বিশেষ প্রতিনিধি, অধিকারপত্র ডটকম
ঢাকা, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫: বন্যপ্রাণী উদ্ধার, পরিচর্যা ও প্রকৃতিতে পুনর্বাসন কার্যক্রমে দেশের তরুণ প্রজন্ম যে অসাধারণ ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে, তাকে “দেশের জন্য অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক” বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
আজ শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বন ভবনে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, বন্যপ্রাণী নিরাপত্তা, আবাসস্থল রক্ষা এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বিগত কয়েক বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের আন্তরিকতা এই খাতকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
তিনি তরুণদের উদ্দেশে বলেন,
“বন্যপ্রাণী রক্ষায় একীভূত কণ্ঠস্বর অত্যন্ত প্রয়োজন। যারা বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস করে জনসমর্থন নিতে চায়, তাদের প্রতিহত করতে সচেতনতা, তথ্য ও মানবিক মূল্যবোধ ছড়িয়ে দিতে হবে।”
মানুষ ও প্রকৃতির সহাবস্থানের নৈতিকতার কথা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ জীবজগতের প্রতি সহমর্মিতার শিক্ষা দেয়। অসহায় মানুষ ও প্রাণীর পাশে দাঁড়ানোই প্রকৃত মানবিকতা।
সভায় জানানো হয়, আগামী বছর দেশের ৬৪ জেলায় ৬৪ জন বন্যপ্রাণী কর্মীকে বিশেষ স্বীকৃতি দেওয়া হবে, যা তরুণদের আরও উৎসাহিত করবে এবং প্রতিটি জেলায় একজন করে প্রতিনিধিত্বশীল বন্যপ্রাণী সংরক্ষণকর্মী সামনে আসবেন।
এছাড়া বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ও দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম শক্তিশালী করতে নতুন ইউনিট গঠনের অনুমোদন এবং আধুনিক সরঞ্জাম–পরিবহনসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির মহাপরিচালক ড. মো. ছগীর আহমেদ, জীববৈচিত্র্য বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের প্রতিষ্ঠাতা ডীন ড. মো. জালাল উদ্দিন সরদার এবং বিবিসিএফ প্রধান উপদেষ্টা ড. মোল্যা রেজাউল করিম।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এর আগে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘরে ‘বাংলাদেশ এনার্জি কনফারেন্স ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে অতিথি হিসেবে অংশ নেন এবং সরকারি ভবনে কার্যকর রুফটপ সোলার স্থাপন, পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন এবং স্বচ্ছ সিদ্ধান্তের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: