odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Thursday, 4th December 2025, ৪th December ২০২৫

লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে যুদ্ধের চাপা উত্তেজনা: যুদ্ধবিরতি কেবলই নামমাত্র?

odhikarpatra | প্রকাশিত: ২৯ November ২০২৫ ২২:১০

odhikarpatra
প্রকাশিত: ২৯ November ২০২৫ ২২:১০

অধিকার পত্র ডটকম] আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েল এবং লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে গত বছরের নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, সীমান্ত অঞ্চলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। সম্প্রতি হিজবুল্লাহর শীর্ষ সামরিক কমান্ডার হাইথাম আলী তাবাতাবাই বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়ার পর প্রতিশোধের হুঙ্কার দিয়েছে হিজবুল্লাহ। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই অঞ্চলে আবারও পূর্ণাঙ্গ সংঘাত শুরু হওয়ার আশঙ্কা তীব্র হচ্ছে।

 যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ও হতাহতের সংখ্যা
জাতিসংঘ এবং লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উভয়ের তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর ২০২৪-এর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে অন্তত ১২৭ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। হিজবুল্লাহর ঘাঁটির পাশাপাশি বেসামরিক বাড়িঘর, গাড়ি এবং ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরেও হামলা হয়েছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েল অভিযোগ করেছে, হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে দক্ষিণাঞ্চলে তাদের সামরিক সক্ষমতা পুনর্গঠন করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

গুরুত্বপূর্ণ সাম্প্রতিক ঘটনা
* শীর্ষ কমান্ডারের হত্যা: গত রোববার (২৩ নভেম্বর, ২০২৫) বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় হিজবুল্লাহর উচ্চপদস্থ সামরিক কমান্ডার হাইথাম আলী তাবাতাবাই নিহত হন। যুদ্ধবিরতির পর থেকে তিনি ছিলেন ইসরায়েলি হামলায় নিহত সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ হিজবুল্লাহ নেতা।
* হিজবুল্লাহর হুমকি: হিজবুল্লাহ নেতা নাঈম কাসেম এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন, যদিও প্রতিশোধের সময় তিনি নির্দিষ্ট করে বলেননি। তিনি বলেছেন, হিজবুল্লাহ যেকোনো বৃহৎ আক্রমণের মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত।


ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে হামলা: নভেম্বরে সিডনের কাছে আইন এল-হিলওয়াহ ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ কমপক্ষে ১৩ জন নিহত হয়, যা উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে।


সীমান্তে দেওয়াল নির্মাণ: জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েল লেবাননের ভূখণ্ডে 'ব্লু লাইন' (জাতিসংঘ-নির্ধারিত সীমান্ত) এর কাছে বেআইনিভাবে কংক্রিটের দেওয়াল নির্মাণ করেছে, যা লেবাননের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করছে।

 লেবানিজ সেনাবাহিনীর ভূমিকা
যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে লেবাননের সেনাবাহিনী (LAF) সীমান্তে তাদের উপস্থিতি বাড়িয়েছে এবং লিটানি নদীর কাছে চোরাচালানের জন্য ব্যবহৃত ১১টি ক্রসিং পয়েন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। তারা হিজবুল্লাহর ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলো সাংবাদিকদের প্রদর্শন করেছে, যা প্রমাণ করে যে তারা নিরস্ত্রীকরণের জন্য কাজ করছে। তবে ইসরায়েল দাবি করেছে, লেবানিজ সেনাবাহিনীর এই প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয় এবং হিজবুল্লাহ গোপনে কার্যক্রম চালাচ্ছে।

ভবিষ্যতের আশঙ্কা
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সতর্ক করে বলেছেন, যতক্ষণ না তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে, ততক্ষণ লেবাননে 'কোনো শান্তি থাকবে না'। লেবাননের ভেতরে এই ক্রমবর্ধমান আক্রমণ এবং হিজবুল্লাহর প্রতিশোধের হুমকি পুরো অঞ্চলকে আরও একটি বৃহত্তর সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষত জাতিসংঘ, উভয় পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: