odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Thursday, 4th December 2025, ৪th December ২০২৫

পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাতিল দাবি, নতুন ‘সম্প্রীতি চুক্তি’ করার আহ্বান—নাগরিক সভায় বিশিষ্টজনদের মতামত

odhikarpatra | প্রকাশিত: ২ December ২০২৫ ২০:২২

odhikarpatra
প্রকাশিত: ২ December ২০২৫ ২০:২২

বিস্তারিত সংবাদ (অধিকার পত্র ডটকম স্ট্যান্ডার্ড):

বিশেষ প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম

পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাতিলের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ–এর উদ্যোগে এক নাগরিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মো. মোস্তফা আল ইহযায–এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ মাসুদ

সভায় প্রধান আলোচনা উপস্থাপন করেন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমান আযমি। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন রাওয়ার চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) আব্দুল হক, অধ্যাপক ড. আবু মূসা মো. আরিফ বিল্লাহ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) নাসিমুল গণী, সাবেক রাষ্ট্রদূত সাকিব আলী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এইচ আর এম রোকন উদ্দিন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান, এডভোকেট, সাংবাদিক ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।


১৯৯৭ সালের শান্তি চুক্তিকে "কালো চুক্তি" বলে দাবি

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক লতিফ মাসুদ বলেন—
“১৯৯৭ সালের শান্তি চুক্তি ছিল সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী; এটি একপাক্ষিক ও বৈষম্যমূলক।”

তিনি দাবি করেন, চুক্তির ৭২টি ধারার বহু অংশ সংবিধানবিরোধী; বিশেষ করে ভূমি ব্যবস্থাপনা, প্রশাসনিক কর্তৃত্ব, নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার সম্পর্কিত ধারাগুলো রাষ্ট্রের অখণ্ডতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, চুক্তি স্বাক্ষরের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মতামত নেওয়া হয়নি, যা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলেছে।


“পার্বত্য চট্টগ্রামে ৪টি নতুন পদাতিক ব্রিগেড স্থাপন জরুরি” — আমান আযমি

প্রধান আলোচক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমান আযমি বলেন—

“চুক্তির ফলে সেনা ক্যাম্প গুটিয়ে নেওয়া হয়েছিল ভারতের স্বার্থে। উগ্রপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর দৌরাত্ম্য বাড়াতে এটি ভূমিকা রেখেছে।”

তিনি প্রস্তাব করেন, দেশের অখণ্ডতা বজায় রাখতে এবং উগ্র সশস্ত্র গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড দমন করতে পাহাড়ে অতিরিক্ত ৪টি পদাতিক ব্রিগেড স্থাপন জরুরি।


“চুক্তির আগে ১টি সশস্ত্র দল, এখন ৬টি”— কর্নেল (অব.) আব্দুল হক

রাওয়ার চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) আব্দুল হক বলেন—

  • চুক্তির আগে একটিমাত্র সশস্ত্র সংগঠন ছিল;
  • এখন তা বেড়ে ৫-৬টিতে পরিণত হয়েছে
  • পাহাড়ে সশস্ত্র সদস্যের সংখ্যা ৮০–৯০ হাজার,
  • আর অবৈধ অস্ত্রের মজুদ লক্ষাধিক

তিনি দাবি করেন, চুক্তি অনুযায়ী অস্ত্র জমা দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো জেএসএস সম্পূর্ণ অস্ত্র জমা দেয়নি, বরং আরও আধুনিক অস্ত্র যোগ করেছে।


"নতুন সম্প্রীতি চুক্তির সময় এসেছে" — সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ

সভায় প্রধান সমন্বয়ক মোস্তফা আল ইহযায বলেন—

“শান্তি চুক্তি নামক অবৈধ কালো চুক্তি বাতিল করে বাঙালি ও ১৩টি জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদি ‘সম্প্রীতি চুক্তি’ করতে হবে।”

তিনি পাহাড়ে স্থায়ী শান্তির জন্য তিনটি স্তম্ভের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন—
১) নিরাপত্তা
২) সংবিধান
৩) সমঅধিকার

তাঁর মতে, এই তিনটি ভিত্তি শক্তিশালী করতে পারলেই পার্বত্য চট্টগ্রামকে শান্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ অঞ্চলে পরিণত করা সম্ভব।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: