বিশেষ প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের তারাপুর কবরস্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত অংশে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রোববার ভোরে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, তাদের পরিবার এবং এলাকাবাসী।
ফজরের নামাজের সময় মসজিদে আসা মুসুল্লিরা প্রথম আগুন দেখে দ্রুত মাইকিং করে এলাকাবাসীকে ডাকেন। হেফজখানার শিক্ষার্থীরা ও স্থানীয়রা মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও পেট্রলের গন্ধে নিশ্চিত হন—এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত হামলা।
স্থানীয়দের বক্তব্য
তারাপুর জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন ও কবরস্থানের কেয়ারটেকার শহিদুল ইসলাম বলেন—
“কবরস্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, আশপাশেও আগুন লাগার মতো কিছু নেই। এটা স্পষ্টভাবে পরিকল্পিত নাশকতা।”
১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত তিন একর জায়গার এই কবরস্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত দুই শতাংশ জায়গায় পাঁচজন মুক্তিযোদ্ধার কবর রয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষোভ
বাহাদুরপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. সমশের আলী বলেন—
“স্বাধীন দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের কবর পর্যন্ত নিরাপদ নয়—এটা খুবই লজ্জাজনক।”
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সদস্য সচিব ও সাবেক অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম খান জাহাঙ্গীর বলেন—
“এ ধরনের ঘটনার বিচার না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্তিত্বই ঝুঁকির মুখে পড়বে।”
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিফাতুল হক বলেন—
“প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে আগুন ইচ্ছাকৃতভাবে লাগানো হয়েছে। তদন্ত চলছে, পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
বাহাদুরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সজীব হোসেনও ঘটনাটিকে “অত্যন্ত দুঃখজনক” আখ্যা দিয়ে দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেছেন।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: