নিউজ ডেস্ক | অধিকারপত্র
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান এবং তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিকে দুর্নীতির মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। শনিবার (স্থানীয় সময়) দেওয়া এই রায়কে ইমরান খানের জন্য আরেকটি বড় আইনি ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। আদালতের রায়ে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় উপহার অবৈধভাবে ধরে রাখা, কম দামে মূল্যায়ন এবং বিক্রির মাধ্যমে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ইমরান খান ও বুশরা বিবিকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১০ বছর ‘ক্রিমিনাল ব্রিচ অব ট্রাস্ট’ এবং ৭ বছর দুর্নীতির অভিযোগে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
কী ছিল অভিযোগ:
প্রসিকিউশনের অভিযোগ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছ থেকে পাওয়া মূল্যবান উপহার নিয়ম অনুযায়ী ঘোষণার পরিবর্তে ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী তা কম দামে মূল্যায়ন করে নিজেরা রেখে দেন এবং কিছু উপহার বিক্রি করেন। এর মধ্যে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ২০২১ সালের মে মাসে ইমরান খান ও বুশরা বিবিকে ইতালিয়ান বিলাসবহুল ব্র্যান্ড বুলগারির একটি মূল্যবান গয়নার সেট উপহার দেন। প্রসিকিউটরদের দাবি, এই গয়নার প্রকৃত বাজারমূল্য ছিল প্রায় ২ লাখ ৮৫ হাজার ডলার। কিন্তু তা মাত্র ১০ হাজার ডলারের কিছু বেশি মূল্য দেখানো হয়েছিল। পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী, বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছ থেকে পাওয়া নির্দিষ্ট মূল্যের নিচে থাকা উপহার সরকারি কর্মকর্তা রাখতে পারেন, তবে সেক্ষেত্রে বাজারমূল্যে তা কিনে নেওয়া এবং বিক্রির অর্থ ঘোষণা করা বাধ্যতামূলক।
আগেও দণ্ডিত
এই রায়টি আগের একটি দুর্নীতি মামলার বাইরে আলাদা। এর আগে অন্য একটি মামলায় ইমরান খানকে ১৪ বছর এবং বুশরা বিবিকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ২০২৩ সাল থেকে ইমরান খান কারাগারে রয়েছেন।
প্রতিক্রিয়া:
ইমরান খানের আইনজীবী সালমান সাফদার জানিয়েছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। পিটিআইয়ের মুখপাত্র জুলফিকার বুখারি রায়কে নির্বাচিত বিচার বলে অভিহিত করে বলেন, এটি বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। পিটিআই এক বিবৃতিতে এই রায়কে পাকিস্তানের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় বলে উল্লেখ করে। দলটির অভিযোগ রায় ঘোষণার সময় আদিয়ালা জেলে অনুষ্ঠিত শুনানিতে ইমরান খানের পরিবারকেও প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেন, আদালত একটি ন্যায্য ও আইনসম্মত রায়ই দিয়েছেন। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। একাধিক মামলায় দণ্ডিত হলেও সাবেক এই ক্রিকেট তারকা এখনো পাকিস্তানে উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন।
--মো: সাইদুর রহমান (বাবু), বিশেষ প্রতিনিধি. অধিকারপত্র

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: