odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Monday, 24th November 2025, ২৪th November ২০২৫

ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর চিফ অব স্টাফ নিহত—‘লেবাননে নতুন যুদ্ধের সিগন্যাল’ বলছে বিশ্লেষকরা

odhikarpatra | প্রকাশিত: ২৪ November ২০২৫ ১৯:০৯

odhikarpatra
প্রকাশিত: ২৪ November ২০২৫ ১৯:০৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, অধিকার পত্র ডটকম

লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চল হারেত হরাইক এলাকায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর সর্বোচ্চ র‌্যাঙ্কধারী সামরিক কর্মকর্তা হায়থাম আলি তাবাতাবাই (সাইয়্যেদ আবু আলি নামে পরিচিত) নিহত হয়েছেন। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত২৮ জন আহত হয়েছেন।

গত বছরের যুক্তরাষ্ট্র-মধ্যস্থ যুদ্ধবিরতির পর এটি বৈরুতে প্রথম ‘বিনা সতর্কবার্তায়’ পরিচালিত হামলা, যা ইতোমধ্যেই লেবানন–ইসরায়েল সীমান্ত উত্তেজনাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।


কে ছিলেন হায়থাম আলি তাবাতাবাই?

তাবাতাবাই ছিলেন হিজবুল্লাহর চিফ অব স্টাফ—সংগঠনের সামরিক শাখার শীর্ষ কমান্ডার।
তার সম্পর্কে যা জানা গেছে—

  • জন্ম: ১৯৬৮, বৈরুতের বাশুরা এলাকায়
  • ১৯৮০ দশকে হিজবুল্লাহতে যোগ
  • সংগঠনের প্রতিষ্ঠালগ্ন ১৯৮২ সাল থেকেই সক্রিয় সদস্য
  • দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি দখলদারিত্ববিরোধী বহু অভিযানে অংশগ্রহণ
  • ১৯৯৬–২০০০: নাবাতিয়াহ ফিল্ড কমান্ডার
  • ২০০০–২০০৮: খিয়াম অক্ষের কমান্ডার
  • ২০০৬ সালের লেবানন–ইসরায়েল যুদ্ধ—মাঠ কমান্ডে নেতৃত্ব
  • হিজবুল্লাহর অভিজাত ইউনিট রাদওয়ান ফোর্স গঠনে সরাসরি সম্পৃক্ত

ইসরায়েলি সূত্র বলছে, তিনি সিরিয়া ও ইয়েমেনেও রাদওয়ান ফোর্স পরিচালনা করেছেন এবং গত বছরের যুদ্ধে নিহত আলি কারাকির স্থলাভিষিক্ত হয়ে হিজবুল্লাহর দক্ষিণ ফ্রন্টের কমান্ডার হন।

গত বছরের যুদ্ধ শেষে, যখন হিজবুল্লাহর বেশিরভাগ শীর্ষ সামরিক নেতৃত্ব ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়—তখনই তাবাতাবাইকে সংগঠনের চিফ অব স্টাফ করা হয়।


হিজবুল্লাহ কী বলছে?

হিজবুল্লাহ তাবাতাবাইয়ের মৃত্যু নিশ্চিত করে তাকে “মহান শহীদ জিহাদী কমান্ডার” বলে আখ্যায়িত করেছে। সংগঠনটির রাজনৈতিক কাউন্সিলের উপপ্রধান মাহমুদ কওমাতি জানান—

“ইসরায়েল আবারও যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সবুজ সংকেতেই এই হামলা।”

সংগঠনটি তাবাতাবাইয়ের ময়দানি অভিযানের একটি ভিডিওসংকলনও প্রকাশ করেছে।
এ হামলায় নিহত আরও চার সদস্যের নামও প্রকাশ করা হয়েছে।


লেবানন সরকারের অবস্থান

মাত্র দুই দিন আগে লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু হামলার পর তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

দক্ষিণ লেবাননের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করছেন যে সরকার বারবার ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না কিংবা ধ্বংস হওয়া ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণেও ব্যর্থ।


ইসরায়েলের দাবি কী?

ইসরায়েল বলছে—

“হিজবুল্লাহর যুদ্ধক্ষমতা পুনর্গঠনের চেষ্টা রুখতেই এই টার্গেটেড স্ট্রাইক।”

তাদের মতে, তাবাতাবাই নানান ইউনিট পুনর্গঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য তা হুমকি হয়ে উঠেছে।


যুক্তরাষ্ট্র আগে থেকে জানতো কি?

মার্কিন সংবাদমাধ্যম Axios জানিয়েছে—যুক্তরাষ্ট্র হামলার আগে ‘বড় ধরনের উত্তেজনা’ হতে পারে বলে জানতো, তবে এই স্ট্রাইকের নির্দিষ্ট তথ্য ইসরায়েল আগে দেয়নি। স্ট্রাইকের পর সরাসরি ওয়াশিংটনকে অবহিত করা হয়।


এখন কী হতে পারে?

হিজবুল্লাহ জানিয়েছে—

“এটি লাল দাগ অতিক্রম করার সামিল। প্রতিক্রিয়া জানানো হবে কি না—নেতৃত্ব পৃথকভাবে বিবেচনা করছে।”

মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকদের মূল্যায়ন—
তাবাতাবাইয়ের হত্যার মাধ্যমে ইসরায়েল লেবাননে নতুন সংঘর্ষের দরজা খুলে যাবে 

আল জাজিরা 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: