে বলা হচ্ছে, যাতে “সাধারণ নিরাপত্তা”কে প্রাধান্য দেওয়া যায়।
    • আশ্রয়প্রার্থীদের আপিল (appeals) সীমিত করার পরিকল্পনাও রয়েছে।

 গৃহসচিব শাবানা মাহমুদ কি বলছেন?

  • মাহমুদ বলেন, “এই পরিবর্তনগুলো প্রিয়জনদের জন্যও করা হয়েছে” — কারণ তারা বিশ্বাস করেন যে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাওয়া দেশকে “ভাগাভাগি” করতে পারে।
  • তিনি আরও বলেছেন, নতুন রু‎টগুলো আসলে “নৈতিক দায়িত্ব” এবং সত্যিকারের শরণার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ পথ তৈরি করবে।
  • মাহমুদ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে অনিয়ন্ত্রিত অভিবাসন “অন্ধকার শক্তিকে উসকে দিতে পারে” যারা সমাজে বিদ্বেষ ছড়াতে চায়।

 সমালোচনা ও উদ্বেগ

  • লেবার দলের কিছু এমপিরও মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে — বিশেষ করে বড় পরিবার বা ছোট বাচ্চাসহ আশ্রয়প্রার্থীর পুনর্বাসনের পরিকল্পনায়।
  • শরণার্থী ও অধিকার সংস্থাগুলো বলছে, নতুন নীতিগুলো “স্টেবিলিটি কমিয়ে দেবে” এবং পরিবার বিভাজন বাড়াবে।
  • বিশেষ করে শিশুমতো ছাত্রদের ক্ষেত্রে যে “স্থায়ী লিগ্যাল স্ট্যাটাস নেই” — তাদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে পড়ে যেতে পারে।

মূল্যায়ন

এই নতুন প্রস্তাবিত রূপান্তর ব্রিটেনে আশ্রয় নীতির ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে দেখা দিচ্ছে। একদিকে এটি অভিবাসন নিয়ন্ত্রণকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্য বহন করে, অন্যদিকে এটি সামাজিক ও মানবিক প্রশ্নও অনেক গভীরে তুলেছে — বিশেষত শরণার্থীদের অধিকার, বৈধতা এবং দীর্ঘমেয়াদী ভবিষ্যৎ নিয়ে।

আদালত, কমিউনিটি গোষ্ঠী এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতিক্রিয়া আগামী দিনের আইনগত ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: