[অধিকার পত্র ডটকম] বিশ্লেষণ: অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর (IDF) শুরু করা 'বৃহৎ সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান' কেবল স্থানীয় উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয়নি, বরং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের গতিপথ নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে।
কেন এই অভিযান এখন?
১. হামাসের প্রভাব: গাজায় দীর্ঘ যুদ্ধের কারণে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দলগুলোর প্রভাব পশ্চিম তীরে বাড়াতে পারে এমন আশঙ্কা করছে ইসরায়েল। বিশেষ করে জেনিন ও নাবলুসে যোদ্ধারা নতুন করে সংগঠিত হচ্ছিল বলে ইসরায়েলি গোয়েন্দাদের দাবি।
২. 'সন্ত্রাসী অবকাঠামো' ধ্বংস: ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ভাষ্য অনুযায়ী, তাদের প্রধান উদ্দেশ্য হলো ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সামরিক অবকাঠামো, যেমন—অস্ত্র তৈরির কারখানা, গোপন সুড়ঙ্গপথ এবং কমান্ড সেন্টারগুলো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা।
৩. রাজনৈতিক চাপ: ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক মহল থেকেও সামরিক বাহিনীর ওপর চাপ রয়েছে, যাতে তারা পশ্চিম তীরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়। এই অভিযান সেই চাপের বহিঃপ্রকাশ হতে পারে।
ফিলিস্তিনি ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
* ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (PA): এই অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়ে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ একে 'নগ্ন আগ্রাসন' আখ্যা দিয়েছে। তারা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
* আরব রাষ্ট্রসমূহ: জর্ডান, মিশর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো আরব রাষ্ট্রগুলো গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং অবিলম্বে সামরিক অভিযান বন্ধের দাবি জানিয়েছে।
* জাতিসংঘ ও পশ্চিমা দেশ: জাতিসংঘ মহাসচিবের কার্যালয় উভয় পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে উত্তেজনা হ্রাসের ওপর জোর দিলেও ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেনি।
আঞ্চলিক পরিণতি
এই অভিযান গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়াকে আরও দুর্বল করতে পারে। হিজবুল্লাহ এবং অন্যান্য আঞ্চলিক শক্তিগুলো এই পরিস্থিতিকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান আরও দৃঢ় করার সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। সবমিলিয়ে, পশ্চিম তীরের এই নতুন সামরিক পদক্ষেপ পুরো মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন ও জটিল অস্থিরতার জন্ম দিতে পারে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: