ক্রাইম প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
রাজধানীর বিজয়নগরে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মূল অভিযুক্ত শুটার ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা হুমায়ুনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। একই সঙ্গে ফয়সালের বোনের বাসা সংলগ্ন এলাকা থেকে গুলি, ভরা ম্যাগাজিন ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে র্যাবের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
র্যাব জানায়, হত্যাচেষ্টার মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা হুমায়ুনকে নরসিংদীতে ফয়সালের শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানের সময় একটি পুকুর থেকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে, র্যাব-২ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শামসুল ইসলাম জানান, শেরেবাংলা নগর থানাধীন পশ্চিম আগারগাঁওয়ের পানির ট্যাংকি সংলগ্ন কর্ণেল গলির আশপাশে অবস্থিত ফয়সালের বড় বোন জিয়াসমিনের বাসা সংলগ্ন এলাকা থেকে দুটি ভরা ম্যাগাজিন, ১১ রাউন্ড গুলি ও একটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ওই বাসা থেকে একটি ট্যাব, একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, একটি পুরাতন বাটন মোবাইল, দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র, বিভিন্ন কোম্পানির পাঁচটি চেক, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৫টি চেক বই, ছয়টি পাসপোর্ট এবং ৩৮টি ব্যাংক চেকের পাতা উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাবের তথ্যমতে, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়—গত ১২ ডিসেম্বর সকাল ১১টা ৫ মিনিটে ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার এক সহযোগী মোটরসাইকেলে করে ওই বাসা থেকে বের হন। পরে বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে ফয়সাল, তার সহযোগী, মা ও ভাগিনাকে দুটি ভবনের মাঝের ফাঁকা স্থান থেকে কিছু বের করতে দেখা যায়। এরপর বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে ফয়সাল ও তার সহযোগী সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে এলাকা ত্যাগ করেন।
এই ফুটেজ ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয় বলে জানায় র্যাব-২।
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানান, ফয়সালের বাবাকে র্যাব গ্রেপ্তার করার পর তাকে ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে বিজয়নগর এলাকায় রিকশায় যাওয়ার সময় শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে মোটরসাইকেলে আসা দুইজনের একজন গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলিতে মাথায় গুরুতর আহত হন তিনি। এ ঘটনায় শুটার ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান এবং মোটরসাইকেল চালক আলমগীর হোসেনকে প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে শনাক্ত করা হয়।
ইতোমধ্যে এ মামলায় ফয়সাল করিমের স্ত্রী, প্রেমিকা ও শ্যালকসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: