অধিকার পত্র ডটকম
সম্পূর্ণ প্রতিবেদন
গাজা, ফিলিস্তিন: গাজা সিটিতে চালানো এক বিমান হামলায় হামাসের এক শীর্ষ কমান্ডারের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে হামলার পর পরই এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছিল, তারা হামাসের এক 'গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে' লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
আল জাজিরা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমসূত্রে জানা যায়, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ (রবিবার) এক ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় হামাসের শীর্ষস্থানীয় সামরিক কমান্ডার রাদ সাদ (Raad Saad) নিহত হয়েছেন।
হামাস নেতার পরিচয় ও হামলার স্থান
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলোর রিপোর্টে প্রথমে বলা হয়েছিল, রাদ্ সাদ ছিলেন হামাসের সর্বশেষ সামরিক প্রধান ইজ্জ আল-দিন আল-হাদ্দাদের পর দ্বিতীয়-গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। গাজা সিটির পশ্চিমাংশে নাবুলসি স্কোয়ারের কাছে তার গাড়ি লক্ষ্য করে এই ড্রোন হামলা চালানো হয়।
হামলায় রাদ্ সাদ সহ মোট চারজন নিহত হন এবং অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। তবে আল জাজিরা আরবি-এর রিপোর্ট অনুযায়ী নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে পাঁচ জন।
হামাসের রাজনৈতিক শাখার অন্যতম নেতা খলিল আল-হায়া হামাসের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক ভাষণে রাদ্ সাদে-এর নিহত হওয়ার খবরটি নিশ্চিত করেন। এই হত্যাকাণ্ডের পর মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনা নতুন মোড় নিল বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।
বিবৃতিতে ইজরায়েল ও হামাস
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তাদের প্রথম বিবৃতিতে শুধু 'গুরুত্বপূর্ণ হামাস সদস্যকে' লক্ষ্যবস্তু করার কথা জানালেও, পরবর্তী সময়ে ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তারা রাদ্ সাদে-এর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
এদিকে, হামাস নেতা খলিল আল-হায়া তার ভাষণে ফিলিস্তিনিদের নিরস্ত্র করার ইসরায়েলের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, হামাসের অস্ত্র ধারণ করার 'অধিকার আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা নিশ্চিত'। তিনি যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে এগিয়ে নেওয়ার এবং বিশেষ করে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ নিশ্চিত করার প্রথম পর্বটি সম্পন্ন করার আহ্বান জানান।
সংঘাতের পরিস্থিতি
এই হামলা এমন এক সময় ঘটল, যখন ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে অক্টোবর ১০ থেকে একটি মার্কিন-পৃষ্ঠপোষকতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে। তবে উভয় পক্ষই প্রায় প্রতিদিনই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করছে। এর আগে ইসরায়েল ঘোষণা করেছিল, মার্কিন-পৃষ্ঠপোষকতায় গাজার জন্য যে শান্তি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তার অংশ হিসেবে হামাসকে ‘নিরস্ত্র করা হবে’। হামাস সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে শুধুমাত্র অস্ত্রের ‘অস্থায়ী স্থগিতাদেশ’ (weapons freeze) নিয়ে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেছিল।
এই হত্যাকাণ্ড গাজা উপত্যকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আল জাজিরা
আল জাজিরা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন খলিল আল-হায়া ড্রোন হামলা হামাসের কমান্ডার রাদ সাদ ইসরায়েলি হামলা গাজা সিটি

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: