odhikarpatra@gmail.com ঢাকা | Saturday, 27th December 2025, ২৭th December ২০২৫
বরিশালে শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে শিশু রোগীর চাপ বেড়েছে। এক বেডে একাধিক শিশুর চিকিৎসা চলছে। বিস্তারিত পড়ুন অধিকার পত্র ডটকম; লিংক কমেন্টে

বরিশালে শীতে ঠান্ডাজনিত রোগে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ, সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত শিশুরা

odhikarpatra | প্রকাশিত: ২৭ December ২০২৫ ১৯:০২

odhikarpatra
প্রকাশিত: ২৭ December ২০২৫ ১৯:০২

বরিশাল, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫:

শীতের প্রকোপ বাড়তে না বাড়তেই বরিশালে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি ভুগছে শিশুরা। ফলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর চাপ।

হাসপাতালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার দুটি শিশু ওয়ার্ডে বর্তমানে ৪১ শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছে প্রায় ৩০০ শিশু। অতিরিক্ত রোগীর চাপে এক একটি বেডে ৩ থেকে ৪ জন শিশুকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ১৫০ জনের বেশি শিশু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

শুধু ওয়ার্ড নয়, হাসপাতালের বহির্বিভাগেও রোগীদের ভিড় বাড়ছে। বহির্বিভাগে প্রতিদিন পাঁচজন শিশু বিশেষজ্ঞ নিরবচ্ছিন্নভাবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসকদের মতে, বর্তমানে জ্বর, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যাই বেশি।

অনেক অভিভাবক গ্রামাঞ্চল থেকে শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা বা ফার্মেসি থেকে ওষুধ খাওয়ানোর পরও সুস্থ না হওয়ায় শিশুদের নিয়ে আসা হচ্ছে শেবাচিম হাসপাতালে।

হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক শিশুর স্বজন আকলিমা বেগম জানান, প্রথমে গ্রামে চিকিৎসা করালেও শিশুর জ্বর বারবার ফিরে আসে। পরে হাসপাতালে আনার পর পরীক্ষায় নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। বেড সংকটের কারণে এক বেডে একাধিক রোগী থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আরেক রোগীর স্বজন লিমা বেগম বলেন, স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েও জ্বর ও কাশি না কমায় বরিশালে আনা হয়। পরে জানা যায় শিশুটি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে আন্তঃওয়ার্ড ও বহির্বিভাগ মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৫০০-এর বেশি শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। আগের তুলনায় রোগীর সংখ্যা দেড়গুণ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. নুরুল আলম বলেন, বর্তমানে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা সামনে আরও বাড়তে পারে। তিনি অভিভাবকদের শিশুদের অতিরিক্ত কাপড় পরানো ও ঘাম থেকে ঠান্ডা লাগা বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মসিউল মুনীর বলেন, শিশু ওয়ার্ডে বেড ও চিকিৎসক সংকট থাকলেও সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। সংকট দূর করা গেলে সেবার মান আরও বাড়বে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ঠান্ডাজনিত রোগের সংক্রমণ বাড়ছে। দ্রুত চিকিৎসা ও সচেতনতা বাড়ালে এই ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

এদিকে, বরিশাল আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার বরিশালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েকদিন ধরে ঘন কুয়াশা ও সূর্যের স্বল্প উপস্থিতির কারণে শীতের অনুভূতি বেশি হচ্ছে। সামনে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলেও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: