ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

ট্যানারি মালিকরাকর অবকাশ সুবিধা চায় 

Mahbubur Rohman Polash | প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ১৬:২৯

Mahbubur Rohman Polash
প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ১৬:২৯

রোববার রাজস্ব ভবন সভাকক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বাংলাদেশ ট্যানারি এসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, সাভারের চামড়া শিল্প নগরী স্থাপনের আগে উদ্যোক্তাদের বলা হয়েছিল, কর অবকাশ সুবিধা দেয়া হবে। এখনও সেটা করা হয়নি। স্থাপনা নির্মাণের ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হচ্ছে। এতে উদ্যোক্তাদের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। একটি কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে ৩১ ধরনের কেমিক্যাল লাগে। ১৫৫টি ট্যানারির মধ্যে এসব কেমিক্যাল বন্ডের আওতায় আছে মাত্র ৩০টি প্রতিষ্ঠান।

সাভারের চামড়া শিল্প নগরীর ব্যবসায়ীদের শতভাগ কর অবকাশ সুবিধা দেয়ার দাবি জানিয়েছে চামড়া শিল্প সংশ্লিষ্ট সংগঠনের ব্যবসায়ী নেতারা। একই সঙ্গে ওই স্থানকে বন্ডেড ওয়্যারহাউজ ঘোষণা এবং চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার কেমিক্যাল আমদানিতে শুল্ক হ্রাসের দাবি জানিয়েছেন তারা।
 বাকিগুলোকে শুল্ক-কর দিয়ে আনতে হয়। শুধু এ কারণে অনেক ট্যানারি বন্ধের পথে। এ সমস্যা সমাধানে সাভারের চামড়া শিল্প নগরীকে বন্ডেড ওয়্যারহাউজ ঘোষণা করা যেতে পারে।
প্রাক-বাজেট আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।সভায় কোল্ডস্টোরেজ, পোল্ট্রি, বিস্কুট, এগ্রো প্রসেসিং, সার ব্যবসায়ী, বীজ ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা নিজ নিজ সংগঠনের বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
লেদার গুডস এন্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি নাসির খান বলেন,এ শিল্পের মাত্র ২০ শতাংশ পণ্য আমদানি করতে হয়। আমদানি প্রাপ্যতা দিতে বন্ড কমিশনারেট সময়ক্ষেপন করে।অনেক ব্যবসায়ী পণ্য আমদানি করলেও চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস নিচ্ছে না। এ কারণে রফতানিমুখী শিল্পের সংখ্যা ১৪০ থেকে কমে ২০টি দাঁড়িয়েছে।
এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন, সাভাবে ট্যানারি শিল্পকে সফল করতে সুবিধা দিতে হবে।বন্ডের অসুবিধাগুলো দ্রুত দূর করা হবে।এ শিল্পের যারা বন্ড সুবিধা পায় না,তাদের ন্যূনতম শর্ত পালন সাপেক্ষে লাইসেন্স দেয়া যায় কিনা সেটা খতিয়ে দেখতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।
অটো বিস্কুট এন্ড ব্রেড ম্যানুফেকচারার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন,বিদেশ থেকে বিস্কুট আমদানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং হচ্ছে। এ কারণে দেশীয় উদ্যোক্তারা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। শিল্পের স্বার্থের আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ, দেশে উৎপাদিত বিস্কুটের ট্যারিফ মূল্য ৮৫ টাকা থেকে কমিয়ে ৬৫ টাকা করা এবং কেন্দ্রীয় ভ্যাট নিবন্ধন ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান তিনি।
ব্রেড বিস্কুট ও কনফেকশনারী প্রস্তুতকারক সমিতির সভাপতি জালাল উদ্দিন বলেন, হাতে তৈরি পাউরুটি, বিস্কুট ও কেক উৎপাদনের ভ্যাট অব্যাহতি ছিল।এটি বাতিল করে দেয়ায় পণ্যের দাম বেড়েছে,বিক্রি কমেছে। ১৫০ টাকা পর্যন্ত পাউরুটির ওপর ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন,বাজেটে পাউরুটি-বিস্কুটের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
ব্রিডার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলে রহিম খান সয়াবিন মিলের শুল্ক হ্রাসের দাবি জানান।এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বাজেটে পোল্ট্রি খাতকে সহায়তা দেয়া হবে।
এগ্রো প্রসেসরস এসোসিয়েশনের সভাপতি ফখরুল ইসলাম মুন্সী বলেন, এগ্রো প্রসেসিং সেক্টরে মূল্য সংযোজন সবেচে বেশি।তারপর প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা যাচ্ছে না। অন্য দেশ যেখানে এ শিল্পকে প্রণোদনা দিচ্ছে, সেখানে দেশে ৩৫ শতাংশ হারে কর্পোরেট ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। এ ছাড়া টার্নওভারের ওপর দশমিক ৬০ আদায় করা হচ্ছে।কর্পোরেট কর ১০ শতাংশ এবং টার্নওভার ট্যাক্স অব্যাহতির দাবি জানান তিনি।
কোল্ডস্টোরেজ এসোসিয়েশনের মহাসচিব মোজাম্মেল ইসলাম কর্পোরেটর ট্যাক্স ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণের দাবি জানান।
সমাপনী বক্তব্যেএনবিআর চেয়ারম্যান বলেন,ইচ্ছা থাকলেও সব সেক্টরকে সুবিধা দেয়া যাবে না। কারণে সরকারের রাজস্ব আয়ের একটা লক্ষ্য থাকে। এটিকে হতাশাজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না। এবার ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে কর্পোরেট কর হার কমিয়ে আনার চিন্তা চলছে। কিন্তু সবাইকে সুবিধা দিলে সেটি করা সম্ভব হবে না। তারপরও ব্যবসায়ীদের যৌক্তিক দাবিগুলো বিবেচনা করা হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: