বিশেষ প্রতিনিধি, অধিকার পত্র ডটকম
রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আসন সমঝোতার গুঞ্জনে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। দলটির সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম বলেছেন, এই খবর সত্য হলে তা গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের মৌলিক আকাঙ্ক্ষার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।
শুক্রবার (আজ) দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের সর্বশেষ আপডেট’ জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
হাসনাত কাইয়ূম বলেন, গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটভুক্ত দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) যদি বিএনপি কিংবা জামায়াতের সঙ্গে আসন সমঝোতার আলোচনা করে থাকে, সে বিষয়ে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানানো হয়নি।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন,
“এই খবর সত্য হলে এনসিপি ও এবি পার্টি জোটের আকাঙ্ক্ষা মানছে না। তারা এটি করতে পারে না।”
সংবাদ সম্মেলনে জোট গঠনের পটভূমি তুলে ধরে তিনি জানান, ২০২২ সাল থেকে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন বিএনপির জোটসঙ্গী ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’-এর শরিক ছিল। তবে স্বাধীন ও সংস্কারকেন্দ্রিক রাজনৈতিক অবস্থান নিশ্চিত না হওয়ায় গত বছরের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে মঞ্চ ছাড়ে দলটি। পরে ৭ ডিসেম্বর এনসিপি ও এবি পার্টির সঙ্গে মিলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’ গঠন করা হয়।
হাসনাত কাইয়ূম বলেন,
“এই জোটের নামের মধ্যেই আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান লুকিয়ে আছে। ‘গণতান্ত্রিক’ শব্দটি যুক্ত করা হয়েছে জামায়াতের অগণতান্ত্রিক ও ধর্মীয় ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বিরোধিতার কারণে।”
তিনি আরও বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর বিএনপি সংস্কার প্রশ্নে অনাগ্রহী ও বিভাজনমূলক অবস্থান নিয়েছে, ফলে জামায়াত ও বিএনপির বাইরে দাঁড়িয়েই জোটের যাত্রা শুরু হয়েছিল।
জোটের অন্তর্নিহিত ঐকমত্য ছিল—এই তিন দল কখনোই বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে যৌথ রাজনীতি কিংবা নির্বাচনী সমঝোতায় যাবে না।
সংবাদ সম্মেলনের মূল কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, এনসিপির জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার খবর গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় দলটির সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে ভুল বার্তা ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন,
“বিএনপি কিংবা জামায়াত কেউই এই মুহূর্তে জাতীয় স্বার্থে কাজ করছে না। তারা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে গিয়ে জাতিকে বিভক্ত করছে। এই বিভাজনের অংশ আমরা হব না।”
হাসনাত কাইয়ূম জানান, কোনো আসন, পদ বা রাষ্ট্রক্ষমতার ভাগ পাওয়ার জন্য রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন রাজনীতি করে না। সেই লক্ষ্য থাকলে তারা গণতন্ত্র মঞ্চেই থেকে যেতে পারত।
গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট ভেঙে গেছে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,
“রাজনৈতিক শিষ্টাচার বজায় রাখতে আনুষ্ঠানিকভাবে বলছি না জোট ভেঙে গেছে। তবে যেসব খবর রটেছে সেগুলো সত্য হলে কার্যত এই জোট আর অস্তিত্বে থাকবে না।”
সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার ভূঁইয়া।
গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন হাসনাত কাইয়ূম এনসিপি এবি পার্টি জামায়াত বাংলাদেশ রাজনীতি রাজনৈতিক সংস্কার

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: